StudyMamu

Site is under construction some pages not work properly. Please bear with us.

ঔপনিবেশিক ভারতবর্ষে মধ্যবিত্ত শ্রেণি বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে। তাদের ভূমিকা কী ছিল

ঔপনিবেশিক ভারতবর্ষে মধ্যবিত্ত শ্রেণি বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে? তাদের ভূমিকা কী ছিল? 

ঔপনিবেশিক ভারতবর্ষে মধ্যবিত্ত শ্রেণি বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে।

ভারতবর্ষের প্রেক্ষাপটে ইংরেজ সরকারি কর্মচারি, সামরিক ও অসামরিক প্রতিষ্ঠানের সদস্যবৃন্দ, প্রাচ্য বিশেষজ্ঞ (Orientalists), পর্যটক প্রমুখ অনুরূপ ধারণা পোষণ করতেন। সপ্তদশ শতকের শেষে ও অষ্টাদশ শতকের মাঝামাঝি সময় ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতের নির্দিষ্ট কিছু উপকূলবর্তী অঞ্চলে তাঁদের বাণিজ্যিক বসতি (Commercial Settlement) স্থাপন করে।

মধ্যবিত্ত শ্রেণি

পরবর্তী পর্যায়ে রাজনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এগুলি দুর্গের আকারে ( Fortification) সুরক্ষিত করা হয়। এই স্থায়ী বসতিগুলি (Settlement) হল যথাক্রমে কলকাতা (Fort William), বোম্বে/মুম্বাই (Fort St.. George) এবং মাদ্রাজ ( Fort St. David)। কালক্রমে এগুলি প্রেসিডেন্সি টাউন (Presidency Town) হিসেবে পরিগণিত হয়। প্রেসিডেন্সিগুলি ঔপনিবেশিক ব্যবস্থার প্রাণকেন্দ্র ছিল। এখানে ইউরোপীয় সংস্কৃতির প্রভাব ছিল স্পষ্ট। যদিও Black Town এবং White Town-এর মধ্যে বিস্তর ব্যবধান ছিল, তথাপি সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা-সংক্রান্ত আদানপ্রদানের ক্ষেত্রগুলি বিদ্যমান ছিল।

কলকাতা শহরকে কেন্দ্র করে একটি ইন্দো-ইউরোপীয় সংস্কৃতির ক্রমবিকাশ ঘটে। ঔপনিবেশিক বাণিজ্য ও ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থার উদ্ভাবনের সঙ্গে একটি নতুন মধ্যস্থতাকারী শ্রেণির জন্ম হয় যারা পরবর্তীকালে মধ্যবিত্ত (Middle class ) সম্প্রদায় হিসেবে অভিহিত হন।

মধ্যবিত্ত শ্রেণির ভূমিকাঃ

মধ্যবিত্ত (Middle class ) সম্প্রদায় ইংরেজি ভাষা রপ্ত করেন এবং পাশ্চাত্য শিক্ষার দ্বারা আলোকপ্রাপ্ত হন। ঔপনিবেশিক ভারতবর্ষে মধ্যবিত্ত শ্রেণি ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ।এরাই পরবর্তী পর্যায়ে বিভিন্ন বৃত্তিমূলক পেশায় নিযুক্ত হন এবং প্রগতিশীল চেতনার ধারক ও বাহক (Purveyors of Progressive Thoughts) হিসেবে উঠে আসেন। ইংরেজজনিত তাচ্ছিল্য “বাবু” গোষ্ঠীর এই মানুষজন বাংলা তথা ভারতবর্ষের নবজাগরণের ক্ষেত্রে বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করেন। রামমোহন রায়, শিবনাথ শাস্ত্রী, পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, আনন্দমোহন বোস, স্বামী বিবেকানন্দ প্রমুখ এই নবজাগরণের পথিকৃৎ ছিলেন।

শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব তাঁর সরল অনাড়ম্বর জীবনযাপন ও তীক্ষ্ণ অন্তদৃষ্টির দ্বারা সামাজিক ও ধর্মীয় ভেদাভেদ অতিক্রম করেন এবং পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত উচ্চবর্গীয় মানুষজনের সঙ্গে আপামর জনসাধারণের মেলবন্ধন ঘটানোর প্রয়াস করেন। এর ফলে বাঙালি সমাজে একটি Spiritual Renaissance সংঘটিত হয় যা ভোগসর্বস্ব পাশ্চাত্য মূল্যবোধকে চ্যালেঞ্জ করে।

ঔপনিবেশিক শোষণে অতিষ্ঠ মানুষকে বেঁচে থাকার রসদ সরবরাহ করে। 1850-এর দশকে ভারতবর্ষে রেলপথ, টেলিগ্রাফ ইত্যাদি স্থাপনের প্রক্রিয়া আরম্ভ হয়। এর মাধ্যমে উপমহাদেশে যোগাযোগের ব্যবস্থা উন্নত হয়। দেশের এক প্রান্তের মানুষ অনায়াসে অন্য প্রান্তে যাতায়াত করতে সক্ষম হয়। এই দশকে গঙ্গায় বাষ্পচালিত পোত (Steamer) দেখতে পাওয়া যায়। এর উল্লেখ তৎকালীন লোকসংগীতে পাওয়া যায়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top