সুয়েজ সংকটের কারণ বা পটভূমি ব্যাখ্যা করো।
মিশরের রাষ্ট্রপ্রধান হিসাবে নাসের দ্বিবিধ লক্ষ্য নিয়ে এগিয়েছিলেন তাৎক্ষণিক লক্ষ্য হিসাবে তিনি মিশরের সামরিক ও অর্থনৈতিক শক্তিকে দৃঢ় ভিত্তিতে স্থাপন করে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম শক্তিশালী দেশে পরিণত করতে চেয়েছিলেন। অপরদিকে নাসেরের সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য ছিল মধ্যপ্রাচ্যের আরব জাতীয়তাবাদের অবিসংবাদী নায়ক হয়ে উঠা।
নাসের সোভিয়েত ইউনিয়ান এবং পাশ্চাত্য জোটের সঙ্গে সমদূরত্ব বজায় রেখে উভয় পক্ষ থেকেই সামরিক ও আর্থিক সাহায্য লাভ করতে চেয়েছিলেন। ১৯৫৫ সালে নাসের ঘোষণা করেন যে সমাজতন্ত্রী রকের চেকোশ্লোভাকিয়া বিনা শর্তে মিশরকে ৮০ টি মিগবিমান, ৮৫টি বিমারু বিমান এবং ১৫৫টি ভারী ট্যাঙ্ক প্রদান করেছে বিনিময়ে মিশর ও চেকোশ্লোভাকিয়াকে তুলো ও চাল সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
সুয়েজ সংকট দেখা দিয়েছিল যখন নাসের নীলনদের উপর আসোয়ান বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা নিলেন যা রূপায়িত হলে ৮৬,০০০ হেক্টর জমিতে সেচের সুবিধা পাওয়া যাবে এবং বাঁধ থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে শিল্পের অনুকূল পরিস্থিতি তৈরী করা যাবে। এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৪০০ মিলিয়ান ডলার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন মিলিতভাবে ৭০ মিলিয়ান ডলার ঋন দিতে রাজী হয়েছিল, বিশ্বব্যাঙ্কও ঋন দিতে তৈরী ছিল।
![]() |
সুয়েজ সংকট |
কিন্তু রূশ জোটের রাষ্ট্র চেকোশ্লোভাকিয়া থেকে সামরিক সাহায্য নেওয়ার ফলে নাসের পাশ্চাত্য দুনিয়ার বিরাগভাজন হয়ে পড়েন। তদোপরি পররাষ্ট্রনীতির রূপায়নে নাসের আরব জাতীয়তাবাদের হাত শক্ত করার জন্য আলজেরিয়ার মুসলিমদের ফ্রান্সের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে সাহায্য ও সমর্থন করেন।
আন্দোলনের চাপে ফ্রান্সও ১৯৫৬ সালে মরক্কো ও টিউনিশিয়াকে স্বাধীনতা দিতে বাধ্য হয়েছিল। এর ফলে ফ্রান্স সহ পশ্চিমী দুনিয়ার সঙ্গে নাসেরের দূরত্ব তৈরী হয়। প্রতিক্রিয়াস্বরূপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেন আসোয়ান বাঁধের জন্য পূর্ব প্রতিশ্রুত ঋন দিতে অস্বীকার করে এবং অন্যদিকে আরব জাতীয়তাবাদকে প্রশমিত করার জন্য ইজরায়েলকে অনবরত অস্ত্র সাহায্য করতে থাকে। স্বাভাবিক কারণেই আরব জাতীয়তাবাদের নেতা রূপে প্রতিষ্ঠিত নাসেরও পশ্চিমী দুনিয়ার এই আচরণে ক্ষুব্ধ হন।
উভয় পক্ষের মনোমালিন্যের এই প্রেক্ষাপটেই অবশ্য ব্রিটেন ১৯৫৪ সালের ইঙ্গ-মিশর চুক্তির শর্তানুসারে ১৯৫৬ সালের ১৩ই জুন সুয়েজ খাল সংলগ্ন এলাকা থেকে দীর্ঘ ৭৪ বছর ব্যাপী টহলদারী সেনা প্রত্যাহার করে নেয়। অন্যদিকে অবশ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশসচিব ঐ বছরের ১৯ শে জুলাই ঘোষণা করেন যে প্রস্তাবিত আসোয়ান বাঁধের জন্য প্রতিশ্রুত মার্কিন – ব্রিটিশ ঋন বাতিল করা হয়েছে। ক্ষুব্ধ নাসের ২৬ শে জুলাই সুয়েজ খাল কোম্পানী ও তার পরিচালনার কর্তৃত্ব সুয়েজ খাল জাতীয়করণ এর কথা ঘোষণা করেন। সুয়েজ সংকটের কারণ ছিল সুয়েজ খাল এর জাতীয়করণ। সুয়েজ সংকটের পটভূমি ছিল নাসের কতৃক সুয়েজ খাল এর জাতীয়করণ।
