StudyMamu

Site is under construction some pages not work properly. Please bear with us.

বৌদ্ধ ও জৈন ধর্ম উত্থানের অর্থনৈতিক কারণ

বৌদ্ধ ও জৈন ধর্ম উত্থানের অর্থনৈতিক কারণ।

ভূমিকাঃ

খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে প্রতিবাদী ধর্মগুলি বিশেষত বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মের যে উদ্ভব ঘটেছিল তার পটভূমিকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা যেতে পারে। বৈদিক ঐতিহ্যবাদী ব্রাহ্মণ্য ধর্ম ও সংস্কৃতির গোঁড়ামির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসাবে যে এই ধর্মগুলির আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল।

বৌদ্ধ ধর্মের উত্থান প্রসঙ্গে ড. রাধাকৃষ্ণন মতে, কোনো স্বতন্ত্র ধর্মমত হিসাবে বৌদ্ধ ধর্ম শুরু হয়নি। হিন্দুদের পুরোনো বিশ্বাসের একটা ফলশ্রুতি হিসাবে এবং সম্ভবত কিছুটা মতভেদ ও বিরোধিতা থেকেই এই ধর্মের অস্তিত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ব্রাহ্মণ্য ধর্মের বিরোধী ধারা হিসাবে যাত্রা শুরু করে অবশ্য শেষপর্যন্ত এই ধর্ম একটা ধর্মমত হিসাবেই জগতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আবার একথাও স্বীকার্য যে, ব্রাহ্মণ্যবাদের পাল্টা আঘাতে বৌদ্ধ ধর্ম শেষপর্যন্ত ভারত থেকে প্রায় বিদায় নিতে বাধ্য হয়েছিল।

বৌদ্ধ ও জৈন ধর্ম উত্থানের অর্থনৈতিক কারণ

তৎকালীন আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনধারার কথা বর্ণিত হয়েছে পুরাণ এবং বেশ কিছু বৌদ্ধ ও জৈন গ্রন্থে। 

বস্তুতপক্ষে, মধ্যগাঙ্গেয় উপত্যকার মানুষের অর্থনৈতিক জীবনধারার মৌলিক পরিবর্তনই বৌদ্ধ ও জৈন ধর্ম উদ্ভবকে সম্ভব ও সহজসাধ্য করেছিল। এই পরিবর্তন প্রধানত এসেছিল অর্থনীতিতে এবং স্বাভাবিকভাবেই এর সূত্র ধরে সমাজে। তবে বিভিন্ন সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তনের সঙ্গে ওপরে আলোচিত ধর্ম ও দার্শনিক চিন্তাধারার সংযোগ ছিল ঘনিষ্ঠ।

বৌদ্ধ ও জৈন ধর্ম

মধ্যগাঙ্গেয় উপত্যকায় খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে কৃষি অর্থনীতির প্রসার ও বিকাশ সেখানের জীবনযাত্রার মৌলিক পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম হয়েছিল। পরবর্তী বৈদিক যুগে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা এলাকায় পশুচারণ অর্থনীতির জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে তা মধ্যগাঙ্গেয় উপত্যকায় সম্প্রসারিত হয়। মধ্যগাঙ্গেয় উপত্যকা ঘন জঙ্গলে পরিপূর্ণ থাকায় সেখানে কৃষিজীবী সমাজ গড়ে উঠতে দীর্ঘ সময় লেগেছিল। ঘন জঙ্গল পরিষ্কার করে কৃষিযোগ্য জমি সৃষ্টির পর তা থেকে ভালো ফসল লাভের জন্য একান্ত অপরিহার্য ছিল লৌহ ও লৌহজাত অস্ত্র।

ডি. ডি. কোসাম্বী দেখিয়েছেন যে, গাঙ্গেয় উপত্যকায় পাইকারি হারে ঘন অরণ্য পরিষ্কার করা সম্ভব ছিল না লোহার ব্যবহার ব্যতিরেকে। রামশরণ শর্মা ও আধুনিক কিছু ঐতিহাসিকের গবেষণা থেকে বিষয়টি সমর্থিত হয়। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ- পঞ্চম শতাব্দীতে সংশ্লিষ্ট এলাকায় লোহার ব্যবহার যে বেড়েছিল তার প্রমাণ পাওয়া যায় প্রত্নতাত্ত্বিক ও সাহিত্যগত উপাদান থেকে। কৌশাম্বীতে ও বিহারের সোনপুরে উৎখননের ফলে এই সময়ের যথেষ্ট সংখ্যক লোহার কুঠার পাওয়া গেছে। লোহার তৈরি কাস্তেও কৌশাম্বীর প্রত্নতাত্ত্বিক উৎখনন থেকে প্রমাণিত হয়। লোহার ব্যবহারের ফলে কৃষিকার্যে তামার প্রচলন কমতে থাকে। মনে করা অস্বাভাবিক নয় যে, লোহার কুঠারের সাহায্যে জঙ্গল পরিষ্কার করে তাকে কৃষিযোগ্য জমিতে রূপান্তরিত করার প্রয়াস বড় হয়ে দেখা দেয়। কৃষিকার্যের জন্য লোহার তৈরি লাঙলের ফলার ব্যবহার শুরু হয়। বৌদ্ধ গ্রন্থাদিতে কৃষির জন্য লৌহ-নির্মিত লাঙলের ব্যবহারের ইঙ্গিত মেলে। সুত্তনিপাতের অন্তর্ভুক্ত ‘কসীভারদ্বাজ সুত্ত’ ও ‘মহাভগ্নীতে লৌহ- নির্মিত লাঙলের ফলা ব্যবহারের আভাস পাওয়া যায়।

অধ্যাপক রামশরণ শর্মা প্রত্নতাত্ত্বিক সাক্ষ্যের সাহায্যে দেখাবার চেষ্টা করেছেন যে, আলোচ্য সময়কালে এই অঞ্চলের লাঙলের ফলা নিয়মিতভাবে লোহা দিয়ে তৈরি হত। সুতরাং বলা অযৌক্তিক হবে না যে, লৌহ ও লৌহজাত উপকরণের ওপর এ যুগের কৃষি অর্থনীতি অনেকাংশে নির্ভরশীল ছিল। ঘন অরণ্যাঞ্চলকে কৃষিজমিতে পরিণত করার জন্য বারে বারে লাঙলের মাধ্যমে কর্ষণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীতে লেখা পাণিনির অষ্টাধ্যায়ীতে জমিকে উপযুক্ত করে তোলার জন্য দুই থেকে তিনবার লাঙল দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এইভাবে লোহার ব্যবহার শুরু হবার ফলে বহুকালের চিরাচরিত কৃষিপদ্ধতি পরিবর্তিত হয় এবং এর জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হয় এক নতুন ধরনের কৃষি-অর্থনীতি, যা তৎকালীন সমাজের মানুষকে ব্যাপকভাবে নাড়া দিয়েছিল।

নতুন এই কৃষিব্যবস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কযুক্ত ছিল গো-সম্পদ। কারণ, কৃষি অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে গেলে গোরু তথা গো-সম্পন্ন ছিল অপরিহার্য। কিন্তু এর আগে, বিশেষত পরবর্তী বৈদিক যুগে যাগযজ্ঞ ও নানা ধরনের আচার-অনুষ্ঠানে নির্বিচারে ও অবাধে পশুবলি হত। এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই গো-সম্পদ ভীষণভাবে হ্রাসপ্রাপ্ত হয়। ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে ব্যাপক হারে পশুবলি হওয়ায় কৃষির পক্ষে অপরিহার্য একটি উপাদান দুর্লভ হয়ে পড়েছিল। পূর্বতন এই ধারায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসে ষষ্ঠ শতাব্দীতে। যাগযজ্ঞ, আচার-অনুষ্ঠান তথা পশুবলির প্রতি বীতশ্রদ্ধ ভাব এই সময় প্রকটিত হয়ে ওঠে প্রতিবাদী ধর্মগুলিতে।

প্রধান দুটি প্রতিবাদী ধর্ম, যথা— বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মে জীবহিংসার বিরুদ্ধে এবং অহিংসার আদর্শের স্বপক্ষে মত প্রকাশ করা হয়েছিল। প্রতিবাদী এই ধর্মগুলিতে পশুর প্রতি অহিংসার নীতি অনুসরণের পিছনে অর্থনৈতিক প্রয়োজনীয়তা কাজ করেছিল। কৃষির সাফল্যে গো-সম্পদের অর্থনৈতিক গুরুত্ব ঐ ঘোষণার মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়েছে। বৌদ্ধ গ্রন্থাদিতে ‘গো- রক্ষা’র যে কথা উল্লেখিত হয়েছে সে-যুগের কৃষি অর্থনীতির অগ্রগতিতে তার গুরুত্ব অপরিসীম। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীর শেষ ও খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীর গোড়ার দিক থেকে পশুহত্যা যে আগের তুলনায় অনেক হ্রাসপ্রাপ্ত হচ্ছিল, তা পুরাতাত্ত্বিক প্রমাণ থেকে সমর্থিত হয়। সুতরাং বলা যেতে পারে, কৃষি তথা কৃষি অর্থনীতির সাফল্যের পিছনে গো-সম্পদ রক্ষার বিষয়টি এক বড় ভূমিকা পালন করেছিল।

