নারী উন্নয়নে NGO এর ভূমিকা
Q – নারী উন্নয়নে এনজিও ভূমিকা অথবা, নারীর ক্ষমতায়নে এনজিওর ভূমিকা।
সমগ্র বিশ্ব জুড়ে নারী উন্নয়নে প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে বেশ কিছু ‘NGO’ (Non-Government Organizations)। বিশ্বব্যাঙ্ককৃত বিভাজন অনুসারে ‘NGO’গুলিকে মূলত দুই ভাগে ভাগ করা হয়–
- Operational NGO বা কোন কর্মকান্ডের সঙ্গে যুক্ত সংগঠন ।
- Advocay NGO অর্থাৎ যে সংগঠনগুলি সরকারী কোন কাজের বা নীতির বিরুদ্ধে বা কোনো বিশেষ বিষয়ের পক্ষে প্রচারমূলক কাজ করে থাকে।
![]() |
নারীর উন্নয়নে এনজিও (NGO) এর ভূমিকা |
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা হিসাবে পরিচিত এনজিও (NGO) বেসরকারী সংগঠনগুলি কার্যত সরকার দ্বারা পরিচালিত হয় না। শিশুদের অধিকার রক্ষা, নারীদের অধিকার রক্ষা, পরিবেশ রক্ষা,মহামারি, বন্যারাণ, দুর্ভিক্ষ ইত্যাদি নানান বিপর্যয় কবলিত মানুসকে সাহায্য করা, তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, ইত্যাদি নানান মানবিক কাজের মধ্যে দিয়ে ‘NGO’ গুলি সামাজিক বা গোষ্ঠীজীবনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
নারী উন্নয়নে কর্মরত বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বা ‘NGO’ এর ভূমিকা নিম্নে উল্লেখ করা হলো –
Snehalaya
১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে মহারাষ্ট্রের আহমেদনগরে এর প্রতিষ্ঠা। দরিদ্র নারী ও শিশুদের জন্য এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি কাজ করে। এছাড়াও সমকামী, পেশাদারী যৌনকর্মী, এইডস রোগাক্রান্তদের জন্যও এই সংস্থা নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। স্যানিটারি প্যাড উৎপাদন করে তা নারীদের মধ্যে বিলি করা, নারীদের শিল্পদ্রব্য নির্মাণ ও তা বিক্রী করার জন্য বিপনি বা স্থানের ব্যবস্থা করা এবং নারীদের গুরুত্বপূর্ণ ভাষা শিক্ষা দান করা এই সংগঠনটির উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ।
North East Network (NEN )
১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দে আয়োজিত Beijing World Conference on Women’ এর আলোচনার ফলে এই সংস্থাটি স্থাপিত হয়। মানব অধিকারকে সম্মান ও স্বীকৃতি দিয়ে লিঙ্গ বৈষম্য দূর করা এবং নারীদের আইনী অধুইকারগুলিকে সুরক্ষিত করা এই সংস্থার অন্যতম লক্ষ্য। আসাম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড সহ উত্তর পূর্ব ভারতে সক্রিয় এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি সংঘাতপূর্ণ এলাকায় নারীদের সুরক্ষা বিধান এবং নারীদের উন্নয়নের জন্য যথেষ্ট বাজেটে যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করার জন্য সদর্থক ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে।
Mahlila Kissan Adhikar Manch (Makam)
নাম থেকে স্পষ্ট যে এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি মহিলা কৃষকদের – অধিকার রক্ষায় ব্রতী, বিশেষভাবে ভূমিহীন নারী কৃষকদের অধিকার রক্ষায়।। ভারতের ২৪টি অঙ্গরাজ্যে এই ‘ NGO’ টির প্রসার। এর লক্ষ্য নারীদের জন্য জমির মতো জীবনধারণের উপাদানের উপর মালিকানা স্থাপন করে তাদেরকে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে স্বাবলম্বী করে তোলা।
Janodaya
১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি নারীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতিকল্পে সদা সক্রিয়। বিশেষভাবে প্রাক্তন বন্দি নারী, ও নিরবলম্ব নারীদের নানারকম উৎপাদনমূলক বা বৃত্তিমূলক কাজের প্রশিক্ষণ দিয়ে এবং তাদের জন্য আইনী সহযোগিতা প্রদান করে এই সংস্থা এক বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। এছাড়াও অত্যাচারিত ও বৈষম্যের শিকার হওয়া নারীদের অধিকারগুলি আইনগতভাবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য বেশ কিছু NGO’ ভারতে কাজ করে।
Majlis Manch
এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং তার এজেন্সি Rahat যৌথভাবে যৌন হয়রানির শিকার হওয়া নারীদের জন্য আইনী সহযোগিতা দিয়ে থাকে। এই সংস্থাটির সকল আইনজীবিই হলেন নারী, ফলে তাদের পক্ষে নির্যাতিতা নারীর সমস্যাগুলি বোঝা সহজ হয়।
Sayodhya
এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি নিপীড়ত ও নির্যাতিত নিঃসম্বল নারীদের জন্য ২৪ ঘন্টা টেলিফোন হেল্পলাইনের মাধ্যমে নানাভাবে সাহায্য করে থাকে। নির্যাতিতাদের আইনী সাহায্য দান করা, প্রয়োজনে তাদেরকে নারী সুরক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া এবং পুলিশ ও বিচারবিভাগীয় আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে নির্যাতিতাদের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা করার ক্ষেত্রে এই সংস্থার স্বেচ্ছাসেবীরা বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রেরণা, প্রজ্ঞা ট্রাস্ট, সখ্যা নারী পরামর্শদাতা কেন্দ্র’র মতো অসংখ্য স্বেচ্চাসেবী সংস্থা নারীদের অধিকার রক্ষার জন্য নিরন্তর লড়াই চালাচ্ছে।
মূল্যায়নঃ
ভারতের বাইরের NGO ও এই দেশের নারী উন্নয়নে প্রতিষ্ঠাতে সক্রিয় ও সদর্থক ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে। একটি দৃষ্টান্ত দেওয়া যেতে পারে। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদন অনুসারে যুক্তরাজ্যের Seva Trust এবং কানাডার Global Girls Power নামক দুটি এনজিও এর প্রতিষ্ঠাতার মধ্যে অন্যতম হলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত চরন কানোয়াল শেখন ও লাকি গিল – উভয়েরই শিকড় রয়েছে পাঞ্জাবের লুধিয়ানায়। লুধিয়ানা থেকে ৩১ কি মি দূরে বারুন্দি গ্রামের চারটি গরীব কিন্তু পড়াশোনায় ভালো চারটি মেয়ের (মনপ্রীত কৌর, সপনা রানি, প্রাভজোত কৌর এবং এইডস আক্রান্ত পিতা মাতার সন্তান অপর একটি মেয়ের) পঠনপাঠনের যাবতীয় দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। নারীদের অধিকার রক্ষায় ‘Non-Government Organizations’ এর ভূমিকা
যেমন গুরুত্বপূর্ণ সেইরূপ নারী উন্নয়নে এনজিওর (NGO) এর ভূমিকা নিঃসন্দেহে একটি মহৎ উদ্যোগ।
যেমন গুরুত্বপূর্ণ সেইরূপ নারী উন্নয়নে এনজিওর (NGO) এর ভূমিকা নিঃসন্দেহে একটি মহৎ উদ্যোগ।