StudyMamu

Site is under construction some pages not work properly. Please bear with us.

ভারতের জাতীয়তাবাদী চেতনার উন্মেষ ও বিকাশের কারণ

ভারতের জাতীয়তাবাদী চেতনার উন্মেষ ও বিকাশের কারণ ।

ভূমিকা:

ব্রিটিশ ভারতে জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ও ভারতীয়দের আত্মমর্যাদার লড়াইয়ের সূত্রপাত হয় মূলত ঔপনিবেশিক শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে। এর সঙ্গে ভারতীয়ত্বের (Indianness) ভাবনা ঔপনিবেশিক কৰ্তৃত্ববাদী ভাষ্য (Colonial Hegemonistic Narrative)-কে কার্যত চ্যালেঞ্জ জানিয়ে একটি বিকল্প ভাষ্যের (Counter Narrative) সন্ধান করা হয়। এর ফলে স্বদেশি যুগে ভারতীয়দের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন (Economic Empowerment)-এর সঙ্গে রাজনৈতিক স্বাধীনতা (Political Independence)-র বিষয়টি সমান গুরুত্ব পায়।

ভারতের জাতীয়তাবাদী চেতনার উন্মেষ ও বিকাশের কারণ।

ইংরেজ শাসনের অর্থনৈতিক শোষণ এবং তার আনুষঙ্গিক নেতিবাচক প্রতিফলনের বিশদ বিশ্লেষণের দ্বারা ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ক্ষুরণ ঘটে। এই অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদ (Economic Nationalism)-এর মূল প্রবক্তা ছিলেন যথাক্রমে দাদাভাই নওরোজি (Dadabhai Naoroji), রমেশচন্দ্র দত্ত (Ramesh Chander Dutt / R C Dutt), বিচারপতি মহাদেব গোবিন্দ রাণাডে (Justic Mahadev Govind Ranade) এবং গোপাল কৃষ্ণ গোখলে (Gopal Krishna Gokhale)।

দাদাভাই নওরোজি তাঁর গ্রন্থ Poverty and Un British Rule in India (1901) তে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শোষণের বাস্তব ও কদাকার রূপটি তুলে ধরেছেন। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী : The romance is the beneficience of British rule; the reality is the bleeding of the British rule.

রমেশচন্দ্র দত্ত ছিলেন একজন অবসরপ্রাপ্ত উচ্চপদস্থ সরকারি আধিকারিক। তাঁর প্রশ্ন ‘Economic History of India in the Victorian Age (1837-1900) ভারতবর্ষে ইংরেজ ঔপনিবেশিক শাসনের এক জীবন্ত দলিল। দু-খণ্ডে লেখা এই গ্রন্থে ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে ভারতবর্ষে ইংরেজদের অর্থনৈতিক কার্যকলাপের সারগর্ভ বিবরণ পাওয়া যায়। রমেশচন্দ্র ভারতবর্ষের প্রেক্ষিতে কৃষির উন্নতি ও সেচ ব্যবস্থার সম্প্রসারণের ওপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করেছেন।

বিচারপতি মহাদেব গোবিন্দ রাণাডে তাঁর ব্যক্তিত্ব ও পাণ্ডিত্যের কারণে Prince of Bombay Graduates নামে পরিচিত ছিলেন। তাঁর প্রখ্যাত রচনা হল ‘Essays of Indian Economics (1898)। রাগাতে জার্মান অর্থনীতিবিদ ফ্রেডরিখ লিস্ট (Friedrich List)-র এর গুণগ্রাহী ছিলেন এবং জার্মানির অর্থনৈতিক ও ঐতিহাসিক দর্শন তাঁর মনে গভীর রেখাপাত করেছিল। রাণাড়ে ভারতে দারিদ্র্য দূরীকরণের উদ্দেশ্যে কৃষি ও শিল্পের বিকাশে রাষ্ট্রের ভূমিকার প্রবল সমর্থক ছিলেন। এ ছাড়া শিক্ষার প্রসার, অতিরিক্ত কর ভার হ্রাস, জাতীয় ঋণ (National Credit) প্রকল্প ইত্যাদি গঠনমূলক কার্যকলাপের দ্বারা দেশের অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবনের রূপরেখা প্রস্তুত করেন। রাগাতে সর্বস্তরে ভারতীয়দের অর্থনৈতিক উন্নতির ওপর জোর দেন।

গোপাল কৃষ্ণ গোখলে ছিলেন কেন্দ্রীয় আইনসভার সদস্য, তীক্ষ্ণ জ্ঞানসম্পন্ন, প্রখর বিশ্লেষক ও সুবত্বা। আইনসভার সদস্য হওয়ার সুবাদে তিনি ভারতবাসীর ওপর অর্থনৈতিক শোষণ ও দরিদ্রদের প্রতি সদস্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। বাজেট বিতর্কে তাঁর চুলচেরা বিশ্লেষণ ইংরেজ প্রতিনিধিদের অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তিনি ব্রিটিশ সরকার প্রদত্ত বিভিন্ন সামরিক অভিযান এবং তার বিপুল ব্যয়ভারের নিন্দা করেন। এক্ষেত্রে প্রামাণ্য দলিল হিসেবে গোখলে সরকারি নথির সদব্যবহার করেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top