StudyMamu

Site is under construction some pages not work properly. Please bear with us.

পন্ডিত রমাবাঈ কেন স্মরণীয়।

 

পন্ডিত রমাবাঈ কেন স্মরণীয়।




 দাক্ষিণাত্যের মেয়ে রামাবাঈ ছোট বয়সে অবিবাহিত থেকে বাবার কাছে শিক্ষা লাভ করেন এবং সংস্কৃত ও প্রাচীন শাস্ত্র বিষয়ে আলোকপ্রাপ্ত হন। পরে সমগ্র ভারত ঘুরে নারীশিক্ষার প্রসারের জন্য বক্তৃতা দিতে থাকেন। সংস্কৃতে পান্ডিত্যের জন্য কলকাতার বুদ্ধিজীবী সমাজ তার নাম দেন ‘সরস্বতী’ এবং ‘পন্ডিতা”। 






 কলকাতায় তাঁর বিয়ে হয় এবং অল্প বয়সেই তিনি বিধবা হন। খুব কম বয়সে পিতা, স্বামী ও কাছের বন্ধুর মৃত্যু তাকে মানসিক আঘাত দিয়েছিল এবং তিনি নারীদের মুক্তিকল্পে আত্মনিয়োগ করেন। কলকাতা থেকে পুণেতে ফিরে তিনি আর্য মহিলা সমাজের মাধ্যমে নারী শিক্ষার প্রসারে ব্রতী হন। 

 



 উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য ১৮৮২ সালে তিনি ইংল্যান্ডে যান এবং ব্যপ্টিস্ট হন, খ্রিশ্চানদের কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতাও তিনি গ্রহণ করেন। পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডাতে বিভিন্ন স্থানে নারী শিক্ষার পক্ষে মত দিয়ে ভাষণ দেন ও নিজের প্রয়োজনীয় শিক্ষাও লাভ করেন। আমেরিকাতেই প্রতিষ্ঠিত হয় রামাবাঈ আসোসিয়েশান, ১৮৮৮ সালে মধ্যে এই সংগঠন ৩০০০০ মার্কিন ডলার অর্থ সংগ্রহ করে। এরপর ভারতে ফিরে ঐ অর্থ দিয়ে পণ্ডিতা বোম্বেতে বিধবাদের শিক্ষিতকরে তোলার জন্য সারদা সদন প্রতিষ্ঠা করেন যেখানে কেবল উচ্চবর্ণের ব্রাহ্মণ পরিবারের বিধবাগণ ভর্তি হন। 

 



 এরপর বোম্বে অঞ্চলের রক্ষণশীল সমাজ রামাবাঈ এর সারদা সদনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয় অভিযোগ যে তিনি হিন্দু বিধবাদের আশ্রয় দিয়ে তাদের খ্রিস্ট ধর্মে দিক্ষিত করছেন। বাধ্য হয়ে রামাবাঈ সারদা সদনকে পুণেতে স্থনানাতরিত করেন। কিছু নারী সারদা সদন থেকে বেরিয়ে এলেও দেখা যায় ১৮৯০ এর মধ্যে প্রায় ৮০ জন বিধবা এখান থেকে শিক্ষালাভ করেছেন এবং নিজেরাই শিক্ষকতা করে বা নার্সিং করে অর্থ উপার্জন করছেন। এরপর রামাবাঈ পুণের কাছেই কেদগাঁও এ প্রতিষ্ঠা করেন ‘মুক্তি’ নামে দ্বিতীয় একটি নারী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। 



 ১৮৯৭ সালে মহারাষ্ট্রে তথা দাক্ষিণাত্যের দুর্ভিক্ষে ক্ষতিগ্রস্থ নারী এবং তাদের সন্তানদের আশ্রয় দেওয়ার জন্যই এই প্রতিষ্ঠানটি স্থাপিত হয়। ১০০ একর জমির উপরে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানে ১৯০০ সালের মধ্যে প্রায় ২০০০ জন মা ও তাদের সম্ভানগণ আশ্রয় নিয়েছিল। রামাবাঈ এই আশ্রিতাদের জন্য তাঁর বিদেশভ্রমণের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে একটি মৌলিক পাঠ্যক্রম রচনা করে তাদের প্রশিক্ষিত করে তোলেন। এই পাঠ্যক্রমে মূলাবোধ জাগ্রত করার জন্য সাহিত্য, দেহবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, মুদ্রণ বা ছাপাখানা, কাঠের কাজ বা কারুশিল্প, সেলাই, বাগান করা, চাষবাস ইত্যাদির ব্যবহারিক পাঠ দেওয়া হত যাতে করে মেয়েরা স্বনির্ভর হতে পারে। 



  রামাবাঈ তাঁর প্রতিষ্ঠানে হিন্দু জাতিভেদ প্রথাকে মান্যতা দেননি। তাঁর নারীশিক্ষার পদ্ধতি অভিনব ও যুগোপযোগী হলেও খ্রিশ্চান ধর্মের সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণে তাঁর মহৎ উদ্যোগকে সন্দেহের চোখে দেখা হয়েছিল। 

Share

2 thoughts on “পন্ডিত রমাবাঈ কেন স্মরণীয়।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *