StudyMamu

Site is under construction some pages not work properly. Please bear with us.

হরপ্পা সভ্যতার নগর পরিকল্পনা বিবরণ দাও

 

হরপ্পা সভ্যতার নগর পরিকল্পনা বিবরণ দাও





ভূমিকা:

হরপ্পা সভ্যতার অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র উন্নত নগর জীবনের বিকাশ ঘটেছিল বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। এই সভ্যতার অন্যতম নগরগুলি ছিল হরপ্পা মহেঞ্জোদারো কালিবঙ্গান রংপুর চানহুদারও লোথাল প্রভৃতি। এই সভ্যতায় উন্নত রাস্তাঘাট ঘরবাড়ি প্রণালী স্নানাগার শস্যাগার প্রভৃতি নির্মাণ ও নির্মাণ কৌশল উন্নত নগর সভ্যতার পরিচয় বহন করে। এই সভ্যতার নগর পরিকল্পনার প্রধান দিক গুলি ছিল।




জীবন যাত্রার সাদৃশ্য:

হরপ্পার বিভিন্ন নগর গুলিত সমাজ ও সংস্কৃতি মোটামুটি একই ধরনের ছিল। বিভিন্ন নগরের মধ্যে যথেষ্ট দূরত্ব থাকলেও নগর গুলির পরিকল্পনা গঠনরীতি জীবনযাত্রা প্রণালী প্রভৃতির মধ্যে যথেষ্ট সাদৃশ্য দেখা যায় নগরের রাস্তাঘাটের নকশা ঘরবাড়ি অট্টালিকা পরিষ্কার পরিছন্নতা প্রতি নজর ওজন ও মাপ ব্যবস্থা মোটামুটি একই ধরনের ছিল।




রাস্তাঘাট:

হরপ্পা সভ্যতার প্রধান রাস্তাগুলি শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল রাস্তাগুলি ছিল প্রশস্ত সোজা এবং পরিচ্ছন্ন রাস্তাগুলি 9 থেকে 34 ফুট পর্যন্ত ছিল প্রধান রাস্তা থেকে একাধিক স্বরূপ গলিপথ বেরিয়ে যেত রাস্তাগুলি সম্পর্কে বিভিন্ন বর্গাকার বা আয়তাকার ক্ষেত্রের বিভক্ত কত রাস্তা নির্মাণে চুনি পাথর প্রভৃতি ব্যবহার করা হতো রাস্তার দু’পাশে ফুটপাত আলোর ব্যবস্থা ছিল।




ঘরবাড়ি: 

হরপ্পা সভ্যতার শহরগুলিতে গৃহনির্মাণে অধিকাংশ ক্ষেত্রে আগুনে পোড়ানো 8 এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে রোদে শুকানো এর ব্যবহার করা হতো এর গুলি পাতলা ও ছোট আকৃতির বাড়িতে প্রবেশের জন্য গলিপথ থাকতো বাড়িগুলি প্রাচীর বেষ্টিত থাকত বাড়িগুলির রাস্তার দিকে কোন দরজা-জানালা থাকতো না ফলে দিনের বেলাও আলোর অভাব হতো প্রতিটি বাড়ির রান্নাঘর শোয়ার ঘর স্নানঘর উঠান প্রকৃতি থাকতো।




পয় প্রণালী:

হরপ্পা সভ্যতার রাস্তাগুলির দু’ধারে বর্তমানকালের মত উন্নত প্রণালী ছিল। বাড়ির নোংরা জল প্রণালীর সাহায্যে বাইরে বেরিয়ে যেত। পয় প্রণালী এর ওপরে পাথরের ঢাকনা বসানো থাকতো।





ডাস্টবিন:

শহরের বাড়িগুলির সামনে ইট দিয়ে বাঁধানো ডাস্টবিন থাকতো। বাড়ির যাবতীয় আবর্জনায় ডাস্টবিনে জমা হতো সেগুলো নিয়মিত পরিষ্কার ব্যবস্থাও ছিল।





ম্যানহোল :

সফরের না তোমার সঙ্গে অনেক ম্যানহোল যুক্ত ছিল এগুলির ওপরে ঢাকনা বসানো থাকত এবং ঢাকনা খুলে নিয়মিত এগুলি পরিষ্কার করা হতো।





স্নানাগার:

মহেঞ্জোদারো দুর্গম অঞ্চলে 180 ফুট দীর্ঘ ও 108 ফুট প্রশস্ত একটি বিরাট বাঁধানো স্নানাগার আবিষ্কৃত হয়েছিল। এই জলাশয়টি 39 ফুট লম্বা 23 ফুট চওড়া এবং 8 ফুট গভীর। স্নানাগার টি কে ওঠা নামার জন্য দুদিক থেকে সিটের ব্যবস্থা ছিল। গ্রীষ্ম ও শীতকালে প্রয়োজন অনুসারে এখানে ঠান্ডা ও গরম জলের ব্যবস্থা করা যেত। জলাশয় এর একপাশে কয়েকটি ছোট ছোট ঘর ছিল।


শস্যগার :

হরপ্পা সহ বেশ কয়েকটি শহরে সরকারের নিদর্শন মিলেছে। শ্মশান ঘাটের পাশেই শ্রমিকদের বস্তির ঘর ছিল। শস্যাগার টি হরপ্পা সভ্যতার সম্পদের ওপর রাষ্ট্রীয় মালিকানার ইঙ্গিত বহন করে। এই শস্যাগার কে বর্তমানকালের রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে তুলনা করা চলে ।





নগরদুর্গ : 

মহেঞ্জোদারোর 40 ফুট উঁচু একটি দ্বীপের অপর একটি দুর্গের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হয়েছে। উঁচু প্রাচীর দিয়ে ঘেরা দুর্গটি নগরের নিরাপত্তা উদ্দেশ্যে নির্মিত হয়েছিল। বস্তুত দুর্গা অঞ্চলের বাড়ি গুলিতে শাসক শ্রেণীর লোকজন বাস করত এবং কেউ কেউ মনে করেন যে এই নগদ দুর্গ আসলে ছিল এই সভ্যতার পুরোহিত শাসকের রাজপ্রসাদ ।





মূল্যায়ন:

হরপ্পা সভ্যতার নগর পরিকল্পনার সমস্ত দিক আলোচনা করার পরে বলা যায় হরপ্পা সভ্যতার নগর পরিকল্পনা ছিল আধুনিককালের মতো উন্নত। হরপ্পা সভ্যতার রাস্তাঘাট ঘরবাড়ি শস্যাগার পয় প্রণালী ডাস্টবিন প্রভৃতি ছিল আধুনিক কালের মত উন্নত এবং এর গঠন ছিল মজবুত। বলাবাহুল্য হরপ্পা সভ্যতার রাস্তা এমনভাবে তৈরি করা হয়েছিল যাতে দুটো লরি একসাথে যাতায়াত করতে পারে আধুনিককালের উন্নত সড়কে তা মোটেই সম্ভব নয়। এ থেকে প্রমাণিত হয় হরপ্পা সভ্যতা ছিল তৎকালীন নগর পরিকল্পনার 1 অন্যতম নিদর্শন।



2 thoughts on “হরপ্পা সভ্যতার নগর পরিকল্পনা বিবরণ দাও”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top