কৃষি সংক্রান্ত বিষয়ে মানুষের জ্ঞানের পরিধির বিস্তার এবং নতুন নতুন কৃষি উপকরণ সৃষ্টির ফলে কৃষকদের পক্ষে জমি থেকে উদ্বৃত্ত উৎপাদন লাভ সম্ভব হয়েছিল। এই উদ্বৃত্ত নগরের উদ্ভব ও বিস্তারে যথেষ্ট সহায়ক হয়। প্রত্নতাত্ত্বিক ও সাহিত্যগত উভয় ধরনের উপাদান থেকে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয় যে খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতক থেকে মধ্যগাঙ্গেয় উপত্যকায় নগরের অবির্ভাব ঘটেছিল, যাকে ঐতিহাসিকরা সাধারণত ‘দ্বিতীয় নগরায়ণ’ বলে চিহ্নিত করে থাকেন। বৌদ্ধ গ্রন্থাদিতে মোট কুড়িটি নগরের উল্লেখ আছে, যার মধ্যে ছ’টি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

‘মহাপরিনির্ব্বাণ সুখ’-য় যে ছ’টি নগরীর (মহানগর) উল্লেখ পাওয়া যায়, সেগুলি হল চম্পা, রাজগৃহ, শ্রাবন্তী, সাকেত, কৌশাম্বী ও কাণী। এগুলি ছাড়াও বারাণসী, বৈশালী এবং বিহারের ছাপরা জেলার চিরন্দ গুরুত্বপূর্ণ নগর হিসাবে খ্যাতিলাভ করেছিল। সাহিত্যিক উপাদান ছাড়াও প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ থেকে ঐ নগরগুলির বেশিরভাগের অস্তিত্ব প্রমাণিত হয়। নগরগুলির অধিবাসীদের মধ্যে কারিগর ও ব্যবসায়ীদের সংখ্যা মোটেই নগণ্য ছিল না। পালি সাহিত্যে ছোট দোকানদার ও ব্যবসায়ীর উল্লেখ বারে বারে পাওয়া যায়। ক্রমাগতভাবে নগরগুলিতে এদের ভিড় বাড়ছিল। এই কারিগর ও ব্যবসায়ীরাই প্রকৃতপক্ষে প্রথম মুদ্রার ব্যবহার শুরু করেন। বলাবাহুল্য, কৃষি অর্থনীতির অভাবনীয় সাফল্য ভিন্ন ভিন্ন পেশাদারি শিল্প ও বৃত্তির বিকাশকে সম্ভব করে তুলেছিল।

কৃষির বিকাশ, নগরের বিস্তার এবং কারিগর শ্রেণীর উপস্থিতি ছাড়াও এই সময় বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ছিল লক্ষ করার মতো। শিল্পজাত ও কৃষিজাত উৎপাদনের অভাবনীয় অগ্রগতি বাণিজ্যের বিস্তারের পক্ষে যথেষ্ট অনুকূল হয়। ঋক্ বা পরবর্তী বৈদিক সাহিত্যের তুলনায় এ যুগের পালি সাহিত্যে বাণিজ্যের ওপর যথেষ্ট গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। এ যুগের ধনী বণিক ‘সেট্‌ঠি’ বা ‘শ্রেষ্ঠী’ বলে পরিগণিত হতেন। এই শ্রেষ্ঠীরা কালক্রমে এক বিশাল সম্পদের মালিক হয়ে উঠেছিলেন। স্থল ও জল উভয় পথেই বাণিজ্য চলাচল করত। তবে সাগর পাড়ি দিয়ে বাণিজ্য বিশেষ চলাচল করত বলে মনে হয় না। কেননা, পালি সাহিত্যে সমুদ্র বাণিজ্যের উল্লেখ তেমন নেই। শ্রেষ্ঠী ছাড়াও গ্রামাঞ্চলে ‘গহপতি’ নামে একটি অত্যন্ত ধনসম্পদশালী নতুন সামাজিক শ্রেণীর সৃষ্টি হয়েছিল। গহপতি শব্দটির উল্লেখ পরবর্তী বৈদিক সাহিত্যে পাওয়া যায়। তখন এর অর্থ ছিল অতিথি সেবক। কিন্তু খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে কৃষি উদ্বৃত্ত লাভ ক’রে এবং বিশাল ধনসম্পত্তির মালিক হয়ে গহপতিরা সম্পদশালী হয়ে উঠেছিল। গহপতিরা সাধারণত ছিল বৈশ্য শ্রেণীভুক্ত।

আদি বৌদ্ধ গ্রন্থগুলিতে বহু সংখ্যক গহপতির নাম ও তাদের ধনসম্পদের বিস্তৃত বিবরণ পাওয়া যায়। এই গহপতিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন মেনডক, অনাথপিণ্ডক প্রমুখ। অনেক সময় গহপতিরা কারিগর ও দোকানদারদের অর্থ ধার দিতেন। বৈদিক যুগের সাধারণ গৃহস্থ বা অতিথি সেবকের স্থলে পরিবারের প্রধান ও সম্পদশালী আবির্ভাব স্বাভাবিকভাবেই সমাজে সম্পদের বৈষম্যকে প্রকটিত করেছিল। অপরিমিত সম্পদের অধিকারী হওয়ায় একদিকে যেমন গহপতিদের সামাজিক মর্যাদা বেড়েছিল। অপরদিকে তেমনি সাধারণ মানুষ তাদের এই ঐশ্বর্যকে ভালো চোখে দেখত না। সেঠি, গহপতি ছাড়াও সেট্‌ঠি-গহপতি নামে আর এক সম্পদশালী শ্রেণীর কথাও জানা যায় বিনয় পিটক থেকে। গহপতিদের ন্যায় এই সেঠি-গহপতিরাও বিশাল ধনসম্পদের মালিক হয়ে উঠেছিল।

সুতরাং কৃষি, শিল্প, নগর ও বাণিজ্যের বিকাশের ফলে তৎকালীন সমাজে এক ব্যাপক অর্থনৈতিক পরিবর্তন এসেছিল। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে যে ধর্মান্দোলন শুরু হয়েছিল, তা যে এই পরিবর্তনেরই ফসল সে-বিষয়ে কোনো সংশয় নেই। আর্থ- সামাজিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন পরিবর্তনগুলির সঙ্গে ধর্মান্দোলনের ঘনিষ্ঠ সংযোগের বিষয়টি এখন আলোচনা করা যেতে পারে।

লোহার ও তার বহুল প্রচলনের ফলে সমাজে ক্ষত্রিয়দের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠার পথ সহজ হয়। লৌহ-নির্মিত অস্ত্রশস্ত্রের আবির্ভাবের সূত্র ধরে তারা রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তাদের একাধিপত্যকে দৃঢ়তর করেছিল সত্য। কিন্তু কেবল রাজনৈতিক ক্ষমতা হাতে পেয়েই তারা সন্তুষ্ট থাকেনি। রাজনৈতিক প্রভুত্ব স্থাপনের পথ ধরে সামাজিক ক্ষেত্রে নিজেদেরকে শ্রেষ্ঠত্বের আসনে প্রতিষ্ঠিত করতে তারা • প্রয়াসী হয়ে উঠেছিল। তাদের এই অদম্য প্রয়াস স্বভাবতই সমাজের উচ্চাসনে অবস্থিত ব্রাহ্মণদের সঙ্গে সংঘাতের ক্ষেত্র প্রস্তুত করে দেয়। এই কারণেই ক্ষত্রিয়দের মধ্যে থেকে ধর্মবিপ্লবে নেতৃত্ব দেওয়ার বিষয়টি প্রাধান্য পায়।

লোহার ব্যাপক ব্যবহারজনিত কারণে ক্ষত্রিয়দের ক্ষমতা ও প্রভাব-প্রতিপত্তি বৃদ্ধি বৈদিক ব্রাহ্মণ্য ধর্ম ও ব্রাহ্মণদের প্রাধান্য নির্ভর সমাজের পরিবর্তনসাধনে মানুষকে সচেতন করেছিল। ব্রাহ্মণদের দ্বারা পরিচালিত যজ্ঞ ও অন্যান্য ধর্মকর্ম যে ব্রাহ্মণদেরই জীবিকার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত তা মানুষ বুঝতে শিখেছিল। মানুষ অনুভব করতে পেরেছিল যে, যজ্ঞানুষ্ঠান ও অন্যান্য ধর্মকর্মে ব্রাহ্মণ ছাড়া অন্যান্য শ্রেণীর কোনো লাভ নেই। বরং তাদের ক্ষতির পাল্লাটাই ভারী। সুতরাং বৌদ্ধ ও জৈন ধর্ম উত্থানের অর্থনৈতিক কারণ অনেকাংশেই সাহায্য করেছিল।

Share

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *