StudyMamu

Site is under construction some pages not work properly. Please bear with us.

সাতবাহন আমলের সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করো ।

 

সাতবাহন আমলের সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করো । 



পুরান গ্রন্থে সাতবাহন রাজাদের অন্ধ্র, অন্ধ্রজাতীয় এবং অন্ধ্রভৃত্য আখ্যা দেওয়া হয়েছে। প্রায় তিনশো বছর এই রাজবংশ পশ্চিম ও দক্ষিণ ভারতের এক শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক শক্তিরূপে অধিষ্ঠিত ছিল । সাতবাহন রাজত্বের প্রথম কয়েকটি লেখ মহারাষ্ট্রে পাওয়া গেছে। এছাড়া জৈন গ্রন্থ থেকেও তাদের সম্পর্কে জানা যায় । সাতবাহন রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন সিমুক। তারপর কৃষ্ণ, প্রথম সাতকৰ্নী, বাশিষ্ঠীপুত্র পুলমায়ি রাজত্ব করেন।



সামাজিক অবস্থা:


  সাতবাহন যুগের সামাজিক চিত্র ধরা পড়ে সেযুগের সমকালীন লেখমালা, সাহিত্যিক উপাদান, ও ভাস্কর্যের মধ্যে । সমাজে বর্নাশ্রম প্রথার প্রচলন ছিল। ব্রাহ্মণরা প্রধানত পৌরহিত্য করতেন এবং ক্ষত্রিয়দের উপজীবিকা ছিল যুদ্ধবৃত্তি । একইভাবে বৈশ্যরা ব্যবসা-বানিজ্য, কৃষিকার্য আর শূদ্ররা বিত্তবানদের সেবায় – নিয়োজিত থাকতেন। বিভিন্ন পেশাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন জাতির বা শ্রেণীর উদ্ভব হয়। যেমন হালিক বা কৃষক, শ্রেষ্ঠী বা বণিক, গান্ধিক বা সুগন্ধ দ্রব্যের প্রস্তুতকারক বা বিক্রেতা, কৌলিক ,তিল পিশক বা ঘানিওয়ালা এবং কর্মকার প্রভৃতি। 



   সমাজে বর্ণাশ্রম ব্যবস্থা থাকলেও তার ভিত বেশ দুর্বল ছিল। প্রথমত বৌধ ধর্মের প্রসার এবং দ্বিতীয়তঃ শক পল্লব প্রভৃতি বৈদেশিক জাতির ভারতে আগমন ছিল এর কারণ। সক মহাক্ষত্রপ রুদ্রদামন এর সঙ্গে সাতবাহন রাজপরিবারের বৈবাহিক সম্পর্ক ছিল। তাছাড়া স্থানীয় গোষ্ঠীর অনেকেই আর্য রীতি-নীতি ও বৃত্তি গ্রহণ করে বৈদিক সমাজের সঙ্গে একান্ত হয়ে গিয়েছিল। আবার কেউ কেউ স্বতন্ত্র ছিল। রাজকীয় ক্ষেত্রে উল্লেখ আছে যে, রাজা কখনো কখনো নিজস্ব জমি ধর্মীয় উদ্দেশ্যে দান করতেন।


  যৌথ পরিবার তখনকার সমাজের এক উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য ছিল। অমরাবতীর এক লেখমালা থেকে জানা যায় যে পরিবারের সকল সদস্য দান করেছেন এবং তাদের উল্লেখে পরিবারের গুরুত্ব অনুযায়ী স্থান পেয়েছে। তৎকালীন সম্রান্ত পরিবারের সাধারণ মেয়েরা যে দানশীলা ছিলেন তা জানা যায় সমকালীন লেখ থেকে। নাসিক প্রশস্তি থেকে জানা যায় যে মহিষী নাগনিকা বৈদিক যাগযজ্ঞের অনুষ্ঠান করেছেন এবং স্বামীর মৃত্যুর পর রাজ্যের শাসন ভারও নিজে হাতে নিয়েছেন। মনু স্মৃতিতে বলা ছিল যে বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণ মেয়েদের নিষিদ্ধ। সম্ভবত মনুস্মৃতির নির্দেশ সাতবাহন রাজ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে নি।


  অমরাবতী ও কালের ভাস্কর্যের তৎকালীন পোশাক-পরিচ্ছদ সম্পর্কে জানা যায়। ভাস্কর্য মূর্তি গুলির স্বল্পবাস এবং অলংকারের প্রাচুর্য, লক্ষণীয় মূর্তি গুলির নিম্নাঙ্গ বস্ত্র সজ্জিত হলেও উর্ধাঙ্গ অনাবৃতই ছিল। পুরুষাঙ্গের মাথার পাগড়ী জাতীয় বস্ত্র দেখা যায় এবং অলংকারের প্রতিম সেই পুরুষ উভয়েরই যে আগ্রহ ছিল তা বোঝা যায়।


Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top