ভারতে পারসিক আক্রমণের ফলাফল বিশ্লেষণ করো ।ভারতে পারসিক আক্রমণের ফলাফল বা প্রভাব।
ভূমিকা :
উত্তর-পশ্চিম ভারতে পারসিক আধিপত্য যে প্রায় দুশো বছর স্থায়ী হয়েছিল তা ওপরের আলোচনা থেকে বোঝা সম্ভব হয়েছে। আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে ভারতের ইতিহাসের ওপর এর কোনো প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েনি। কারণ, উত্তর-পশ্চিম ভারতে একটা নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে পারসিক অধিকার সীমাবদ্ধ ছিল। ভারতীয় রাজনীতির ওপর এর কোনো প্রতিফলন ঘটেনি বলেও মনে হতে পারে। কুরু বা কাইরাস, প্রথম ড্যারিয়াস, কিংবা জারেক্সেস যখন উত্তর-পশ্চিম ভারতে পারস্য সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি ঘটানোর কাজে ব্যস্ত ছিলেন তখন গাঙ্গেয় উপত্যকায় মগধের নেতৃত্বাধীনে একটা বৃহত্তর সাম্রাজ্য গঠনের ছক তৈরি হচ্ছিল।
স্বাভাবিকভাবেই উত্তর-পশ্চিম ভারতে পারসিক অধিকার সম্পর্কে অভ্যন্তরস্থ ভারতীয়দের মধ্যে বিশেষ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়নি। পূর্ববর্তী অধ্যায়ে আলোচিত ষোড়শ মহাজনপদগুলির মধ্যে প্রধান চার-পাঁচটি মহাজনপদ নিজ নিজ সাম্রাজ্য বিস্তারের উদ্দেশ্যে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। একথা অবশ্য স্বীকার্য যে, উত্তর-পশ্চিম ভারতে পারসিক আধিপত্য স্থাপনের এই ঘটনা মগধের শাসকদের একেবারে নজর এড়িয়ে যায়নি।
ভারতে পারসিক আক্রমণের ফলাফল :
ভারতীয় রাজনীতির ওপর পারসিক অভিযানের তাৎক্ষণিক ফলাফল বিশেষ না থাকায় সামগ্রিকভাবে ভারতের ইতিহাসে এর কোনো প্রভাব পড়েনি মনে করলে ভুল হবে। গভীরভাবে বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে যে ভারতীয় অর্থনীতি, শিল্প, স্থাপত্য-ভাস্কর্য তথা সংস্কৃতির ওপর এই অভিযানের অপরিসীম প্রভাব পড়েছিল। এমনকি, রাজনীতির ক্ষেত্রেও এর প্রভাব বিশেষ গৌণ ছিল না। প্রসঙ্গত বলা যায়, পারসিক শাসকরা উত্তর পশ্চিম ভারতে যে ক্ষত্রপ শাসনব্যবস্থার প্রবর্তন ঘটিয়েছিলেন তা পরবর্তীকালে ভারতবর্ষে বিভিন্ন রাজবংশ কর্তৃক অনুকরণীয় হয়েছিল। শক ও কুষাণ শাসনব্যবস্থার কথা এক্ষেত্রে উল্লেখ করা যেতে পারে। এছাড়া, পারসিক সম্রাটদের বৃহত্তর সাম্রাজ্য স্থাপনের প্রয়াস ভারতীয় শাসকদের বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল। বিম্বিসার, অজাতশত্রু, মহাপদ্ম নন্দ ও চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য—এই সমস্ত বীর শাসকরা মগধের অভ্যুত্থান ঘটাতে যে আমরণ সংগ্রাম চালিয়েছিলেন তার পিছনে পারসিক আদর্শ পরোক্ষভাবে প্রেরণা যুগিয়েছিল। সর্বভারতীয় সাম্রাজ্য স্থাপনে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য যে প্রয়াসী হয়েছিলেন তাতে ইন্ধন যুগিয়েছিল পারসিক শাসকদের বৃহত্তর সাম্রাজ্য স্থাপনের আদর্শ ।
পণ্ডিতপ্রবর ডি. বি. স্পুনার এই মতের অন্যতম সমর্থক। সুতরাং একদিক থেকে ভারতে প্রথম বৃহত্তর সাম্রাজ্য গঠনের চিন্তাধারার ওপর পরোক্ষভাবে কিছুটা বৈদেশিক ছাপ পড়েছিল।
ভারতে পারসিক আক্রমণের অন্যতম ফলাফল ছিল দিগন্তের প্রসার । পারসিক অভিযান ভারতীয়দের ভৌগোলিক দিগন্ত প্রসারের কাজে সহায়ক হয়েছিল। এর ফলে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে সংযোগ ঘনিষ্ঠতর হয়। ভারত সম্পর্কে গ্রিসের যে ধারণা এতকাল ছিল তা আরো সমৃদ্ধ হয় এই অভিযানের সূত্র ধরে। পারসিক শাসকরা উত্তর-পশ্চিম ভারতে তাদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠাকালীন এদেশ থেকে কেবল সোনা ও মূল্যবান দ্রব্য নিজ দেশে নিয়ে গিয়েছিলেন তাই নয়, এখানের কর্মশক্তিকেও বিশেষভাবে কাজে লাগিয়েছিলেন। উপজাতীয় বহু মানুষ পারসিক সামরিক বিভাগে নিযুক্ত হয়েছিল। আলোচনা প্রসঙ্গে দেখা গেছে যে, পারসিক সম্রাট জারেক্সেসের সেনাবাহিনীর অন্তর্ভুক্ত ছিল ভারতীয় বহু সৈন্য। এই বিষয়টি ভারত সম্পর্কে গ্রিকদের মনে বিশেষ কৌতূহল সৃষ্টি করে। আলেকজান্ডারের ভারত অভিযানের পিছনে যথেষ্ট প্রেরণার সঞ্চার হয়েছিল এর ফলস্বরূপ। পারসিক অভিযানে গ্রিস ও ভারতের মধ্যে সেতু বন্ধনের কাজ করেছিল।
সমকালীন ভারতীয় পণ্ডিতরা অবাধে পারস্য সাম্রাজ্যে যাতয়াত করতে থাকেন। এর ফলস্বরূপ বিশেষভাবে গ্রিসের সঙ্গে এবং সাধারণভাবে পাশ্চাত্যের অন্যান্য দেশের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপনের পথ উন্মুক্ত হয়। অধ্যাপক সুধাকর চট্টোপাধ্যায় “দ্য আকিমেনিডস এ্যান্ড ইন্ডিয়া” নামক একটি প্রবন্ধে মন্তব্য করেছেন যে গ্রিক, শক ও কুষাণদের তুলনায় ভারতবর্ষে রাজনীতির ক্ষেত্রে আকিমেনীয় শাসকরা কম সাফল্যলাভ করেছিল। কিন্তু ভারতের সঙ্গে বাইরের জগতের সংযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে তাদের কৃতিত্ব ছিল অভাবনীয়। তিনি আরো বলেছেন, এই অভিযানের সমাপ্তি পর্বের পরে পরেই শুধু যে গ্রিক বীর আলেকজান্ডার ভারত আক্রমণ করেছিলেন তাই নয়, এর সূত্র ধরে বহু বৈদেশিক শক্তি পরবর্তীকালে ভারত ভূখণ্ডে আধিপত্য প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে এদেশে এসেছিল।
প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে যে সংযোগের কথা বলা হল বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে তা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘ দুশো বছর ধরে পারস্যের সঙ্গে ভারতের যে সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছিল তার ফলস্বরূপ এখানের বাণিজ্য সমৃদ্ধ হয়। প্রথম ড্যারিয়াসের সুসা প্রাসাদ লেখর ভিত্তিতে আমরা আগেই দেখেছি যে ভারতের সেগুন কাঠ ও হাতির দাঁতের তৈরি বিভিন্ন দ্রব্যের বিশাল চাহিদা ছিল পারস্যের বাজারে। উভয় দেশের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্র উপযুক্ত হওয়ার ফলে ভারতীয় বণিকেরা বিশাল পারস্য সাম্রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে পণ্য সরবরাহের কাজে লিপ্ত হয়। উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে প্রচুর পরিমাণে পারসিক মুদ্রার প্রাপ্তি উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের ইঙ্গিত বহন করে। যে-কোনো দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে প্রাকৃতিক সম্পদের যথোপযুক্ত প্রয়োগ বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। উল্লেখ্য যে, খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীর আগে ভারতে লোহার প্রচলন ঘটেছিল। কিন্তু তার প্রয়োগ ব্যাপক আকার ধারণ করেনি।
খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীর পর থেকে ভারতে লোহার ব্যবহার বহুল পরিমাণে বৃদ্ধি পেতে থাকে। মর্টিমার ঘইলার প্রমুখ পণ্ডিতেরা মনে করেন, ভারতে লোহার ব্যাপক ব্যবহারের পিছনে পারস্যের সঙ্গে ভারতের সংযোগ স্থাপনের বিষয়টি বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিল। এঁদের মতে, এ বিষয়ে পারস্যের কাছ থেকে ভারতীয়রা বিশেষভাবে ওয়াকিবহাল হয়। ভারতে মুদ্রা তৈরির ক্ষেত্রে পারসিকদের অবদান কম নয়। এরকম বলা হয়ে থাকে যে এদেশে মুদ্রা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণার সৃষ্টি হয়েছিল পারসিকদের সঙ্গে সংযোগের ফলস্বরূপ । পারসিক স্বর্ণমুদ্রা ‘দারিক’ এবং রৌপ্যমুদ্রা ‘শেকেল’-এর ভারতে আমদানির বিষয়টি এদেশীয় মানুষের মনে মুদ্রা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা গড়ে তোলে।
তবে ভারতের বাণিজ্যিক দিকের তুলনায় সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে ইন্দো-পারসিক সংযোগের অবদান সবচেয়ে বেশি। এ প্রসঙ্গে মৌর্য যুগের বিভিন্ন বিষয়ের ওপর এই ইন্দো-ইরানীয় সংযোগের যে প্রভাব পড়েছিল তা আলোচনা করা যেতে পারে। প্রথিতযশা কিছু পণ্ডিত মৌর্য সাম্রাজ্যের ওপর পারস্যের আকিমেনীয় সাম্রাজ্যের অপরিসীম প্রভাবের কথা উল্লেখ করেছেন। এঁদের মধ্যে, ডি. বি. স্পুনার, মর্টিমার হুইলার প্রমুখের নাম বিশেষ উল্লেখযোগ্য। এঁদের বক্তব্য মোটেই নগণ্য নয়। যদি উভয় সাম্রাজ্যের মধ্যে তুলনামূলক আলোচনা করা যায় তাহলে এঁদের বক্তব্যের মৌলিকতা বোঝা সম্ভব হবে।
পারস্যের আকিমেনীয় সাম্রাজ্যে কেন্দ্রীভূত শাসনব্যবস্থা প্রচলিত ছিল। ইন্দো-পারসিক সংযোগের অবসানের কিছুকাল পরে চন্দ্রগুপ্ত কর্তৃক যে বিশাল মৌর্য সাম্রাজ্য ভারতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তাতে ঐ কেন্দ্রীকরণের নীতি বিশেষভাবে প্রযুক্ত হয়। এরকম মনে করা অযৌক্তিক নয় যে, মৌর্য শাসকরা এ বিষয়ে পারস্যের কাছ থেকে প্রেরণা লাভ করেছিলেন। পারসিক আমলে উত্তর-পশ্চিম ভারতে শাস্তি শৃঙ্খলা রক্ষার উদ্দেশ্যে, তক্ষশিলা, কপিশা ও পুল্লাবতীতে রাজপথের ধারে যে নগর গড়ে উঠেছিল তা ভারতে পরবর্তীকালে অনুকরণীয় হয়। বিশেষ করে মৌর্য আমলে ঐ নীতির প্রতিফলন লক্ষ করা যায় পারসিক সাম্রাজ্যের রাজ দরবারের বিভিন্ন আদব কায়দা মৌর্য সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য শাসনক্ষেত্রে অনুকরণ করেছিলেন।
উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, মন্ত্রীপরিষদের সভাকক্ষে অগ্নি প্রজ্বলন এবং রাজার দেহরক্ষী হিসাবে নারীদের নিয়োগের রীতি পারসিক শাসনব্যবস্থার ন্যায় চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য প্রচলন ঘটিয়েছিলেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পারসিক রমণীরাই সাধারণত ভারতীয় শাসকদের দেহরক্ষিণী রূপে নিযুক্ত হত। এছাড়া, চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের রাজত্বকালে কাথিয়াবাড়ের শাসনকর্তা হিসাবে তুসাম্প-র নিয়োগের কথা এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যেতে পারে।
মৌর্য যুগ তথা ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্রাট অশোকের শাসনকালে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর এই ইন্দো-পারসিক সংযোগের সুস্পষ্ট প্রভাব লক্ষ করা যায়। এ প্রসঙ্গে উত্তর-পশ্চিম ভারতে প্রাপ্ত আশোকের শিলালেখগুলিতে খরোষ্ঠী লিপির ব্যবহারের কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। পারস্যের বহুল প্রচলিত আরামাইক লিপিরই অভিন্ন রূপ হল এই খরোষ্ঠী লিপি। আরামাইকের ন্যায় খরোষ্ঠী বর্ণগুলিও ডানদিক থেকে বামদিকে লেখা হত। খ্রিস্টীয় তৃতীয় শতাব্দীর পর থেকে খরোষ্ঠী লিপির ব্যবহার ক্রমশ কমে যেতে থাকে। আকিমেনীয় লেখগুলির ন্যায় আশোকের অনুশাসনগুলিতে প্রায় একই ছক অনুসৃত হয়েছে। অশোকের অনুশাসনগুলির ভূমিকা বা প্রস্তাবনায় পারসিক লেখগুলির ভূমিকার প্রভাব লক্ষ করা যায়। অশোকের শিলালেখতে উদ্ধৃত ‘দিপি’ (অনুশাসন) ও ‘নিপিষ্ট’ (লিখিত) শব্দ দুটি পারসিক শব্দ থেকেই উদ্ভূত হয়েছিল। সর্বোপরি, তাঁর শিলালেখগুলিতে রাজকীয় ঘোষণা বা বাণী খোদাই-এর যে রীতি প্রবর্তিত হয়েছিল তার ওপরেও পারসিক শাসকদের শিলালেখসমূহের প্রভাব পরিলক্ষিত হয়।
উপসংহার :
মৌর্য স্থাপত্য শিল্পের ওপর পারসিক প্রভাব লক্ষ করা যায় সবচেয়ে বেশি। বেশির ভাগ পণ্ডিত মনে করেন যে ইন্দো-পারসিক স্থাপত্য শিল্প মৌর্য আমলেই বিশেষভাবে প্রতীয়মান হয়ে উঠেছিল। উল্লেখ্য, খ্রিস্টপূর্ব ৩৩০ অব্দে গ্রিক বীর আলেকজান্ডার কর্তৃক পারস্যের পার্সেপোলিস নগরীর ধ্বংসসাধনের পর থেকে এ বিষয়ে অগ্রগতি ঘটতে থাকে বিশেষভাবে। কারণ, ঐ ঘটনার পর পারস্যের এক বিশাল সংখ্যক স্থপতি ও ভাস্কররা পূর্বের ইন্দো-ইরানীয় ঘনিষ্ঠ সংযোগের সূত্র ধরে ভারতে চলে আসেন। পার্সেপোলিস থেকে আশ্রয়চ্যুত হয়ে তাঁরা এদেশে এলেও তাঁদের শিল্প-নৈপুণ্য অপরিবর্তিত থাকে। শিল্পের ওপর তাঁদের অপূর্ব দক্ষতা মৌর্য আমলে প্রতিফলিত হয়।
মৌর্য শিল্পকলা অনেকাংশে পারসিক স্থাপত্য শিল্পের আদলে তৈরি হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় অশোকের বিভিন্ন স্তম্ভগুলির নির্মাণ কৌশলের ওপর পারসিক প্রভাব পড়েছিল অপরিসীম। ভারতে পাথর খোদাইয়ের মাধ্যমে স্তম্ভ নির্মাণের যে রীতি অশোকের সময়ে চালু হয়েছিল তার ওপর পারসিকদের প্রভাব অনস্বীকার্য। এছাড়া স্তম্ভগুলিতে পালিশের অপূর্ব কৌশল, কয়েকটি স্তম্ভ লেখতে সিংহমূর্তিগুলির উপস্থিতি স্পষ্টতই পারসিক সাম্রাজ্যের ভাস্কর্যের প্রতিচ্ছবি লক্ষ করা যায়। এই সমস্ত দিক বিচার করে আর. এ. জৈরাজভোয় তাই বলেছেন যে মৌর্য যুগের স্থাপত্য-ভাস্কর্যের ওপর আকিমেনিড আমলের যে প্রভাব পড়েছিল তাকে কোনোক্রমেই অস্বীকার করা যাবে না। তিনি আরো বলেছেন, মৌর্যদের রাজধানী পাটলিপুত্রের রাজপ্রাসাদের নির্মাণকৌশল এবং অশোকের স্তম্ভগুলির অসাধারণ পালিশ নিঃসন্দেহে পারস্যের পার্সেপোলিস নগরীর কারুকার্যের ওপর ভিত্তি করে রচিত হয়েছিল।