মিশরে ১৯৫২ সালের রাজনৈতিক বিপ্লব হয়েছিল ২৬ শে জুলাই এবং ১৯৫৬ সালের ঐ তারিখেই সিটিকে অধিক স্মরণীয় করে রাখার উদ্দেশ্যে নাসের সুয়েজ খাল জাতীয়করণ এর ঘোষণাটি করেন। মধ্যপ্রাচ্যের সুয়েজ সংকট ১৯৫৬ সালের ২৬ শে জুলাই সংঘটিত হয়। এই পর্বে নিশ্চিতভাবেই নাসের আরব জাতীয়তাবাদের প্রতিভূ হয়ে উঠেছিলেন। নাসের দ্বিধাহীন কণ্ঠে জানিয়েছিলেন যে ‘Arab nationalism has been set on fire from the Atlantic Ocean to the Persian Gulf……… My fate in Egypt is linked with that of my brother in Jordan, in the Lebanon, Syria and in every country, and also in Sudan our fates are linked’
মিশরের উত্তরপূর্ব দিকে অবস্থিত এই কৃত্রিম খালটি ভুমধ্যসাগরের সঙ্গে সুয়েজ উপসাগরের মধ্যে দিয়ে লোহিত সাগরে পৌছানোর সংক্ষিপ্ত জলপথ হিসাবে তৈরী হয়। ১৯৫ কিলোমিটার দীর্ঘ, পৃষ্ঠভাগে কমপক্ষে ৬০ মিটার প্রশস্ত এবং ১৬ মিটার গভীর এই খালটির অস্তিত্ব সুদূর অতীতে থেকে থাকলেও আধুনিক যুগে ১৮৫৪ সালে ফ্রান্সের La Compagnie Universelle du Canal Maritime de Suez( Universal Company of the Maritime Suez Canal) এই খালটি খনন করে এবং ৯৯ বছরের জন্য অধিকার লাভ করে। জলপথে ইওরোপীয় এবং মার্কিন বন্দরের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত সময়ে এশিয়া এবং বিশেষত ভারতের বন্দরগুলির যোগাযোগের জন্য সুয়েজ খালের গুরুত্ব ক্রমে নামে অপরিসীম হয়ে ওঠে।
১৮৭৫ সাল পর্যন্ত এই খানের মালিকানা মূলত মিশরীয় এবং ফরাসী কোম্পানীর কাছে থাকলেও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডিজরেইলি মিশরের রাজা ইসমাইল পাশার কাছ থেকে ৪০ লক্ষ পাউন্ডের বিনিময়ে খালের শেয়ার কিনে নেন। ১৮৮৮ সালের কনস্টানটিনোপলের সম্মেলনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে যুদ্ধ ও শান্তির সময় সকল দেশের জাহাজ চলাচলের জন্য এই খালকে খোলা রাখা হবে। সেই সময় মিশর এবং সুয়েজ অঞ্চল বৃহত্তর তুরস্ক সাম্রাজ্যের সীমানভুক্ত ছিল এবং তুরষ্কের সুলতান ৯০ বছরের জন্য এই খাল পরিচালনার দায়িত্ব সুয়েজ খাল কোম্পানীর হাতে নাস্ত করেছিলেন।
সুয়েজ খাল জাতীয়করণ সংক্রান্ত ঘোষণায় বলা হয়েছিল যে কোম্পানীর অংশীদারদের বাজার মূল্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেওয়া হবে। সুয়েজ খাল জাতীয়করণের এই ঘোষণার ফলে পাশ্চাত্য দেশগুলির মধ্যে আশঙ্কা, বিরোধিতা এবং কর্মতৎপরতা লক্ষ্য করা যায়। ১৯৫৫ সালে সুয়েজ খাল দিয়ে যে ১৫০০ জাহজ চলাচল করেছিল তার মধ্যে তিন চতুর্থাংশ ছিল ন্যাটোর সদস্যরাষ্ট্র সমূহের, এক তৃতীয়াংশ শুধুমাত্র গ্রেট ব্রিটেনের। ঐ সকল জাহাগুলির প্রায় দুই তৃতীয়াংশ কেবল তেল পরিবহন করেছিল। সুয়েজ খাল কোম্পানীর প্রায় ৪৪% শেয়ার আবার অধিকার করে রেখেছিল গ্রেট ব্রিটেন।
ইংল্যান্ড, ফ্রান্স সহ পশ্চিমী দুনিয়া নাসেরের এই ঐতিহাসিক সুয়েজ খাল জাতীয়করণের বিরুদ্ধে তীব্র প্রসিক্রিয়া জানাবে এবং কঠোর অবস্থান গ্রহণ করবে এটাই স্বাভাবিক। প্রসঙ্গত, এই পর্বে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স অতি দ্রুত মিশরের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চাইছিল, অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যে আরবীয়দের মনে যাতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া না সৃষ্টি হয় তার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মিশরের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগে রাজি ছিল না, অন্যভাবে সুয়েজ খালকে আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসাই যুক্তরাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য ছিল।
আসলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার বাণিজ্যিক ক্রিয়াকর্মের জন্য ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের মত অতটা সুয়েজ খালের উপর নির্ভরশীল ছিলনা এবং ফলে সয়েজ খাল জাতীয়করণ সংক্রান্ত নাসেরের ঘোষণার পরেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিছুটা নৈর্ব্যক্তিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছিল। যুক্তরাষ্ট্র সুয়েজ খাল ব্যবহারকারী রাষ্ট্রগুলিকে নিয়ে একটি সম্মেলনের আহ্বান জানায় এবং সেইমত ১৯৫৬ সালের ১৬- ২৩শে আগস্ট লন্ডলে একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সুয়েজ খালের উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রন স্থাপনের প্রস্তাব দিলে অস্ট্রেলিয়া সহ পাঁচটি দেশ প্রস্তাবের বিরোধিতা করে।
অস্ট্রেলিয়া প্রধানমন্ত্রী রবার্ট মেঞ্জিস নাসেরের সঙ্গে দেখা করে সুয়েজখাল বোর্ড গঠনের প্রস্তাব দিলে নাসের তা প্রত্যাখ্যান করেন। অতঃপর মার্কিন পররাষ্ট্র সচিব ডালেস সুয়েজে জাহাজ চলাচল নিয়ন্ত্রন করার জন্য সুয়েজখাল ব্যবহারকারীদের নিয়ে একটি সংস্থা (Suez Canal user’s association) গঠন করার প্রস্তাব দেন। কিন্তু মিশর, ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স এই প্রস্তাব মানতে চায়নি।
অন্যদিকে মিশর ১৯৫৬ সালের ৫ই অক্টোবর জাতিপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনার জন্য সুয়েজ সংক্রান্ত সমস্যা উত্থাপন করে। জাতিপুঞ্জে ব্রিটেন ও ফ্রান্স সুয়েজ খানের উপর আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রন স্থাপনের চাপ দিতে থাকে, অন্যদিকে নাসের কোনমতেই এই নিয়ন্ত্রণের প্রস্তাবে রাজী ছিলেন না৷ সম্মিলিত জাতিপুঞ্জে সোভিয়েত ইউনিয়ানের ভেটো প্রদানের ফলে সুয়েজের উপর আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা শেষ পর্যন্ত সম্ভব হল না।
একদিকে যখন সুয়েজ সমস্যাকে মেটানোর জন্য কূটনৈতিক আলাপ আলোচনা চলছিল তখন কার্যত গোপনেই, ১৯৫৬’র আগস্ট মাসে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স যৌথ সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা গ্রহণ করে, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে যুদ্ধের প্রস্তুতি প্রায় সম্পূর্ণ হয়ে যায় এবং ফ্রান্সের উদ্যোগে ফ্রান্স, ইংল্যান্ড এবং ইজরায়েলের মধ্যে মিশর আক্রমণের এক ত্রিপাক্ষিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। অধ্যাপক উইফ্রিড ন্যাপ মন্তব্য করেছেন যে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স ১৯৩০’র দশকে জার্মানীর প্রতি গৃহীত তোষণ নীতির বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি চায়নি এবং সমস্যার শুরুতেই মিশরের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিল।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এন্টনি ইডেন নাসেরকে হিটলারের মতই শঠ ও আগ্রাসী শাসক বলে মনে করতেন, বেতার ভাষণে তিনি তাঁর অভিমত স্পষ্ট করেছিলেন। ইডেন নাসেরকে একজন প্রতারক বলে মনে করতেন কেননা তাঁর মতে নাসের ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের ইঙ্গ-মিশর চুক্তি লঙ্ঘন করেছেন। অন্যদিকে ফরাসী প্রধানমন্ত্রী গাই মলে নাসের সম্পর্কে অভিযোগ করেছিলেন যে তিনি আলজেরিয়ায় ফ্রান্স বিরোধী বিপ্লবীদের উস্কানি দিচ্ছেন। সমসাময়িক ইংল্যান্ড এবং ফ্রান্সের কর্তৃপক্ষ সুয়েজের পাশাপাশি মধ্য প্রাচ্য থেকেও নাসেরকে মুছে ফেলতে চেয়েছিল। উভয়েই তাদের সামরিক অভিযানের পরিকল্পনাকে গোপন রেখে দেখানোর চেষ্টা করেছিলেন যে তারা আক্রমণকারী নন, মিশর ও ইজরায়েল পরস্পর বৈরি দুটি রাষ্ট্র লড়াই করছে।
গোপন পরিকল্পনা মাফিক ১৯৫৬’র ১৯ শে অক্টোবর ইজরায়েল মিশর আক্রমণ করে এবং নিজেদের আক্রমণকারী না প্রমাণ করার উদ্দেশ্যে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স বিবদমান রাষ্ট্র মিশর ও ইজরায়েলকে সুয়েজ খাল অঞ্চল থেকে দশ মাইল দূরে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। মিশর এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। ১৯৫৬’র নভেম্বরে আসন্ন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের কথা চিন্তা করে এবং আরও গুরুত্ব সহকারে আরব জাতীয়তবাদী চেতনাকে নাসেরের নেতৃত্বাধীন মিশরের মধ্যে সম্পৃক্ত থাকতে দেখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধে কোন পক্ষ অবলম্বন করেনি। জন স্পেনিয়ারের মতে নাসেরের বিরুদ্ধাচারণ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কার্যত আরব জাতীয়তাবাদকে রুষ্ট করতে চায়নি, কারণ যুক্তরাষ্ট্র মনে করত যে এর ফলে আরবীয়রা সোভিয়েত ইউনিয়ানের দিকে ঝুঁকে পড়বে।
তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত আসোয়ান বাঁধের জন্য প্রতিশ্রুত ঋনদান করতে অস্বীকার করার জন্যই কার্যত সুয়েজ সংকট দানা বেঁধেছিল। আবার যুক্তরষ্ট্রই সুয়েজ সংকট নিরসনে উদ্যোগী হয়। ১৯৫৬’র ২রা নভেম্বর জাতিপুঞ্জের সাধারণ সভা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেয় এবং মহাসচিব হামারশিন্ডের উপর সুয়েজ অঞ্চলে আন্তর্জাতিক শান্তিবাহিনী প্রেরণের দায়িত্ব ন্যস্ত হয়। এই সিদ্ধান্তের পরেও ৫ই নভেম্বর ফ্রান্স ও ইংল্যান্ড বাহিনী মিশরের উপর আক্রমণ চালায়। কিন্তু হঠাৎ করে ব্রিটেন একতরফা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মেনে নেয়।
ব্রিটেনে যুদ্ধের বিরুদ্ধে জনমত গঠিত হওয়া, রক্ষণশীল দলের মধ্যে বিরোধ এবং ইডেনের কর্তৃত্বে ফাটন ধরা, কমনওয়েলথে কানাডা এবং অন্য রাষ্ট্র কর্তৃক ব্রিটেনের মিশর নীতির সমালোচনা, এবং ব্রিটেনের অর্থনীতির উপর প্রবল চাপ ব্রিটেনকে বাধ্য করেছিল যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মেনে নিতে। উইলফ্রিড ম্যাপ মন্তব্য করেছেন যে পাউন্ডের ধস ব্রিটেনের মিশর থেকে সরে আসার পশ্চাতে প্রধানতম কারণ ছিল। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরোধী মনোভাবও ব্রিটেনকে সরে আসতে বাধা করেছিল। জন স্পেনিয়ার লিখেছেন ‘America’s opposition to the Suez invasion was decisive factor in stopping the fighting’। মার্কিন মনোভাব বুঝতে পেরে সোভিয়েত ইউনিয়ানও ব্রিটেন ও ফ্রান্সকে রকেট আক্রমণের হুমকি দিয়েছিল। মিশর থেকে পশ্চাদপসারণ ছাড়া আর কোন রাস্তা ইংল্যান্ড বা ফ্রান্সের ছিল না।