StudyMamu

Site is under construction some pages not work properly. Please bear with us.

গোবিন্দগুপ্তের কৃতিত্ব আলোচনা কর

 

গোবিন্দগুপ্তের কৃতিত্ব আলোচনা কর । গোবিন্দগুপ্তের কৃতিত্ব ।

ভূমিকা : 

সমুদ্রগুপ্তের পর থেকে গুপ্ত সিংহাসনে আরোহণের ক্ষেত্রে বিঘ্ন ঘটার বিষয়টি প্রায়শই পরিলক্ষিত হয়। ইতিপূর্বে সমুদ্রগুপ্ত ও দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের মধ্যবর্তী শাসক হিসাবে রামগুপ্ত এবং এ ব্যাপারে সমস্যা সংক্রান্ত বিষয় আলোচিত হয়েছে। দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের পর প্রথম কুমারগুপ্তের সিংহাসনে আরোহণের ক্ষেত্রেও প্রায় অনুরূপ একটি সমস্যার প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন কিছু ঐতিহাসিক। এক্ষেত্রে যে নামটি সমস্যা সৃষ্টি করেছে তা হল গোবিন্দগুপ্ত।

গোবিন্দগুপ্তের কৃতিত্ব :

গুপ্ত শিলালেখসমূহে গুপ্ত সাম্রাজ্যবাদী শাসকদের যে বংশতালিকা লিপিবদ্ধ রয়েছে তাতে রামগুপ্তের ন্যায় গোবিন্দ গুপ্তেরও নাম নেই। কিন্তু উত্তর বিহারে বসার (প্রাচীন বৈশালী)-এ প্রাপ্ত একটি সীল (অভিজ্ঞান মুদ্রা)-এ মহারাজাধিরাজ শ্রীচন্দ্রগুপ্তর স্ত্রী মহাদেবী শ্রীধ্রুবস্বামিনীকে মহারাজ গোবিন্দগুপ্তের মাতা হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। (“মহারাজাধিরাজ শ্রীচন্দ্রগুপ্ত পত্নী মহারাজ শ্রী-গোবিন্দগুপ্ত-মাতা মহাদেবী শ্রী ধ্রুবস্বামিনী”)।

মান্দাসোরে মালব বর্ষ ৫২৪ (৪৬৬-৬৭ খ্রিঃ)-এ উৎকীর্ণ একটি শিলালেখতে দত্তভট নামে একজন ব্যক্তির নামোল্লেখ আছে এবং বলা হয়েছে যে তাঁর পিতা বায়ুরক্ষিত ছিলেন গোবিন্দগুপ্তের সেনাধ্যক্ষ। বৈশালীতে প্রাপ্ত অভিজ্ঞান মুদ্রা এবং মান্দাসোরের উক্ত শিলালেখটিতে উল্লেখিত গোবিন্দগুপ্তকে এক ও অভিন্ন বলে মনে করা হয়ে থাকে। ডি. আর. ভাণ্ডারকার প্রথম এই সিদ্ধান্তে এসেছিলেন যে গোবিন্দগুপ্ত ছিলেন গুপ্ত সিংহাসনের একজন উত্তরাধিকারী। এমনকি তিনি একথাও ঘোষণা করেছিলেন যে দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত ও কুমারগুপ্তের মধ্যবর্তীকালে গোবিন্দগুপ্ত অল্পকালের জন্য (৪১২-১৪ খ্রিঃ) গুপ্ত সিংহাসনে আরোহণ করেছিলেন। ৩৫

ডি. আর. ভাণ্ডারকার কর্তৃক প্রথম গৃহীত এই তত্ত্বকে সমর্থন করেছেন আরো কিছু ঐতিহাসিক যথা—এ. অগ্রবাল, এ. এস. আলতেকার প্রমুখ। ঐতিহাসিকদের এই ধারণা যদি সত্য বলে ধরে নেওয়া হয়, অর্থাৎ যদি মনে করা হয় যে গোবিন্দগুপ্ত প্রকৃতই দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের পর অল্পকালের জন্য শাসন করেছিলেন তাহলে এ বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ খুবই কম থাকবে যে দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত ও কুমারগুপ্তের শাসনের মধ্যবর্তীকালে সাম্রাজ্যে অন্তর্নিহিত কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছিল।

তবে গোবিন্দগুপ্ত সাম্রাজ্যবাদী গুপ্ত সিংহাসনে বসেছিলেন—এ ধারণা বিশেষ যুক্তিসম্মত বলে মনে হয় না। এক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায় হল দুটি। প্রথমত, গুপ্ত  শাসকদের যে বংশতালিকা পাওয়া যায় তাতে তাঁর নাম নেই। দ্বিতীয়ত, তিনি কোনো মুদ্রা প্রবর্তন করেননি, যার ভিত্তিতে প্রমাণ করা সম্ভব হত যে তিনি সার্বভৌম শাসক ছিলেন। এছাড়া, আরো দু-একটি বিষয় এখানে উল্লেখের দাবি রাখে। বসারে প্রাপ্ত অভিজ্ঞান মুদ্রায় কেবল গোবিন্দগুপ্তের মাতা হিসাবে ধ্রুবস্বামিনী এবং তাঁর স্বামী দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের নামোল্লেখ আছে। এমন হতে পারে যে পিতার রাজত্বকালে গোবিন্দগুপ্ত বৈশালীর স্থানীয় শাসক ছিলেন।

আবার মান্দাসোর লেখতে গোবিন্দগুপ্ত ও তাঁর সেনাধ্যক্ষ বায়ুরক্ষিতের নামোল্লেখ থেকে এ ধরনের সিদ্ধান্তে আসা সমীচীন হবে না যে তিনি নিশ্চিতভাবে একজন স্বাধীন ও সর্বময় শাসক ছিলেন। মান্দাসোর লেখ থেকে অবশ্য এই সিদ্ধান্তে আসা যেতে পারে যে গোবিন্দগুপ্ত পরবর্তীকালে মান্দাসোর অঞ্চলের একজন শাসনকর্তা ছিলেন।

মূল্যায়ন: 

সুতরাং, গোবিন্দগুপ্ত কোনো স্বাধীন সার্বভৌম শাসক ছিলেন না। তিনি ছিলেন একজন প্রাদেশিক শাসনকর্তা অথবা ঐ জাতীয় কোনো পদাধিকারী ব্যক্তি। অবশ্য দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত ও ধ্রুবস্বামিনীর সঙ্গে তাঁর যে পুত্রবং সম্পর্ক তা একেবারে অস্বীকার করা যাবে না।

Share

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *