StudyMamu

Site is under construction some pages not work properly. Please bear with us.

রাঙ্কে ও নিব্যুর কীভাবে ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেন

 

রাঙ্কে ও নিব্যুর কীভাবে ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেন? । রাঙ্কে ও নিব্যুর অবদান।



ভূমিকা :

বার্থোল্ড নিব্যুর (Barthold Nicbuhr, CE 1776 1831 ) ও লিওপোল্ড ফন রাঙ্কে (Leopold von Ranke, CE 1795-1886 ) তথ্যনির্ভর, বিশ্লেষণধর্মী, বিজ্ঞানভিত্তিক এবং যুক্তিনিষ্ঠ ইতিহাস রচনার পথিকৃরূপে গণ্য হন।

  • রাঙ্কে ও নিব্যুর  

ডেন বংশোদ্ভূত নিব্যুর প্রাশিয়াতে আসেন এবং বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিযুক্ত হন। রোমান ইতিহাস ও পুরাতত্ত্ব সংক্রান্ত তাঁর বক্তৃতা জনমানসে আলোড়ন সৃষ্টি করে এবং তার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি 1811-12 খ্রিস্টাব্দ নাগাদ দু-খণ্ডে রোমের ইতিহাস (History of Rome) রচনা করেন। প্রথাগত রাজনৈতিক ইতিহাস থেকে বিচ্যুত হয়ে নিব্যুর রোমের ইতিহাস বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে ভাষাতত্ত্বের (Philology) সাহায্য নেন এবং পাঠ্যাংশ সমালোচনার (Textual Criticism) নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। এর মাধ্যমে তুলনামূলক ভিত্তিতে বিভিন্ন গ্রন্থ ও পাণ্ডুলিপিতে বর্ণিত সঠিক তথ্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে সহায়ক হয়। এর ফলে ইতিহাসে বহু গুরুত্বপূর্ণ ও প্রাসঙ্গিক তথ্যের সমাগম ঘটে যা ঐতিহাসিক ঘটনাবলির সত্যাসত্য যাচাইয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। এই Methodology-র মাধ্যমে ইতিহাস অধিক গবেষণাধর্মী হয়ে ওঠে।

নিব্যুরের মানসপুত্র লিওপোল্ড ফন রাঙ্কে 1795 খ্রিস্টাব্দে জার্মানির একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর গুরুত্বপূর্ণ রচনাগুলির মধ্যে উল্লেখ্য হিস্ট্রিস অফ দ্য ল্যাটিন অ্যান্ড টিউটনিক পিপল্‌স (Histories of the Latin and Teutonic peoples), হিস্ট্রি অফ দ্য পোপস (History of the Popes), হিস্ট্রি অফ ফ্রান্স (History of France). নাইন বুকস অফ প্রাশিয়ান হিস্ট্রি (Nine Books of Prussian History) প্রভৃতি। এ ছাড়া তিনি একখানি ইংল্যান্ডের ইতিহাস (History of England) রচনা করেন।

রাঙ্কের ইতিহাস রচনার পদ্ধতির (Historical Methodology) প্রধান দুই স্তম্ভ হল নৈর্ব্যত্মিকতা (Objectivity) এবং তথ্যের সত্যানুসন্ধান (Ascertaining of facts ) । সমস্ত আকর তথ্যের (Primary sources) যথাযথ অনুসন্ধান করে তবেই একজন ঐতিহাসিক তাঁর সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেন। এর অন্যথা হলে সত্যের পরিমার্জন হয় এবং ইতিহাসের বিকৃতি ঘটে।

ইতিহাসের ঘটনাবলি ঠিক সেইভাবে উপস্থাপিত করতে হবে যেমনটা হয়ে এসেছে (The Past as it actually happened)। এক্ষেত্রে ঐতিহাসিক তার ব্যক্তিগত ও পূর্বনির্ধারিত অভিমত এবং চিন্তাভাবনা সংযোজনের থেকে বিরত থাকবেন। রাঙ্কে তাঁর রচনা পদ্ধতির মৌলিকতা বজায় রাখার উদ্দেশ্যে ইউরোপের বিভিন্ন লেখ্যাগার (Archives) পরিভ্রমণ করেন এবং তাঁর তথ্যগুলিকে যূথবদ্ধ (Collation) করেন। বিবিধ ইউরোপীয় ভাষাজ্ঞান তাঁকে এক্ষেত্রে প্রভূত সাহায্য করে। তিনি Primary Source-গুলি সংশ্লিষ্ট ভাষায় পাঠ করে সঠিক ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে অগ্রসর হন।

1824 থেকে 1871 খ্রিস্টাব্দ অবধি রাঙ্কে বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেকগুলি বক্তৃতা দেন । ছাত্রসমাজের মধ্যে ইতিহাসবোধ (Sense of History) তৈরির উদ্দেশ্যে 1833 খ্রিস্টাব্দ থেকে সেমিনার (Seminar) পদ্ধতি আরম্ভ করেন। এখানে ইউরোপ ও আমেরিকা থেকে আগত বহু ছাত্রের সমাবেশ ঘটে। রাঙ্কের মেধা, তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা ও বিশ্লেষণী মনন তৎকালীন জার্মান বৌদ্ধিক সমাজের চালচিত্র হয়ে ওঠে। এইভাবে একজন স্বনামধন্য নিরপেক্ষ ঐতিহাসিক হিসেবে রাঙ্কে প্রতিষ্ঠানস্বরূপ হয়ে ওঠেন।

Share

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *