মাটিতে যাঁদের ঠেকে না চরণ মাটির মালিক তাঁরাই হন।
ভাবসম্প্রসারণ: মাটিতে যাঁদের ঠেকে না চরণ মাটির মালিক তাঁরাই হন।
আমাদের সমাজে আমরা দেখে দেখে অভ্যস্ত যে, যাঁরা খাটে, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কঠোর পরিশ্রম ক’রে পণ্য উৎপাদন করে, সেই পণ্যের মালিক সে নয়। পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রেও তার নয়। ক্ষমতাবান বুদ্ধিমান, চালাক মানুষ চালাকির সাহায্যে, ক্ষমতার সাহায্যে দুর্বল মানুষকে শোষণ পীড়ন ক’রে নিজেদের সম্পদ ক্রমশই বাড়িয়ে তোলে; যত বাড়াতে পারবে, যত বড়লোক হিসেবে গণ্য হতে পারেন, তত তাঁদের মান বাড়ে, আধিপত্য বাড়ে। কোন কাজ না করলেও তাঁরাই হন সবকিছুর মালিক।
জমিদারি আমলে জমিদাররা কখনো জমিতে চাষ করতে যেতেন না, জমির বা উৎপাদনের কোনো কাজই তাঁরা জানতেন না, তবু জমির মালিক হতেন তাঁরা, উৎপন্ন ফসলের মালিকও হতেন তাঁরাই। আর যারা রোদে পুড়ে, জলে ভিজে, কাদা-মাটি মেখে ফসল ফলাত, সেই ফসলে তাদের কোনও অধিকার থাকত না। কল-কারখানাতে দেখা যায়, যারা কঠোর পরিশ্রম করে পণ্য উৎপাদন করে, সেই পণ্যে শ্রমিকের কোনো অধিকার থাকে না, অধিকার কারখানার মালিকের। তিনি কখনো উৎপাদনের কাজে হাত লাগান না। হয়তো উৎপাদনের কোনো কাজই তাঁর জানাও নেই। এইটাই আমাদের সমাজ ব্যবস্থার পরিহাস।
অকর্মা মানুষ কোনও কারণে মালিক হবার সুবাদে ভোগ বিলাসিতা করে, আর কর্মী মানুষ কঠোর পরিশ্রম সত্ত্বেও স্বচ্ছল জীবন-যাপনের সুযোগ পায় না, তাদের দারিদ্র্য ঘোচে না। কষ্টের শেষ হয় না।