StudyMamu

Site is under construction some pages not work properly. Please bear with us.

চীনে ৪ঠা মে আন্দোলনের প্রকৃতি আলোচনা কর

 

চীনে ৪ঠা মে আন্দোলনের প্রকৃতি আলোচনা কর । চীনের ৪ঠা মে আন্দোলনের চরিত্র। চীনের 4 মে আন্দোলনের প্রকৃতি।

• চীনে ৪ঠা মে আন্দোলনের প্রকৃতি

৪ মে’র আগে থেকে চিনে শুরু হয়েছিল এক সাংস্কৃতিক বিপ্লব। (The May Fourth incident served as a catalyst for the intellectual revolution in China)। চিনের ইতিহাসে রাজনৈতিক সংকট ও সংস্কৃতির বিভিন্ন ধারার মধ্যে যোগসূত্র খোঁজার প্রয়াস লক্ষ করা যায় (The close association between political action and the contesting of established cultural values was a particularly natural linkage in China) (নিউ ইয়ুথ (New Youth), নিউ টাইড (New Tide) ও মাও সে-তুং পরিচালিত জিয়াং রিভার রিভিয়্যু (Xiang River Review) দেশে সাংস্কৃতিক নবজাগরণের সূচনা করেছিল। ঐতিহ্যকে আক্রমণ করে নতুনের দুয়ার উন্মুক্ত করে দেওয়া ছিল এইসব পত্র-পত্রিকা, পাঠচক্র, সভা-সমিতির লক্ষ্য।

সামাজিক ব্যবস্থার অনেক কিছু আক্রান্ত হয়। সামাজিক তিন সম্বন্ধ, স্ত্রী জাতির অবস্থান, স্ত্রী স্বাধীনতা, সামাজিক সম্পর্ক সবকিছুকে বিতর্কের বিষয় করা হয়েছিল (Overthrow Confucius and sons) / এই আন্দোলন স্ত্রীজাতির অধিকার রক্ষার কথা বলেছিল (The May Fourth Movement was feminist and upheld women’s rights)। এই আন্দোলনের অন্য বৈশিষ্ট্য হল চলিত ভাষা ও সাহিত্যের উন্নতি। এসময় যেসব প্রচার পুস্তিকা, গ্রন্থ ইত্যাদি লেখা হয় তা সবই ছিল বাইছয়া (Baihua) ভাষায়। সহজ সরল চলিত ভাষায় সাহিত্যিকরা সাহিত্য সৃষ্টি করেন। সাহিত্য জনগণের মধ্যে জাতীয় করেন চিনের বহুবিধ সমস্যার সমাধানের জন্য বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন। মার্কসবাদীদের কেউ কেউ গ্রামে গিয়ে কৃষকদের মধ্যে কাজ করার কথা বলেন।

মেনশিয়াসের (Mencius) লেখার মধ্যে তাঁরা আদি সাম্যবাদী সমাজের আভাস পেলেন। শাসনব্যবস্থার কেন্দ্রীকরণ বনাম বিকেন্দ্রীকরণ নিয়েও বিতর্ক চলেছিল। মুক্ত মন নিয়ে চিনা ছাত্র ও বুদ্ধিজীবীরা জীবনের প্রায় সর্বদিক বিচার বিশ্লেষণ করতে থাকেন ( All bearing witness to the open-mindedness and the intellectual availability of the May Fourth Movement) ।

৪ঠা মে আন্দোলনের প্রকৃতি ছিল আন্দোলন ভিত্তিক। চিনের বুর্জোয়া ও ছাত্ররা ছিল আন্দোলনের ভিত্তি, ছাত্ররা চিনের সার্বভৌমত্ব ও বুর্জোয়ারা অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষার কথা ভেবেছিল। ছাত্ররা জাপানি পণ্য বয়কট শুরু করলে সাধারণ মানুষের দেশাত্মবোধ তৃপ্ত হয়, বুর্জোয়াদের অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষিত হয়, বৈদেশিক প্রতিযোগিতা থেকে তারা বেঁচেছিল। মে ফোর্থ আন্দোলনের মধ্যে এই জাতীয় ও শ্রেণীস্বার্থের সমন্বয় লক্ষ করা যায় (This combined expression of national and class interests was a salient feature of the May fourth Movement)।

প্রথম মহাযুদ্ধের সময় আমদানি বন্ধ হলে চিনের বুর্জোয়ারা লাভবান হয়েছিল, রুপোর দাম বাড়লে আমদানিও বেড়েছিল। সমৃদ্ধ বুর্জোয়ারা মে ফোর্থ আন্দোলনকে সমর্থন করে, সাংহাই, তিয়েনসিন ও ক্যান্টনের বণিকসংস্থাগুলি আন্দোলনে সহায়ক হয়। তারা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল, সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিল। বণিক ও শিল্পপতিরা জাপানি পণ্য বয়কটে উৎসাহ জুগিয়েছিল।

সাংহাই শহরে জাপানি সুতো আমদানি ৫৯ শতাংশ কমেছিল। চিনা বুর্জোয়ারা জাতীয় পণ্য জনপ্রিয় করার উদ্যোগ নিয়েছিল (Promotion of national goods)। নতুন নতুন শিল্প স্থাপিত হয়, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা অর্থ লগ্নি করেছিল (co-operative capitalism)। মহিলাদের প্রয়োজনীয় দ্রব্য, কাগজ, দেশলাই প্রভৃতি শিল্প গড়ে উঠেছিল। এই পর্বে বণিক ও শিল্পপতিরা অনেকগুলি নতুন সংস্থা স্থাপন করেছিল, শ্রমিকরা দেশাত্মবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে বণিক ও ছাত্রদের সঙ্গে সহযোগিতা করে চলেছিল। মে ফোর্থ আন্দোলনের পরবর্তীকালে এদের মধ্যে শ্রেণী চেতনার জাগরণ ঘটে। এই আন্দোলনে কৃষকদের কোনো ভূমিকা ছিল না, শহরে মানুষরা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিল ( The rural world was completely cut off from this national crisis, whose protagonists were the new urban classes) ।

মে ফোর্থ আন্দোলনের একটি আন্তর্জাতিক পটভূমি ছিল। রাশিয়ায় জারতন্ত্রের পতন ঘটিয়ে লেনিন সমাজবাদী রাষ্ট্র স্থাপন করেন, পুঁজিবাদী দুনিয়ার ঐক্য নষ্ট হয়। ভারত ও মিশরে ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে গণ-আন্দোলন চলেছিল। 

১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে টোকিও শহরে চালের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে ভয়ঙ্কর দাঙ্গা হয়েছিল। কোরিয়ার রাজধানী সিউলে রাজার মৃত্যুর পর ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ১ মে ছাত্ররা জাপানি আধিপত্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিল। সেখানেও আন্দোলনের মধ্যে ছিল গণবিক্ষোভ, শোভাযাত্রা, সভা ও ধর্মঘট। চিনের মে ফোর্থ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা এসব ঘটনার খবর রেখেছিল, এসব আন্দোলন থেকে আদর্শ, ভাব ও উৎসাহ পেয়েছিল।

2 thoughts on “চীনে ৪ঠা মে আন্দোলনের প্রকৃতি আলোচনা কর”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top