StudyMamu

Site is under construction some pages not work properly. Please bear with us.

খলিফা তন্ত্র উদ্ভবের কারণ গুলি আলোচনা করো

খলিফা তন্ত্র উদ্ভবের কারণ গুলি আলোচনা করো


ইসলামের আবির্ভাবের পূর্বে আরব দুনিয়ায় ইতিহাসের সময়কালকে অজ্ঞানতা যুগ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এইসময় আরবের মানুষ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর বিভক্ত ও বিচ্ছিন্ন ছিল। দেশে কোন সুগঠিত আইন-শৃংখলার অস্তিত্ব ছিল না। তখন আরবে কোন ধর্মপ্রচারকের আবির্ভাব হয় নি। ছিলনা কোন ধর্মগ্রন্থ। সেই সময় আরবে ছিলো পেগান ধর্ম। পরবর্তীকালে হযরত মুহাম্মদ আরবে ইসলাম ধর্ম প্রবর্তন এর মাধ্যমে সেখানে বহুদা বিচ্ছিন্ন জাতিগোষ্ঠীকে তিনি একসূত্রে বাঁধলেন। তিনি আরবে মদিনা শহর কে কেন্দ্র করে গড়ে তোলেন ইসলামিক প্রজাতন্ত্র। তিনি নিজেই প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্র প্রধান হন। তার মৃত্যু পড়ে যারা এই প্রজাতন্ত্র রাষ্ট্র প্রধান নির্বাচন হন তাদের বলা হতো খালিফা


খলিফা শব্দের অর্থ হলো প্রতিনিধি। হযরত মুহাম্মদের মৃত্যুর পরবর্তী কালে তার বিশাল প্রজাতান্ত্রিক সাম্রাজ্যের প্রশাসন পরিচালনার জন্য এমন এক শাসকের প্রয়োজন ছিল যিনি একদিকে দেশ শাসন করবেন এবং অন্যদিকে ইসলামের রীতিনীতি আদর্শ এবং ধর্মীয় বিধি-নিষেধ রক্ষা করবে। সুতরাং খলিফা হলেন ইসলামীয় প্রজাতন্ত্রের শাসক, ইসলামের প্রচারক, ইসলামের রক্ষক এবং সর্বোপরি বিচারক।


মুহাম্মদের মৃত্যুর পর তার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হযরত আবু বকর আরবে খলিফা শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে খলিফাদের প্রতিটি পদ শাসনকালে পরবর্তী 300 বছর মুসলিম দুনিয়ায় খলিফা তন্ত্রের রাজনৈতিক সামাজিক সাংস্কৃতিক আদর্শের সর্বজনীন প্রসার ঘটে। 632 থেকে 661 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ছিল প্রথম চারজন পবিত্র খলিফার শাসন। যা খলিফা এর রাশেদীন বা রাশেদীন খিলাফত নামে পরিচিত। 661 থেকে 750 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ছিল উমাইয়া খিলাফতের শাসনকাল এবং 750 থেকে 1258 এর পর্যন্ত ছিল আব্বাসীয় খিলাফাদের শাসনকাল।


এই খলিফারা বিশ্বের মুসলিম জনগণের সর্বজনীন কর্তৃত্ব স্থাপন করে তাদের ধর্মীয় ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ করতে পেরেছিলেন। হযরত ওমর ফারুক প্রবর্তিত শাসন ব্যবস্থা কে কেন্দ্র করে খেলাফতে রাশেদীন এর শাসন ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। শাসন কার্য পরিচালনার সাহায্যের জন্য মজলিস উস শুরা নামে একটি মন্ত্রণা পরিষদের ছিল। এই পরিষদ শাসনকার্যে খলিফা কে পরামর্শ দিতেন। রাজস্ব ব্যবস্থার ক্ষেত্রে ধনীদের উপর জারি করা হয়েছিল জাকাত।, অমুসলমানদের অপর ধার্য হয়েছিল জিজিয়া এবং নব্য বিজিত অঞ্চলে ও মুসলমানদের উপর ভূমিকার হিসেবে নেওয়া হতো খারজ। যুদ্ধের দ্বারা লুণ্ঠিত সম্পদ ছিল খামস, মুসলমান জমিদারদের ভূমিকর হিসেবে দিতে হত উসদ। মুসলিম ব্যবসায়ীরা প্রবাসে গেলে সেই ক্ষেত্রে তাদের এই কর দিতে হতো। আসাম রাজ্যের আয়তন বৃদ্ধি পেলে সমগ্র রাষ্ট্রকে বিভিন্ন প্রদেশে বিভক্ত করা হয় এবং প্রতিটি প্রদেশ সে একজন করে ওয়লি বা গভর্নর নিযুক্ত করা হয়।


কেন্দ্রীয় শাসন পরিচালনার জন্য প্রশাসনকে পাঁচটি ভাগে ভাগ করা হয়। গড়ে ওঠে ডাক ব্যবস্থা, আব্বাসীয় শাসনে খলিফার সর্বময় কর্তৃত্ব স্থাপিত হয়েছিল। কেন্দ্রীয় শাসন পরিচালনার জন্য খলিফারা বিভিন্ন দপ্তর প্রতিষ্ঠা করেন। আব্বাসীয় বিচারব্যবস্থা সাম্য ও নিরপেক্ষ নীতির উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল। কাজেই বিচার বিভাগ পরিচালনা করত তাকে সাহায্য করত অদল নামে কর্মচারী। প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থার দায়িত্ব সামলাতেন আমির নামে উচ্চপদস্থ কর্মচারীরা।

Share

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *