StudyMamu

Site is under construction some pages not work properly. Please bear with us.

আর্যদের আদি বাসভূমি সম্পর্কে যা জানো লেখ

আর্যদের আদি বাসভূমি সম্পর্কে যা জানো লেখ

সনাতনপন্থী ভারতীয় পণ্ডিতরা বহুকাল আগে থেকেই এই মতবাদের পক্ষে মত প্রকাশ করে আসছিলেন। গত চার দশক ধরে এই মতকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য এই মতবাদের অনুগামীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। মূলত পুরাণের ওপর নির্ভর করে পার্জিটারই প্রথম মন্তব্য করেছিলেন, আর্যদের আদি বাসভূমি হল ভারত। আর্যগণ কর্তৃক ভারত আক্রমণের কোনো ইঙ্গিত পুরাণে নেই। বরং পুরাণের ভিত্তিতে অনুমিত হয় যে আর্যরা উত্তর-পশ্চিম দিক দিয়ে ভারতের বাইরে গিয়েছিলেন। 

পার্জিটারের এই মত পরবর্তীকালে সনাতনপন্থী কিছু ঐতিহাসিকদের দ্বারা সমর্থিত হয়। এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন মহামহোপাধ্যায় গঙ্গানাথ ঝা, ডি. এস. ত্রিবেদী, এল. ডি. কল্প, শ্রীকণ্ঠ শাস্ত্রী এবং সর্বোপরি স্বামী বিবেকানন্দ প্রমুখ। গঙ্গানাথ ঝা আর্যদের বাসস্থান নির্দিষ্ট করেছিলেন উত্তর-পশ্চিমাংশের ব্রহ্মর্ষি দেশে। উল্লেখ যে, ভারতে নির্দিষ্টভাবে আদিমতম আর্য বসতি প্রমাণের এটাই ছিল সূচনা।

আর্যদের আদি বাসভূমি

ডি. এস. ত্রিবেদী মূলতানের দেবিকা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে আর্যদের আদি বাসস্থান ছিল বলে মত প্রকাশ করেন। এল. ডি. কল্প এই মত দেন যে, কাশ্মীর ও হিমালয় সংলগ্ন অঞ্চল ছিল তাদের আদি বাসভূমি। শ্রীকণ্ঠ শাস্ত্রী ঋগ্বেদের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে এই সিদ্ধান্তে এলেন যে আর্যদের প্রাচীনতম গ্রন্থ ঋগ্বেদের ভৌগোলিক ধারণা অবিভক্ত পাঞ্জাবের সন্নিকটবর্তী অঞ্চলগুলির মধ্যে সীমিত। যেহেতু ঐ নির্দিষ্ট সীমার বাইরের জগৎ ঋগ্বেদের মধ্যে প্রতিফলিত হয়নি, সেহেতু আর্যরা বাইরে থেকে ভারতে এসেছিলেন, এ ধারণা মোটেই যুক্তিযুক্ত নয়। স্বামী বিবেকানন্দ আর্যদের আদি বাসস্থানের ভারতীয় তত্ত্বের একজন একনিষ্ঠ অনুরাগী। ইওরোপীয় পণ্ডিতদের ভারতের বাইরে আর্যদের আদি বাসস্থান তত্ত্বের তিনি তীব্র বিরোধী। তাঁর তত্ত্ব প্রধানত বেদ নির্ভর।

বৈদিক আর্যরা যে বাইরে থেকে এদেশে এসেছিল সে- ব্যাপারে কোনো যুক্তিগ্রাহ্য তথ্য নেই। সাধারণভাবে দেখা যায় কোনো যাযাবর জাতি যদি এক দেশ থেকে অন্য দেশে স্থায়ীভাবে চলে আসে তাহলে তারা তাদের সেই ফেলে আসা বাসভূমির দিকে বারে বারে ফিরে তাকায়। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সংশ্লিষ্ট জাতির আদি বাসস্থান তাদের হাতছানি দেয়।

পশু ও শস্যের উল্লেখ ও অনুল্লেখের সূত্র ধরে আর্যদের আদি বাসভূমি সম্পর্কে ভারতের দাবির পক্ষে ও বিপক্ষের ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টি হয়েছে। উভয়পক্ষের ঐতিহাসিকগণ নিজ নিজ মত প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ঋগ্বেদে কয়েকটি পশু ও শস্যের উল্লেখ থাকা ও না থাকার বিষয়টির ওপর আলোকপাত করেছেন। বিপক্ষের ঐতিহাসিকদের বক্তব্য হল ঋগ্বেদে গুরুত্বপূর্ণ পশু বাঘের উল্লেখ নেই। পরিবর্তে ঐ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করা হয়েছে সিংহকে। এছাড়া, হাতিকে ঋগ্বেদে ‘মৃগহস্তিন’ বলে অভিহিত করা হয়েছে; যা থেকে মনে হয়, এই পশুটি সম্পর্কে আর্যদের অভিজ্ঞতা নতুন। যদি আর্যরা প্রকৃতই এদেশের আদি বাসিন্দা হত তাহলে হাতি সম্পর্কে তাদের এই নতুন অভিজ্ঞতার অবকাশ থাকত না। যাঁরা আর্যদের আদি বাসভূমি হিসাবে ভারতকে চিহ্নিত করতে চান তাঁদের বক্তব্যও বেশ যুক্তিপূর্ণ।

আর্যদের আদি বাসভূমি সম্পর্কে যাঁরা ভারতের দাবির পক্ষে তাঁরা ঋগ্বেদে  উল্লিখিত ভৌগোলিক তথ্যের ওপর দৃষ্টি নিবন্ধ করে এ বিষয়ে একটি নতুন যুক্তি উত্থাপনের চেষ্টা করেছেন। ঋগ্বেদের ভৌগোলিক বিবরণ থেকে স্পষ্টতই বোঝা যায় যে, যাঁরা এই গ্রন্থের স্তবগান বা স্তোত্র রচনা করেছিলেন তাঁরা সকলেই ছিলেন পাঞ্জাব ও এর সংলগ্ন অঞ্চলের বাসিন্দা। তাই এঁরা এই সিদ্ধান্তে এসেছেন যে ঋগ্বেদ রচয়িতারা অথবা তাঁদের পূর্বপুরুষেরা অন্য কোনো দেশের বাসিন্দা ছিলেন না। 

শচীন্দ্রকুমার মাইতি লিখেছেন যে, আগে ধারণা ছিল আর্য সভ্যতার উদ্ভব ইওরোপে। সেখান থেকে এশিয়া মাইনর বা মেসোপোটেমিয়া হয়ে শেষপর্যন্ত মহেঞ্জোদারোর নগর সভ্যতাকে ধ্বংস করে বহিরাক্রমণকারী আর্যরা ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিল। তিনি আরো বলেছেন যে, সেইসময় পুরাতাত্ত্বিক খননকার্য কমই হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে পুরাতাত্ত্বিক খননকার্য এবং এ ব্যাপারে গবেষণার যতই অগ্রগতি ঘটছে আর্যদের ভারতীয়ত্ব সম্পর্কে অভিমত ততই প্রবল ও অকাট্য হয়ে উঠেছে।

লিথুয়ানীয় ভাষার প্রাচীনত্বের সূত্র ধরে লিথুয়ানিয়াকে আর্যদের আদি বাসস্থান হিসাবে প্রতিপন্ন করার চেষ্টা নেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য যে, ইওরোপে ইন্দো-ইওরোপীয় ভাষাসমূহের মধ্যে লিথুয়ানীয় ভাষাই হল সবচেয়ে প্রাচীন। এরকম বলা হয় যে, আজকের দিনেও যে সমস্ত ইন্দো-ইওরোপীয় ভাষা জীবন্ত রয়েছে তার মধ্যে লিথুয়ানীয়ই হল নিকটতম। বস্তুত কেবল এই লিথুয়ানীয়ই এখন ইন্দো-ইওরোপীয় ভাষার মৌলিক বৈশিষ্ট্যের কাছাকাছি অবস্থান করছে। এমনকি সংস্কৃত ভাষার সজীবতা সত্ত্বেও একে এই পর্বের অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। সুতরাং ভাষাতাত্ত্বিক বিচারে লিথুয়ানীয় যে ইন্দো- ইওরোপীয় ভাষাগুলির অন্যতম তা আজও বিদ্যমান। তাই রাশিয়ার নিকটবর্তী লিথুয়ানিয়াকে আর্য ভাষাভাষীদের আদি বাসস্থান বলে চিহ্নিত করার ন্যায়সংগত কারণ আছে।

প্রখ্যাত বহু ইওরোপীয় পণ্ডিত জার্মানিকে আর্যদের আদি বাসস্থান বলে মনে করেন। জার্মান পণ্ডিতমহলের একাংশ মধ্য জার্মানিতে প্রাপ্ত প্রাগৈতিহাসিক যুগের মাটির জিনিসপত্রের ওপর জ্যামিতিক প্রয়োগ ঘটিয়ে ঐ অঞ্চলকে ইন্দো-ইওরোপীয়দের আদি বাসভূমি বলে প্রতিপন্ন করতে চেয়েছেন। কিন্তু এই মতও গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ, দক্ষিণ রাশিয়া, পোল্যান্ড ও ত্রিপোলজী (উকরাইন)-তে প্রাগৈতিহাসিক যুগের যে সমস্ত মৃৎপাত্র পাওয়া গেছে সেগুলি জার্মানির ঐ ধরনের মৃৎপাত্রের তুলনায় অনেক বেশি পুরোনো। সুতরাং মৃৎপাত্রের তুলনামূলক আলোচনার ভিত্তিতে জার্মানিকে আর্যদের আদি বাসভূমি বলে চিহ্নিত করার যে চেষ্টা নেওয়া হয়েছে তা ইতিবাচক নয়। জার্মানি যে আর্যদের আদি বাসভূমি ছিল না তা সমর্থন করেছেন এফ. আর. অডার। তাঁর মতে, পশ্চিম ইওরোপেই সর্বশেষে আর্যীকরণ ঘটেছিল।

পুরাতত্ত্বের ভিত্তিতে আর্যদের আদি বাসভূমি নির্ণয়ের চেষ্টা মেনে নেননি বেশিরভাগ পণ্ডিত। এমনকি ইওরোপের উত্তর বা পশ্চিমাংশে ইন্দো-ইওরোপীয় বা আর্যদের আদি বাসস্থান ছিল না বলে তাঁরা মনে করেন। ভাষাগত নানা পদ্ধতি অবলম্বন করে ও অন্যান্যভাবে ইওরোপের অন্যত্র প্রধানত তৃণভূমি-সংলগ্ন অঞ্চলে এদের উৎপত্তিস্থল খোঁজার প্রয়াসী হয়েছেন বেশিরভাগ ঐতিহাসিক। অধ্যাপক ম্যাকডোনেল দক্ষিণ-পূর্ব ইওরোপকে আর্যদের আদি বাসভূমি বলে মনে করেন। 

ভারতের প্রাচীনতম গ্রন্থ ঋগ্বেদ এবং পারস্যের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ ‘জেন্দ আবেস্তা’র ভিত্তিতে তিনি অনুরূপ সিদ্ধান্তে এসেছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে যে ঐ গ্রন্থ দুটিতে প্রারম্ভিক পর্বে যে সমস্ত গাছপালা ও জীবজন্তুর সঙ্গে আর্যদের পরিচিতির কথা বলা হয়েছে, তৎকালীন দক্ষিণ-পূর্ব ইওরোপে ঠিক সেই সমস্ত গাছপালা ও জীবজন্তুর উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। গাছপালার মধ্যে ওক, বীচ, ও গুল্ম জাতীয় গাছ এবং জীবজন্তুর মধ্যে ঘোড়া ও গোরু উভয় ক্ষেত্রেই পরিচিত ছিল। তবে দক্ষিণ-পূর্ব ইওরোপের ঠিক কোন্ অঞ্চলে আর্যরা বাস করত তার নির্দেশ দেননি ম্যাকডোনেল। ত্রিপোলজী সংস্কৃতির সূত্র ধরে অধ্যাপক নেরিং (Nehring) ইন্দো-ইওরোপীয়দের আদি বাসভূমি নির্ণয়ের চেষ্টা করেছেন। 

নেরিং এর মতে, ত্রিপোলজী সংস্কৃতিই হল ইন্দো- ইওরোপীয়দের আদি সংস্কৃতি। ত্রিপোলজী মৃৎপাত্রের প্রাচীনত্বের ভিত্তিতে খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় সহস্রাব্দে এই সংস্কৃতির অস্তিত্ব তিনি খুঁজে পেয়েছেন। এর ভিত্তিতে শেষপর্যন্ত তিনি এই সিদ্ধান্তে এসেছেন যে দক্ষিণ রাশিয়া ও তার পশ্চিমদিকে বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চল ইন্দো-ইওরোপীয়দের আদি বাসস্থান ছিল।

সুতরাং নেরিং কর্তৃক উত্থাপিত তত্ত্ব থেকে বোঝা যায় যে ইন্দো-ইওরোপীয়দের আদি বাসভূমিকে তিনি বহুদূর বিস্তৃত করেছেন। আপাতদৃষ্টিতে এই মত গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত না হলেও আধুনিককালে তুলনামূলক ভাষাতত্ত্বের ভিত্তিতে দেখাবার চেষ্টা করা হয়েছে যে দীর্ঘকাল একটা নির্দিষ্ট সংকীর্ণ এলাকার মধ্যে ইন্দো-ইওরোপীয়দের বসবাস যুক্তিযুক্ত নয়। অপরদিকে ও. অডার ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ ও বিংশ শতাব্দীর গোড়ায় ভাষাতাত্ত্বিক ফসিলবিদ্যার সাহায্যে (পূর্বতন) সোভিয়েত রাশিয়ার দক্ষিণাংশের তৃণভূমি অঞ্চলকে আদি ইন্দো- ইওরোপীয়দের বাসভূমি বলে চিহ্নিত করেছেন।

ইন্দো-ইওরোপীয়দের আদি বাসস্থান নির্ণয়ে ডব্লিউ. ব্রান্ডেনস্টাইনের মতবাদ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে শব্দার্থবিদ্যার বিবর্তন (Semasiological evolution)-এর মাধ্যমে গবেষণা চালিয়ে তিনি যে সিদ্ধান্তে এসেছেন আধুনিক পণ্ডিতদের বেশিরভাগই তা স্বীকার করে থাকেন। শব্দার্থবিদ্যার প্রয়োগ ঘটিয়ে ব্রান্ডেনস্টাইন একেবারে গোড়া থেকে ইন্দো-ইওরোপীয়দের সাংস্কৃতিক অগ্রগতি বোঝার চেষ্টা করেছেন। তিনি দেখিয়েছেন যে ইন্দো-ইরানীয় ভাষাগোষ্ঠী হল আদি ইন্দো-ইওরোপীয় ভাষাগোষ্ঠী। এই ইন্দো-ইরানীয় ভাষাগোষ্ঠীই প্রথম ইন্দো-ইওরোপীয় ভাষাগোষ্ঠী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিল।

এইভাবে ব্রান্ডেনস্টাইন ইন্দো-ইওরোপীয় ভাষাগোষ্ঠীকে আদি ও পরবর্তী এই দুটি ভাগে ভাগ করেছেন। সময়ের ব্যবধানে বিভক্ত এই দু’ধরনের শব্দাবলীতে ভিন্ন প্রকৃতির জমি, জীবজন্তু ও গাছপালার পরিচয় পাওয়া যায়। তাঁর মতে, আদি ইন্দো-ইওরোপীয় শব্দাবলীতে কোনো পাহাড়ের নিকটবর্তী শুষ্ক তৃণভূমি অঞ্চলে আর্যদের সর্বপ্রথম বাসস্থানের ইঙ্গিত পাওয়া যায়। শব্দার্থবিদ্যার সাহায্যে তিনি শেষপর্যন্ত এই সিদ্ধান্তে এসেছেন যে আদিপর্বের ইন্দো-ইওরোপীয়দের প্রাচীন বাসভূমি ছিল উরাল পর্বতশ্রেণীর দক্ষিণস্থ কিরঘিজ তেপি অঞ্চলে। তাঁর মতে, কিরঘিজ স্তেপি ছাড়া অন্য কোনো অঞ্চলকে অবিভক্ত ইন্দো-ইওরোপীয়দের আদি বাসস্থান রূপে চিহ্নিত করা যেতে পারে না।

ইন্দো-ইওরোপীয় ভাষাভাষী মানুষের প্রিয় পশু ঘোড়া ও ভাষাগত বিষয়ের ওপর নির্ভর করে অতি সাম্প্রতিককালে ব্রতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় একটু অন্য রকম সিদ্ধান্তে এসেছেন। তাঁর মতে, ইন্দো-ইওরোপীয় ভাষাভাষীদের একান্ত প্রয়োজনীয় পশু ঘোড়ার লালনপালনের জন্য উপযুক্ত তৃণ ও তৎসংলগ্ন অঞ্চলে তাদের আদি বাসস্থান হওয়া উচিত। ঠিক কোন্ তৃণভূমি সে-ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা না গেলেও তা ইউরেশিয়াতে হওয়া সম্ভব বলে তার মনে হয়েছে। কারণ এই ভূখণ্ডেই ইন্দো- ইওরোপীয় ভাষাসমূহের প্রাথমিক স্তরের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়।

তিনি দেখিয়েছেন যে প্রথম স্তরের ভাষাগুলিতে ‘ট’ বর্গের অক্ষরের এবং ‘ন’ বর্ণগুলির শব্দের কোনো চিহ্ন নেই। কিন্তু সংস্কৃত ও দ্রাবিড় ভাষারাজিতে এগুলির যথেষ্ট উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। ভারতীয় আর্য ভাষা বাইরে থেকে এদেশে আসার ফলেই হয়তো ঐ বৈশিষ্ট্য দ্রাবিড় ভাষাভাষীদের সংস্পর্শে সংস্কৃতে এসে পড়েছে। সুতরাং একথা নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে ভাষাগুলির মধ্যে একটা নিবিড় সম্পর্ক ছিল। এই সম্পর্কের ভিত্তিতে মনে করা অসংগত হবে না যে, কোনো এক সময়ে এই ভাষাগুলির জননী আদি ইন্দো-ইওরোপীয় ভাষা ইউরেশিয়ার কোনো এক ভূখণ্ডে ব্যবহৃত হত।

আরো পড়ুন: আর্যদের আদি বাসস্থান সম্পর্কে বিতর্ক আলোচনা করো 

মূল্যায়ন 

উপরিউক্ত পণ্ডিতরা আর্যদের আদি বাসস্থান হিসাবে ভারতকে চিহ্নিত করার জন্য যে সমস্ত তথ্যের অবতারণা করেছেন সেগুলিকে একেবারে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেওয়া যথোচিত হবে না। তবে একটা কথা ঠিক যে তাঁরা এমন কোনো যুক্তি দিতে পারেননি, যার ওপর নির্ভর করে নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, আর্যরা বাইরে থেকে ভারতে আসেননি এবং ভারতই ছিল তাঁদের আদি বাসভূমি। বরং যাঁরা আর্যদের আদি বাসভূমি হিসাবে বহির্ভারতের প্রতি অঙ্গুলিনির্দেশ করেছেন তাঁদের বক্তব্য অনেক বেশি যুক্তিনিষ্ঠ। যে সমস্ত প্রথিতযশা পণ্ডিত এই মতবাদের একনিষ্ঠ সমর্থক তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন নেরিং, ব্রান্ডেনস্টাইন, ও. অডার, পি. গাইলস, এ. এল. ব্যাশাম, ডি. ডি. কোসাম্বী ও অন্যান্য আধুনিক বহু পণ্ডিত।

FAQ (Frequently Asked Questions)

{Click to plus icon}

আর্যরা কোন দেশ থেকে এসেছিল

আর্যরা সম্ভবত ইরান দেশ থেকে এসেছিল।

আর্যদের আদি বাসভূমি কোথায় ছিল

আর্যদের আদি বাসভূমি কোথায় ছিল বিষয়টি বিতর্কিত তবে, বেশিরভাগ ঐতিহাসিকদের অভিমত- আর্যদের উৎপত্তি ভারতবর্ষের বাইরে। সম্ভবত কিরঘিজস্থানের স্তেপ অঞ্চলে আর্যদের আদি বাসভূমি ছিল।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top