StudyMamu

Site is under construction some pages not work properly. Please bear with us.

প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনায় লেখমালার গুরুত্ব

প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনায় লেখমালার গুরুত্ব। ইতিহাসের উপাদান হিসেবে লিপির গুরুত্ব।

প্রাচীন ভারতীয় শাসকরা নিজেদের কীর্তিকলাপ পাহাড় বা গুহার দেওয়ালে বিশেষভাবে নির্মিত স্তম্ভ গাত্রে অথবা তাম্রপত্রে খোদাই করতেন। খোদাই করা এই সমস্ত বিষয় কে সম্মিলিতভাবে লেখ বা লেখমালা বলা হয়। প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনার উপাদান কে আমরা মূলত দু ভাগে ভাগ করি –
  1. সাহিত্যিক উপাদান,
  2. প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান।
প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান হলো ভারতের ইতিহাস রচনার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উপাদান কারণ প্রাচীন ভারতের সাহিত্যিক উপাদান সুদুলভ। আলোচনা ও বিশ্লেষণ এর জন্য প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান কে চার ভাগে ভাগ করা হয় 
  1. লেখমালা,
  2. মুদ্রা,
  3. উৎখননের ফলে প্রাপ্ত পুরাবস্তু,
  4. শিল্পকলার নিদর্শন সমূহ।

ভূমিকা:

প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনায় লেখমালার গুরুত্ব বা তাৎপর্য অপরিসীম। লেখমালায় উৎকীর্ণ বিষয় সাধারণভাবে সংক্ষিপ্ত আকারে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করে, পাশাপাশি খেয়াল রাখতে হবে যে পাথর, ধাতু, মাটির ফলকের উপর উৎকীর্ণ লেখ’র প্রকৃতিজনিত ক্ষয়ের গতি ও সম্ভাবনা কম, (কাঁট পতঙ্গের আক্রমণ, আর্দ্রতা বা অন্যান্য প্রাকৃতিক বিপর্যয়) ফলে লেখ সহজেই অনেকদিন ধরে নিজের অস্তিত্বকে বজায় রাখে। উপরোক্ত কারণে ঐতিহাসিক গবেষকগণ প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনার জন্য লেখমালায় প্রাপ্ত তথ্যকে যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে বিশ্লেষণ ও গ্রহণ করেন। এখানে প্রাচীন ভারতীয় লেখমালার বহুমুখী তথ্য সরবরাহের দিকগুলি অতি সংক্ষেপে প্রদান করা হল।
লেখমালা বা লিপি

রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ইতিহাসের তথ্য:

