StudyMamu

Site is under construction some pages not work properly. Please bear with us.

বাদামির চালুক্য বংশের প্রশাসনিক ব্যবস্থা সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর

 

বাদামির চালুক্য বংশের প্রশাসনিক ব্যবস্থা সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর । 

প্রশাসন ব্যবস্থা : 

বাদামির চালুক্য বংশের প্রশাসনিক ব্যবস্থা সম্পর্কে প্রসঙ্গত বলা যায় এ ব্যাপারে তথ্যের স্বল্পতা আছে। চালুক্য শাসকদের বিভিন্ন লেখতে কিছু শাসনতান্ত্রিক বিভাগ ও কর্মচারীপদের উল্লেখ এবং কখনো কখনো বর্ণিত সমকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতির বিবরণ থেকে এব্যাপারে মোটামুটি একটা ধারণা লাভ করা যায় মাত্র। সবচেয়ে চমকপ্রদ তথ্য পরিবেশন করে থাকে বুবরাজ বিক্রমাদিত্যের লক্ষ্মণেশ্বর স্তম্ভলেখ।

রাজা ছিলেন রাষ্ট্রের প্রধান বিচার ও সামরিক বিভাগও প্রধানত তাঁর নির্দেশেই চলত। উত্তরাধিকার সূত্রে রাজা মনোনীত হতেন ও সিংহাসনে বসতেন। সাধারণত শাসনরত রাজার মৃত্যুর পর ঐ বংশের পরবর্তী জ্যেষ্ঠ ব্যক্তি উত্তরাধিকারী হতেন। কখনো কখনো অবশ্য এর ব্যতিক্রমও ঘটত।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায় প্রথম কীর্তিকর্মণের মৃত্যুর সময় তাঁর পুত্র দ্বিতীয় পুলকেশী নাবালক থাকায় তাঁর ভাই মঙ্গলেশ চালুক্য সিংহাসনে বসেছিলেন। কিন্তু মঙ্গলেশের শাসনের অবসান কালে তিনি নিজ পুত্রকে সিংহাসনে বসাতে অধিক আগ্রহী হয়ে উঠলে দ্বিতীয় পুলকেশী জোর পূর্বক চালুক্য সিংহাসনে বসেন। উল্লেখ্য, এব্যাপারে জনমত দ্বিতীয় পুলকেশীর পক্ষেই ছিল।

দ্বিতীয় পুলকেশীর মৃত্যুর কিছুকাল পর জটিল পরিস্থিতি কেটে গেলে চালুক্য সিংহাসনে বসেছিলেন প্রথম বিক্রমাদিত্য, কিন্তু তিনি পুলকেশীর জ্যেষ্ঠপুত্র ছিলেন না। চালুক্য শাসকেরা বিশেষ করে দ্বিতীয় পুলকেশীর পরবর্তী শাসকেরা সাম্রাজ্যবাদী উচ্চ অভিধা যেমন শ্রীপৃথিবীবল্লভ, পরমেশ্বর, মহারাজাধিরাজ পরমেশ্বর পরমভট্টারক প্রভৃতি গ্রহণ করতেন ।

চালুক্য লেখমালায় কিছু সরকারি কর্মচারীর নাম পাওয়া যায়। এ প্রসঙ্গে মহাসন্ধিবিগ্রহিক’র নাম উল্লেখ করা যেতে পারে। গুপ্ত আমলের সন্ধিবিগ্রহিক (শান্তি ও যুদ্ধ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত)-র সঙ্গে এটি তুলনীয়। এছাড়া, চালুক্যদের কিছু ভূমিদানপত্রে বিষয়পতি (জেলার ভারপ্রাপ্ত), গ্রামকূট (গ্রাম প্রধান বা মোড়ল) গ্রামভোগিক এবং মহত্তরাধিকারিন নামের উল্লেখ আছে। শেষোক্তটি সম্ভবত গ্রাম শাসনের হিসাব রক্ষার সঙ্গে যুক্ত ছিল। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা বাঞ্ছনীয় হবে যে, চালুক্যদের সময়ে রাজকর্মচারীরা শাসনতান্ত্রিক বিভিন্ন দৈনন্দিন কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতেন।

গ্রামের শাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে সভা ছিল ঠিকই, কিন্তু এক্ষেত্রেও রাজকর্মচারীদের প্রাধান্য বজায় ছিল। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে চালুক্য শাসনের শেষ দিকে ৭২৫ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় বিক্রমাদিত্যের লক্ষ্মণেশ্বর স্তম্ভলেখ (অধিকাংশই নষ্ট প্রায়)-তে রাজকর্মচারীদের কর্তব্য এবং সরকারের প্রদেয় নাগরিকদের শুক্ষের পরিমাণ নির্ধারিত হয়েছে। এই বিষয়টি প্রমাণ করে যে সুষ্ঠু শাসন সম্পর্কে সরকার সচেতন ছিলেন।

কানাড়ী ভাষায় লেখা লক্ষ্মণেশ্বর গুগুলেখটিতে প্রকৃতপক্ষে একটি গ্রামের সনদ মঞ্জুরের কথা লিপিবদ্ধ হয়েছে। এতে মহাজনদের উল্লেখ ও তাদের কর্তব্য কর্মের বিষয়টি সবিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। বস্তুত, চালুক্য রাজ্যে মহাজনরা এক বিশেষ স্থানে অধিষ্ঠিত ছিলেন। এরকম বলা হয়ে থাকে যে গ্রামের শাসন এবং সমাজ ও অর্থনীতি বিষয়ক নিয়মকানুন নির্ধারিত ছিল মহাজনদের হাতে। এছাড়া, চালুক্য শাসক বিনয়াদিত্য (৬৮১-৯৬ খ্রিঃ)-র সময়ের কিছু লেখ থেকে জানা যায় যে সুষ্ঠু শাসন পরিচালনার উদ্দেশ্যে তিনি মাঝে মাঝেই সাম্রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় পরিদর্শনে বের হতেন।

Share

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *