StudyMamu

Site is under construction some pages not work properly. Please bear with us.

ক্লেইস্থিনিসের সংস্কার

ক্লেইস্থিনিসের সংস্কার। ক্লেইস্থিনিসের সংস্কার গুলি আলোচনা করো ?

 

ভূমিকাঃ

আলকমিয়ন বংশের সন্তান ক্লেইস্থিনিস (ক্লেইথেনিসের)  (এথেনীয় গণতন্ত্রের অন্যতম দুই পথিকৃৎ পেরিক্রিস ও আলকিবিয়াডিস এই বংশেরই সন্তান) ৫১০ খ্রিস্ট পূর্বব্দে স্পার্টার সহযোগিতায় হিলিয়াসকে ক্ষমতাচ্যুত করেন এবং এথেন্সে গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করলে অভিজাততন্ত্রী ইসাগোরাস তাঁর বিরুদ্ধে স্পার্টার রাজা ক্লিওমিনিসের সাহায্য চাইলেন। কিছুদিনের জন্য তাঁকে এথেন্স ছেড়ে যেতে হল। স্পার্টা এথেন্স আক্রমণ করলে এথেনীয়দের প্রতিরোধে শেষ পর্যন্ত ক্লিডমিনিস আত্মসমর্পণ করলেন। এবার সেইছিলি এথেকে ফিরে এসে শাসন সংস্কারে মনোনিবেশ করলেন।

ক্লেইস্থিনিসের সংস্কার :

1) ক্লেইস্থিনিস (ক্লেইথেনিসের) এথেন্সে বসবাসকারী সকল নাগরিককে নাগরিক অর্থ দান করে প্রকৃত জনসংখ্যা বৃদ্ধি করেন। 
2) সোলনকে অনুসরণ করে ক্লেইস্থিনিস অধিক সংখ্যক মানুষকে নাগরিক অধিকার দিয়েছিলেন। বিদেশে জন্মগ্রহণকারী এবং নিম্নবংশে জন্মগ্রহণকারী এথেনীয়রা ব্যাপকভাবে নাগরিক অধিকার পেয়েছিল। উচ্চপদগুলির ক্ষেত্রে সোলনের যে বিধিনিষেধ ছিল, ক্লেইস্থিনিস সেগুলিকেই রক্ষা করেছিলেন মনে হয়। নাইটদের পেন্টাকোসিওমেডিমনির সমপর্যায়ভুক্ত তিনি করেছিলেন বলে বিউরির ধারণা। কিন্তু তখনও আর্কন পদ নিম্নতর দুই শ্রেণীর জন্য উন্মুক্ত ছিল না। আরো পঞ্চাশ বছর তৃতীয় শ্রেণী আর্কন পদ লাভের অযোগ্য ছিল।
3) তাছাড়া তিনি অঞ্চল ভিত্তিক সংগঠন তৈরি করেন ফলে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব কমে যায়।ক্লেইস্থিনিসের এই রক্ষণশীলতার কিছুটা সাফাই গেয়ে বিউরি বলেন, ‘We must remember that since the days of Solon time itself had been doing the work of a democratic reformer.” তিনি আরো বলেন যে, খ্রিঃ পূঃ ষষ্ঠ শতাব্দীর প্রারম্ভে পাঁচ মেডিম্‌নি শস্যের যে আর্থিক মূল্য ছিল, শতাব্দীর শেষে তা অনেকটা কমে গিয়েছিল। ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি পেল এবং মানুষ আরো ধনী হ’ল।
 
4) সোলন প্রতিষ্ঠিত Boule বা “চারশ’ পরিষদ”কে পুনর্গঠন করে ‘চারশ’ সদস্য সংখ্যাকে বৃদ্ধি করে পাঁচশ’ সদস্য করলেন। নবগঠিত দশটি উপজাতি গোষ্ঠীর প্রত্যেকটি থেকে পঞ্চাশজন সভ্য (ত্রিশ বছর বয়স্ক) নিয়ে পরিষদ গঠিত হল।
5) দশটি গোষ্ঠী পালা করে পরিষদের কমিটি হিসাবে (Prytanies) কাজ করত। প্রতিটি গোষ্ঠীর পঞ্চাশজন সদস্য ছত্রিশ দিন করে পরিষদের কার্য নির্বাহ করত। আইন ও বিচার বিভাগীয় প্রশ্নে প্রত্যেক নাগরিকের ভোটাধিকার ছিল।
6) এথেন্সের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সবচেয়ে অভিনব প্রথা ‘Ostracism’ বা নির্বাসন প্রথা চালু হয় সম্ভবত ক্লেইস্থিনিসের আমলেই। এই প্রথা অনুযায়ী কমপক্ষে ছয় হাজার নাগরিকের সম্মতিক্রমে যেকোন নেতাকে রাষ্ট্রীয় কাজে অবহেলার জন্য বা রাষ্ট্রের পক্ষে বিপজ্জনক মনে হলে দশ দিনের নোটিশে দশ বছরের জন্য অ্যাটিকা থেকে নির্বাসনে পাঠানো হত। নির্বাসিত নেতার অনুপস্থিতিতে তার সম্পত্তি ও নাগরিকত্ব অক্ষুণ্ণ থাকত। এই নির্বাসন পদ্ধতি কার্যকরী করার দায়িত্ব থাকত গণ-পরিষদের হাতে। অনেক সময় এই ‘Ostracism’-র অপপ্রয়োগও হত

মূল্যায়ন:

ক্লেইস্থিনিসের সংস্কার এথেন্সকে গণতন্ত্রের পথে কয়েক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পূর্ণ গণতন্ত্রের জন্য এথেন্সকে আরো অপেক্ষা করতে হয়েছিল। এর কারণ হিসাবে ক্লেইস্থিনিসের সংস্কারের কিছু ত্রুটির কথা আমরা উল্লেখ করতে পারি। ক্লেইস্থিনিসের সংস্কার ক্রীতদাসদের কোন নাগরিক অধিকার দেয়নি। পাঁচশ’ জনের পরিষদে থিটিসদের কোন স্থান ছিল না। সরকারী পদ লাভে সম্পত্তির মালিকানাকেই মেনে নেওয়া হয়েছে। নাগরিক অধিকার ব্যাপক হারে বর্ধিত হলেও সবার জন্য এই অধিকার উন্মুক্ত ছিল না। সরকারী উচ্চপদে সমান অধিকার—এই নীতি স্বীকৃতি পায়নি। গরীবরা যে পরিষদের সদস্য হতে চাইত না এমন প্রমাণ রয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top