লেখমালার প্রাপ্তিস্থানের উপর ভিত্তি করে সম্রাট বা সাম্রাজ্যের অথবা রাজা ও তার – রাজ্যের ভৌগোলিক সীমানা ও ব্যাপ্তি সম্পের্ক ধারণা পাওয়া যায় যেমন অশোকের অনুশাসনের প্রাপ্তিস্থানের উপর ভিত্তি করে তার সম্রাজ্যের প্রসারের কথা জানা যায়। তাম্রশাসনগুলি থেকেও প্রশাসনিক কেন্দ্র, জমি হস্তান্তরের এলাকা এবং সর্বোপরি তাম্রশাসনটির প্রাপ্তিস্থান দেখে শাসকের রাজ্যসীমা বোঝা যায় রাষ্ট্রকূট রাজ তৃতীয় কৃষ্ণের কারহাড় তাম্রশাসনটি মহারাষ্ট্রের কারাহড বা প্রাচীন করহাটক থেকে পাওয়া গেছে, লেখটি জারি করার স্থান মেডুপট্টম বা বর্তমান তামিলনাড়ুর আর্কট জেলাস্থিত মেলপডি – তামিলনাড়ুর আর্কট পর্যন্ত অঞ্চল তৃতীয় কৃষ্ণের রাজাভুক্ত হয়েছিল কারণ তিনি ৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের তক্কোলমের যুদ্ধে চোল রাজ প্রথম পরাস্তককে পরাজিত করেছিলেন। অন্যদিকে গৌতমীপুত্রের কৃতিত্ব বর্ণনাকারী নাসিক প্রশস্তি বা মহাক্ষয়প রুদ্রদামেনর জুনাগড় লেখতে স্পষ্টভাবে তাদের নিজ নিজ রাজ্যের অন্তর্ভূক্ত অঞ্চলগুলির তালিকা দেওয়া আছে। 
সাম্রাজ্যের সীমা ছাড়াও লেখ থেকে রাজার সামরিক সাফল্য (এলাহাবাদ প্রশস্তি, আইহোল প্রশস্তি, খালিমপুর তাম্রশাসন, ইত্যাদি), বংশপরিচয় ও পূর্বপুরুষদের কৃতিত্ব (হরাহা, নিধনপুর সহ অসংখ্য লেখ), অন্যান্য গুণাবলী, কেন্দ্রীয় ও প্রশাসিনক পদাধিকারী, কর্মপদ্ধতি, নির্দেশনামা, প্রাদেশিক শাসন, ইত্যাদি (অশোকের অমুশাসন, দামোদরপুর তাম্রশাসন, ইত্যাদি), স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন (চোলদের উত্তরমেরুর লেখ), ইত্যাদই নানা বিষয়ে অসংখ্য তথ্য পাওয়া যায় এই তথ্যের একটি বড় অংশ সাহিত্যে উল্লেখিত নয় লেখমালার গুরুত্ব এক্ষেত্রে অপরিসীম। তবে খেয়াল রাখতে হবে যে রাজকীয় কৃতিত্ব বা সাফল্য বর্ণনাকারী লেখগুলিতে বহু ক্ষেত্রেই সভাকবির পৃষ্ঠপোষক শাসকের প্রতি পক্ষপাতমূলক অতিশয়োক্তি থাকতে পারে সাবধানী ও যৌক্তিক বিশ্লেষণের মধ্যে দিয়ে তথ্য আহরণই ঐতিহাসিকের পাথেয়।

কাল নির্ণয়:

অনেক ক্ষেত্রেই লেখগুলিতে জারি করার সময় সংশ্লিষ্ট শাসকের রাজত্ববর্ষ বা কোন বিশেষ একটি অব্দের উল্লেখ থাকে যা থেকে ঐ ঐতিহাসিক দলিলটির কাল নির্ণয় করা সম্ভব ৫৮ খ্রিস্ট পূর্বাব্দের বিক্রমাব্দ, ৭৮ খ্রিস্টাব্দে সূচিত শকাব্দ, ৩১৯-২০ খ্রিস্টাব্দের গুপ্তাব্দ সংশ্লিষ্ট বংশ বা তাদের অধীনস্ত রাজা বা প্রাদেশিক শাসকবৃন্দ লেখমালায় উল্লেখ করতেন যার ফলে লেখমালা থেকে আদি পর্বের ইতিহাস রচনার তারিখ উল্লেখ করা সম্ভব হয় (মহাক্ষত্রপ রুদ্রদামনের জুনাগড় লেখটি ৭২ অব্দ = ৭২ শকাব্দে = ৭২+৭৮-১৫০ খ্রিস্টাব্দে জারি করা হয়েছিল) প্রসঙ্গত প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্যে অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারিখের উল্লেখ না থাকার ফলে ইতিহাসের উপাদান হিসেবে লিপির গুরুত্ব বা ভূমিকা এই তারিখ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
অনেক ক্ষেত্রে প্রাচীন লেখতে তারিখের উল্লেখ না থাকলেও পুরালেখবিদ্যা বা Paleography ভিত্তিতে লেখ’র লিপি বিশ্লেষণ করে লেখটির আনুমানিক সময়কাল নির্ধারণ করা সম্ভব হয় (মেহরৌলি স্তম্ভলেখতে ব্যবহৃত ব্রাহ্মীকে দেখে লেখটিকে পুরালেখবিদগণ খ্রিস্ট পূর্ব চতুর্থ শতকের শেষদিকে বা পঞ্চম শতকের গোড়ায় স্থান দিয়েছেন)।

প্রাচীন লেখতে উল্লেখিত ভালোবাসার কাহিনী:

 ছত্তিশগড়ের রামগড় পাহাড়ের অন্তর্গত সীতাবেঈ ও যোগিমারা গুহাতে একাধিক লেখমালার সন্ধান পাওয়া গেছে যা খ্রিস্ট পূর্ব তৃতীয় শতকের ব্রাহ্মী লিপি ও প্রাকৃত ভাষায় লেখা। গীতাবেঙ্গ গুহাটির কাঠামো ও বিন্যাস দেখে পণ্ডিতগণ অনুমান করেছেন যে স্থানটি একটি রঙ্গালয় হিসাবে ব্যবহৃত হত যেখানে কবিরা তাদের কবিতা পাঠ করতেন বা নাটক জাতীয় অভিনয় সম্পন্ন হত। দুই পঙক্তির ভাঙ্গা ও অস্পষ্ট লেখতে কবি ও তাদের সৃষ্টি এবং তাদের প্রতি মানুষের অনুরাগ ও সম্মান প্রদর্শনের কথা বলা হয়েছে।
সীতাবেদ গুহার দক্ষিণে অবস্থিত যোগিমারা গুহাতে পাঁচ পঙক্তির লেখটিতে বলা হয়েছে যে ‘দেবদাসী সুতনুককে রুপাদক্ষ চমৎকার যুবক দেবদিন্ন ভালোবাসে। এই সময়কালে দেবদাসী শব্দটির অর্থ স্পষ্ট নয় (আদিমধ্যযুগীয় দক্ষিণ ভারতে মন্দিরের সাধিকাদের দেবদাসী বলা হত); অন্যদিকে রুপাদক্ষ অভিধাটি লিপিকার বাভাষ্কর অর্থে ব্যবহার হয়ে থাকতে পারে। লেখটির এই ভাষ্যে সুতনুক ও দেবদিনের মধ্যে ভালোবাসার কথা বলা হয়েছে। অন্য একটি ভাষ্য অনুসারে এই লেখ’র অর্থ করা হয়েছে দেবদাসী সুতনিক নারী বা অভিনেত্রীদের জন্য এই বিশ্রামের স্কুলটি নির্মাণ করে দিয়েছিল যেখানে ভাষ্কর বা চিত্রকর বেদিন্ন চিত্রগুলি অঙ্কন করেছিলেন।

আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাস রচনার তথ্য সরবারহ:

 আধুনিক কালে ঐতিহাসিকগণ প্রাচীন ভারতীয় লেখ থেকে প্রভূত পরিমাণে অ-রাজনৈতিক ইতিহাসের তথ্য আবিষ্কার ও ব্যবহার করছেন যার ফলে অতীত ভারতের চর্চা আরও তথ্যনিষ্ঠ ও সমৃদ্ধ হচ্ছে। লেখমালা থেকে বিশেষত আদি মধ্যযুগীয় তামশাসনগুলি থেকে সেই সময়কালের ভূমিব্যবস্থা, রাজস্ব সংগ্রহের পদ্ধতি, প্রশাসনিক ব্যবস্থায় আঞ্চলিক শাসকদের ভূমিকা, কৃষিজীবি, বণিক ও কারিগরদের জীবন ও পেশার সঙ্গে সম্পর্কিত নানা দিক, পেশাদারী সংগঠন, ইত্যাদি নানা দিক প্রতিভাত হয়। লেখমালা প্রদত্ত অ-রাজনৈতিক ইতিহাসের তথ্যভান্ডারের কয়েকটি নমুনা দেওয়া যেতে পারে।
গুপ্ত শাসনকালে উৎকীর্ণ দামোদরপুর তাম্রশাসনগুলি (৫টি) থেকে জানা যায় যে উত্তর বাংলায় জমি হস্তান্তরকালে প্রদেশ ও জেলা প্রশাসনের আধিকারিক ছাড়াও নগরশ্রেষ্ঠী বা নগরের প্রধান ব্যবসায়ী, সার্থবাহ বা বণিকদের প্রতিনিধি, প্রথম কুলিক বা কারিগরদের প্রতিনিধি, প্রথম কায়স্থ বা করণিকদের প্রতিনিধি, কুটুম্বিক বা সম্পন্ন কৃষক, মহত্তর বা গ্রামের প্রধান প্রমুখ অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান বা সামাজিক গোষ্ঠীর মানুষ উপস্থিত থাকতেন।
আদিমধ্যকালীন বাংলার তাম্রশাসনগুলি থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় যে সেইসময় দ্রোণবাপ, আঢ়বাপ, কূল্যবাপ, পাটক ইত্যাদি প্রকার ও নামে জমির আয়তনকে পরিমাপ করা হত।
তামশাসনে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী জমি হস্তান্তর বা জমিদান করা হত মূলত ধর্মীয় বা পুণ্যার্জনের উদ্দেশ্য নিয়ে এই দানগুলি করা হত মূলত ধর্মীয় সম্প্রদায় বা প্রতিষ্ঠান (যেমন নালন্দা), পুরোহিত, পণ্ডিত বা ভিক্ষু সম্প্রদায়ের মানুষ (যেমন হলায়ুধ) এর উদ্দেশ্যে – সুতরাং ধর্মীয় চিন্তাভাবনা ও আচরণের বিষয়গুলিও লেখমালার মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়।
গুপ্ত শাসনকালে ৪৩৬ ও ৪৭৩ খ্রিস্টাব্দের মান্দাসোরে প্রাপ্ত দুটি লেখ থেকে রেশমশিল্পের সঙ্গে যুক্ত একটি পেশাদারী গোষ্ঠীর গুজরাট থেকে প্রাচীন দশপুর বা মান্দাসোরে এসে বসতি স্থাপন এবং সেইসাথে মন্দিরের উদ্দেশ্যে দানের উল্লেখ রয়েছে যা থেকে সমসাময়িক পশ্চিম ভারতের আর্থ-সামাজিক ইতিহাস সম্পর্কে একটি ছবি পাওয়া যায়।
দক্ষিণ ভারতের অসংখ্য লেখমালার উপর গবেষণা করে মীরা আব্রাহাম, চম্পকলক্ষ্মী, নোবারু কারাশিমা, সুব্বারায়ালু প্রমুখ বিশেষজ্ঞ ঐতিহাসিক সমসাময়িক দক্ষিণ ভারতে অস্তিত্বমান অয়াভোল বা ঐরুভুত্তর, নানাদেশি, নগরোত্তর, মণিগ্রামম ও অম্বুবাম্ প্রভৃতি গিড বা বণিকগোষ্ঠীর সংগঠন, নগর, বাণিজ্য, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার ও মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগের ইতিহাস রচনা করেন।
সুলতান মামুদের ভারত অভিযানের ক্ষেত্রভূমি সোমনাথ থেকে ১২৬৪ এবং ১২৮৭ খ্রিস্টাব্দের দুটি দৈভাষিক লেখ থেকে জানা যায় যে সোমনাথে বসবাসকারী মুসলমান জমাথ বাসিন্দাদের জন্য জাহাজী বণিক বা নাখুদা তার হিন্দু মিত্র ছাড়া ও অন্যান্যদের সহায়তায় সোমনাথে একটি মিজিগিতি বা মসজিদ নির্মাণ করে দিয়েছিলেন লেখমালা প্রদত্ত এই চিত্র সমসাময়িক ভারতে হিন্দু মুসলিম সম্প্রীতির একটি চমৎকার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে।
সাম্প্রতিক কালে কুড়া, পিতলখোরা, প্রমুখ অসংখ্য লেখমালাকে বিশ্লেষণ করে অধ্যাপিকা সুসমিতা বসু মজুমদারের মত গবেষক প্রাচীন ভারতের চিকিৎসা ব্যবস্থা, হাসপাতাল, চিকিৎসকদের সামাজিক অবস্থান ইত্যাদি অভিনব কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির উপর।

লেখমালায় ব্যবহৃত ধাতু , ভাষা এবং লিপি: 

লেখমালার জন্য ব্যবহৃত হতো বিভিন্ন থাকে যেমন সোনা রূপা তামা লোহা ব্রঞ্চ এবং প্রস্তরখণ্ড এমনকি কখনো কখনো মাটির ফলক ও ভাষা হিসেবে সংস্কৃত প্রাকৃত এবং লিপি হিসেবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্রাহ্মী এবং কখনও কখনও স্থানীয় জনগণের বোঝার সুবিধার্থে খরোষ্টী ব্যবহৃত হতো। ফলে লেখমালায় ব্যবহৃত ধাতু , ভাষা এবং লিপি বোঝার ক্ষেত্রে লেখমালার গুরুত্ব অপরিসীম।

সরকারি এবং বেসরকারি শিলালিপি :

অশোকের শিলালিপি থেকে বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ ধর্ম বিজয় প্রজাদের মঙ্গলের জন্য অবলম্বিত ব্যবস্থা সাধন জানা যায়। অশোকের পরবর্তীকালে লেখাগুলি দু ধরনের সরকারি এবং বেসরকারি। সরকারি লেখ বলি আবার দু’ধরনের প্রশস্তি ও দান বিষয়ক। প্রশস্তি গুলির মধ্যে হরি সেনগুপ্তের এলাহাবাদ প্রশস্তি, সাতবাহন শাসক গৌতমীপুত্র সাতকর্ণী গৌতমি নাসিক (মহারাষ্ট্র)প্রশস্তি। সৎ মহাক্ষত্রপ রুদ্রদামন এর শিলালিপি, চালুক্য রাজ দ্বিতীয় পুলকেশী আইহোল প্রশস্তি, উমাপতি ধর এর দেওপাড়া প্রশস্তি, উল্লেখযোগ্য। ভূমি দান সম্পর্কিত অনেকগুলি থেকে বংশ সম্পর্কে জানা যায় এবং রাজকীয় অধিকার প্রত্যক্ষ প্রমাণ।

মূল্যায়ন: 

বৈদেশিক লেখ গুলির মধ্যে এশিয়া মাইনরের আনাতোলিয়ার, বোঘাজকয় এই লেখাতে আর্যদের ভারতে আগমন পূর্ণ বৃত্তান্ত বিবরণ আছে। এর থেকে ঋকবেদের সময়কাল অনুমান করা সম্ভব। পারস্য সম্রাট দরায়ুস এর পারসের পলিশ এবং নৎসি রুস্তাম লেখ দুটি মূল্যবান। সহজেই বোঝা যায় যে ভারতের ইতিহাসের আদি পর্বের ইতিহাস রচনার জন্য লেখমালা কিরূপ ব্যাপ্তি ও উপযোগিতা নিয়ে তথ্য সরবরাহ করে থাকে। লেখমালা (Inscriptions) প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনার একটি উৎকৃষ্ট উপাদান হিসাবে বিবেচিত হয়ে থাকে। বস্তুত প্রাচীন ভারতের লুপ্ত ইতিহাস যতটা উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে তার বেশিরভাগের জন্য আমরা লেখমালার কাছে ঋণী। সুতরাং, প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনায় লেখমালার গুরুত্ব অনস্বীকার্য।
Share

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *