StudyMamu

Site is under construction some pages not work properly. Please bear with us.

তাইপিং বিদ্রোহের গুরুত্ব বা তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর

 

তাইপিং বিদ্রোহের গুরুত্ব বা তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর।

তাইপিং বিদ্রোহ ব্যর্থ হলেও আধুনিক চিনের ইতিহাসে এর তাৎপর্য হল অসাধারণ ও সুদুরপ্রসারী। তাইপিং বিদ্রোহ সাধারণ কৃষক বিদ্রোহ নয়, তার চেয়ে আরও কিছু। তাইপিং বিদ্রোহীরা বিকল্প রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থার পরিকল্পনা করেছিল। এই বিদ্রোহের ফলে মাকু শাসকদের হাত থেকে ক্ষমতা চিনাদের হাতে চলে যায়।

সম্রাট ও তার রাজসভা সব ক্ষমতা নিজেদের হাতে কেন্দ্রীভূত করে রেখেছিল বিদ্রোহের পরদেশিক চিনা শাসকেরা স্বাধীনভাবে নীতি নির্ধারণ ও শাসনে অধিকার লাভ করেছিল। বিদ্রোহ দমনের প্রধান নায়ক সেং কুয়ো ফ্যান ও লি হুং চাং নিজেদের অধীনে প্রাদেশিক সৈন্যবাহিনী গঠন করেন, এই সময় থেকে চিনে সমরনায়কতন্ত্রের উদ্ভবের সূচনা হয়।

তাইপিং বিদ্রোহীরা পরবর্তী প্রজন্মের চিনাদের গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল। প্রজাতন্ত্রী বিপ্লবের নায়ক সান-ইয়াৎ সেন এই বিদ্রোহের দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত হন। শৈশবে তিনি দ্বিতীয় হুং হবার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তাঁর রাজনৈতিক দর্শনের ওপর তাইপিং বিপ্লবীদের সমতার আদর্শের প্রভাব পড়েছিল। তাঁর বিখ্যাত তিন নীতি (সান-মিন-চু-আই) জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র ও সমাজতান্ত্রিক ধারণার ওপর তাইপিং নীতি ও আদর্শের প্রভাব পড়েছিল। তাইপিং বিদ্রোহীরা যে সমাজ বিপ্লব ঘটাতে ব্যর্থ হন তা আংশিকভাবে সান ও তাঁর অনুগামীরা বাস্তবায়িত করেন।

তাইপিং অঞ্চলের মধ্য দিয়ে সংগ্রাম পরিচালনার সময় কমিউনিস্টরা তাইপিং বিদ্রোহীদের আদর্শকে স্মরণ করেছিল। জাপানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সময় তাইপিং বিদ্রোহীদের আদর্শকে স্মরণ করা হয়েছিল কারণ বিদ্রোহীরা কখনও বিদেশি আগ্রাসনকে স্বীকার করেনি। জ্যাক গ্রে জানিয়েছেন যে হুং শিউ চুয়ান যদি মাও সে-তুং-কে প্রভাবিত করে থাকেন তবে সেং কুয়ো ফ্যান অবশ্যই চিয়াং কাইশেককে প্রভাবিত করেছিলেন।

১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে ইউরোপীয় বিপ্লবের  ব্যর্থতা কার্ল মার্কসকে হতাশ করেছিল, তিনি চিনে তাইপিং বিদ্রোহের মধ্যে নতুন আশার আলো দেখেছিলেন। কৃষক বিপ্লবের সম্ভাবনায় তিনি উদ্দীপিত হয়ে উঠেছিলেন।

এপস্টেন মনে করেন পৃথিবীর মুক্তিকামী মানুষের কাছে এটি ছিল এক মহান সংগ্রাম। সাম্য, ন্যায় ও স্বাধীনতার ওপর নির্ভর করে বিদ্রোহীরা এক নতুন সমাজ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। পৃথিবীর সর্বত্র স্বাধীনতাকামী মানুষের চেতনায় এই সংগ্রাম স্থায়ী আসন লাভ করেছে (More than any other rebellion of their day, they addressed themselves directly to the crisis of the times and offered concrete measures for resolving it. Their vision of a new system of property relations, a new mechanism of local control and a new relationship between the individual and the state was an authentic response to the distinctive problems of the late imperial age)।

তাইপিং বিদ্রোহীরা সমকালীন সমস্যার সমাধানকল্পে তিনটি সুস্পষ্ট প্রস্তাব রেখেছিলেন। এই সমস্যাগুলি ছিল মাঞ্চু অপশাসনের ফল। বিদ্রোহীরা নতুন করে সমতার ভিত্তিতে ভূমি ব্যবস্থা গঠন করেন, স্থানীয় শাসনের সুব্যবস্থা করেন এবং রাষ্ট্র ও ব্যক্তির মধ্যে সম্পর্ক নির্ধারণ করে দেন। এদের চিন্তা-ভাবনায় সামগ্রিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত ছিল।

Share

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *