তেলা মাথায় তেল দেওয়া মনুষ্য জাতির রোগ।ভাবসম্প্রসারণ।
ভাবসম্প্রসারণ: তেলা মাথায় তেল দেওয়া মনুষ্য জাতির রোগ।
সমাজের মানুষকে সুখে থাকতে গেলে, ভালো থাকতে গেলে, নিশ্চিত ও নিরুদ্বেগ জীবন যাপন করতে গেলে সকলকে পরস্পরের সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে হয়। পরস্পরের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হয়। পরস্পরকে আপনার জন জানলে, আপদে বিপদে পাশে পেলে বাঁচাটা অনেক আনন্দের হয়। কিন্তু মানব সমাজে এমনটা আমরা সর্বত্র দেখতে পাই না।
বিপন্ন মানুষের পাশে এসে হাত বাড়িয়ে দিতে দেখা যায় খুব কম মানুষকেই। সামাজিক মানুষ হ’লেও কিছু মানুষ বিপন্ন মানুষকে সাহায্য করবার আগে ভেবে নেয়, এতে তার প্রাপ্তি কী? লোকসানের সম্ভাবনা থাকলে অনেকেই বিপন্নকে দেখেও দেখে না; আবার কোনো দিক থেকে লাভের সম্ভবনা থাকলে আগ বাড়িয়েও ছুটে যায় সাহায্য করতে।
তেলা মাথায় তেল দিতে তেলের তেমন প্রয়োজন হয় না। সামান্য লাগালেই সেটা অপরের চোখে পড়ে, উপকারী হিসেবে নাম কেনা যায়; পরে প্রতিদান, বখশিশ বা পুরস্কার হিসেবে কিছু পাবার সম্ভবনা থাকে। এই জন্যই বড়লোক, ক্ষমতাবান, পদাধিকারী মানুষের তুচ্ছ অসুবিধা দূর করতে কতলোক ছুটে আসে; অথচ একজন দীন-দরিদ্র-ভিখারী বড়সড় কোনো বিপদে পড়লেও মানুষ মানবতার কারণেও সাহায্য করতে আগ্রহ দেখায় না। এই জন্যই আগে জমিদার-মহাজনদের চাটুকারের অভাব হত না; এখন ক্ষমতাবান, নেতা গোছের মানুষের অনুগামীর অভাব হয় না। যে নেতাদের দরিদ্রের অসময়ে পাশে গিয়ে দাঁড়ানো উচিত, তাঁরাও ভোটের প্রয়োজন ছাড়া গরীবের ধারে-কাছে ঘেঁসেন না।