StudyMamu

Site is under construction some pages not work properly. Please bear with us.

ফরাসি রোমান্টিকতাবাদের ইতিহাস সংক্ষেপ আলোচনা কর

ফরাসি রোমান্টিকতাবাদের ইতিহাস সংক্ষেপ আলোচনা কর

ভূমিকা :

অগাস্টিন থিয়েরি (Augustine Thierry CE 1795-1856 ) এবং জুলে মিশেলে (Julee Michelet, CE 1798-1874) ফরাসি রোমান্টিকবাদ ইতিহাসবেত্তা হিসেবে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন।

ফরাসি রোমান্টিকতাবাদের ইতিহাস :

ফরাসি রোমান্টিকবাদ ইতিহাসবেত্তা থিয়েরির গুরুত্বপূর্ণ রচনা হল Norman Conquest of England যেখানে তিনি বিজিত অ্যাংলো-স্যাক্সনদের প্রতি সহমর্মিতা জ্ঞাপন করেছেন। থিয়েরির রচনাশৈলী অনেকাংশে ওয়াল্টার স্কটের উপন্যাসের দ্বারা প্রভাবিত যেখানে ঐতিহাসিক চরিত্রদের পাঠককুলের সমক্ষে প্রায় জীবন্তভাবে তুলে ধরা হয়েছে। ঐতিহাসিক জুলে মিশেলে এগারো খণ্ডে ফ্রান্সের ইতিহাস (History of France) এবং সাত খন্ডে ফরাসি বিপ্লবের ইতিহাস (History of the French Revolution) রচনা করেন। মিশেলে তাঁর ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে জনগণ (the People)-কে প্রাধান্য দেন। তিনি সন্ত্রাসের রাজত্বের দুই হোতা রোবসপিয়ের এবং মারাত-এর প্রতি ঘৃণা উদ্রেক করেন।

ফরাসি রোমান্টিকতাবাদের অন্যতম ইতিহাসবেত্তা মিশেলের ঐতিহাসিক দৃষ্টিভঙ্গি ছিল আকোপূর্ণ, পক্ষপাতদুষ্ট এবং অতি সরলীকৃত। তৎসত্ত্বেও ফরাসি ইতিহাসের ভাষ্যকার হিসেবে তিনি অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। স্কট বংশীয় ঐতিহাসিক টমাস কার্লাইল (Thomas Carlyle CE 1795-1881) রাজমিস্ত্রীর সন্তান ছিলেন। তাঁর ইতিহাস রচনার শৈলী ছিল আত্মচরিতমূলক (Biographical)। তাঁর প্রখ্যাত রচনা হল Heroes and Heroworship (1841)। মনীষী অর্থাৎ, গ্রেট ম্যান (Great Man)-দের তিনি ইতিহাসের চালিকা শক্তি মনে করতেন। ফরাসি বিপ্লব সংক্রান্ত তাঁর সর্বাধিক জনপ্রিয় রচনা হল দ্য ফ্রেঞ্চ রেভোলিউশন (The French Revolution, CE 1837 )।

কালাইলের নাটকীয় এবং স্বতঃস্ফূর্ত রচনার তুলনায় মেকলের (Macaulay) শৈলী অনেক সংযত (Balanced) ও যুক্তিপূর্ণ। তিনি ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে সাহিত্য এবং কল্পনার (Imagination) যথাযথ প্রয়োগের কথা বলেন, কিন্তু তা হবে মূলত ঐতিহাসিক তথ্যের ওপর নির্ভরশীল। তাঁর প্রখ্যাত রচনা হল History of England from 1688 to 1820। গৌরবময় বিপ্লবকে (Glorious Revolution) তিনি স্বাধীনতার জয়ের ( Triumph of Liberty) সঙ্গে তুলনা করেছেন। ইংল্যান্ডের এই রক্তপাতহীন এবং নিঃশব্দ বিপ্লব তাকে রাজনৈতিক স্থায়িত্ব এবং আর্থসামাজিক স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি প্রদান করে। ইংল্যান্ড সমস্ত বিশ্বের চোখে এক অনুকরণীয় রাষ্ট্রের মর্যাদা পায়।

জার্মান জাতীয়তাবাদ ও তার ঐতিহাসিক তাৎপর্য

অষ্টাদশ শতকের প্রথমার্ধে প্রাশিয়ার উত্থান এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ পর্বে বিসমার্কের নেতৃত্বে জার্মানির ঐক্যসাধন, বহু বিদগ্ধজনের মনে আশা ও উদ্দীপনার সঞ্চার করে। এর ফলে ইউরোপে শক্তিসাম্যের ভারসাম্য পরিবর্তিত হয় এবং জার্মান রাষ্ট্র একটি মহা প্রতিপত্তিশালী একক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ।

প্রাশিয়ার তত্ত্বাবধানে জার্মানির রাজনৈতিক ও সামরিক একীকরণ ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। এই সময়কার প্রভাবশালী ঐতিহাসিকরা হলেন ড্রয়সেন (Droysen CE 1808-1884), সিবেল (Sybel, CE 1817-1896) এবং ট্রিটস্কে (Trietschke, CE 1834-1896)। এরা প্রত্যেকেই ছিলেন গোঁড়া রক্ষণশীল জাতীয়তাবাদী (Conservative Nationalists), প্রাশিয়া তথা বিসমার্কের গুণগ্রাহী এবং যুদ্ধের প্রয়োজনীয়তার একান্ত সমার্থক।

ঐতিহাসিক হাইনরিখ স্তন টিস্ক (Heinrich Von Trietschke) এই ভাবধারার পথিকৃৎ হিসেবে গণ্য হন। তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনা হল হিস্ট্রি অফ জার্মানি ইন দ্য নাইনটিস্থ সেঞ্চুরি (History of Germany in the Nineteenth Century) ।

মূল্যায়ন:

পরিশেষে বলা যেতে পারে যে ফরাসি রোমান্টিকতাবাদের ইতিহাস ভাবধারায় রচিত ইতিহাসে নানা ত্রুটিবিচ্যুতি ছিল। এর ভাববাদী আবেগসর্বস্ব দৃষ্টিভঙ্গি, পৌরাণিকতা ও উপকথাভিত্তিক উপাদান,  রক্ষণশীল জাতীয়তাবাদী দৃষ্টিকোণ বিজ্ঞানভিত্তিক ইতিহাস রচনার সম্পূর্ণ পরিপন্থী ছিল। তৎসত্ত্বেও সাহিত্য, ভাষা, ধ্রুপদী শৈলী, ভাষা ইত্যাদির নিরিখে এই ইতিহাস মানবমনকে উদ্‌বলিত করেছিল।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top