যুগসন্ধিক্ষণের আনুমানিক সময় উল্লেখ করো। যুগসন্ধিক্ষণের সময়কাল ।
1757 খ্রিস্টাব্দে পলাশির যুদ্ধ ভারতবর্ষে ক্রমশ এক নতুন যুগের সূচনা করে। ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির তত্ত্বাবধানে বাংলাকে কেন্দ্র করে সমগ্র ভারতবর্ষে ব্রিটিশ রাজত্বের প্রক্রিয়া শুরু হয়। সেই সুবাদে বাংলা সামরিক রাজনৈতিক দিক থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ “ব্রিজহেড” (Bridgehead) -এ পরিণত হয়।
আনুমানিক 1700 1800 খ্রিস্টাব্দকে যুগ সন্ধিক্ষণের সময় (Transition Period) হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অর্থাৎ যুগসন্ধিক্ষণের আনুমানিক সময় হল 1700 1800 খ্রিস্টাব্দ। অষ্টাদশ শতকের সত্তরের দশকে ভারতবর্ষের বিভিন্ন দেশীয় শক্তিগুলির সঙ্গে ইংরেজদের প্রতিমন্দ্বিতা ক্রমশ তীব্র আকার ধারণ করে এবং ওয়ারেন হেস্টিংস (Warren Hastings), কর্নওয়ালিস (Cornwallis) এবং আর্থার ওয়েলেসলি (Arthur Wellesley), ডিউক অফ ওয়েলিংটন (Duke of Wellington)-এর নেতৃত্বে ইংরেজগণ তাদের আধিপত্য বিস্তার করেন ও তার ফলস্বরূপ উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসন সুদৃঢ় হয়।
হায়দর আলি ও টিপু সুলতান-এর সুযোগ্য নেতৃত্বে মহীশূর রাজ্য ইংরেজ হানাদারদের কিছুকাল ঠেকিয়ে রাখলেও অবশেষে তাদের বিপুল সামরিক শক্তি, নৌশক্তি, আন্তর্রাজ্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা, বিশ্বাসঘাতকতা ইত্যাদির কারণে পর্যুদস্ত হয়।
চতুর্থ ইঙ্গ-মারাঠা যুদ্ধের (Fourth Anglo-Maratha War) পরবর্তী পর্যায় এবং মহারাজা রণজিৎ সিংহের সঙ্গে শতদূর চুক্তি (Treaty of Sutlej) ইংরেজদের অপ্রতিহত ক্ষমতা প্রদান করে। এর ফলে 1818-1857 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে সমগ্র ভারতবর্ষে। ইংরেজ রাজত্ব কায়েম হয়। বাংলা তথা ভারতবর্ষে “ব্রিটিশ প্যারামাউন্টসি” (British Paramountcy) প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ফলে সমগ্র উপমহাদেশে এক রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক পরিবর্তনের সূত্রপাত হয়।