StudyMamu

Site is under construction some pages not work properly. Please bear with us.

প্রাচীন প্রস্তর যুগ ও মধ্যপ্রস্তর যুগে ব্যবহৃত হাতিয়ার গুলি সম্পর্কে আলোচনা করো

প্রাচীন প্রস্তর যুগ ও মধ্যপ্রস্তর যুগে ব্যবহৃত হাতিয়ার গুলি সম্পর্কে আলোচনা করো।

প্রাচীন প্রস্তর যুগে ব্যবহৃত হাতিয়ার গুলিঃ

প্রাচীন প্রস্তর যুগের হাতিয়ার বা আয়ুধগুলির মধ্যে একটা তারতম্য আছে। প্রাচীন প্রস্তর যুগের উচ্চ পর্যায়ে গ্রেড বা লম্বা চিলকা ও খোদাই করা জাতীয় জিনিস সংখ্যায় বেশি। নিম্ন পর্যায়ে হাত-কুঠার ও ছেদক এবং মধ্য পর্যায়ে ছোট ছিদ্র করার হাতিয়ার, চাঁছার বা ছোলার হাতিয়ার-এর প্রাধান্য লক্ষ করা যায়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, হাত-কুঠারের প্রাধান্য নিম্ন পর্যায়ে বেশি হলেও অন্য দুটি পর্বেও পাওয়া গেছে। এসব ছাড়াও অসংখ্য আয়ুধ আবিষ্কৃত হয়েছে।

প্রাচীন প্রস্তর যুগের হাতিয়ারগুলি তৈরি হয়েছে প্রধানত পাথর থেকে। সাধারণত ‘কোয়ার্টজ’, ‘ব্যাসাল্ট ও ‘চার্ট’ জাতীয় পাথর ব্যবহৃত হয়েছে। তবে প্রথম দুটির বহুল ব্যবহার ঘটেছে নিম্ন পুরাপ্রস্তর যুগে। এস্থলে অবশ্য মনে রাখা দরকার যে, পাথরের হাতিয়ার বেশি পাওয়া গেলেও হাড়ের তৈরি জিনিসও কিছু পাওয়া গেছে। এই যুগের উচ্চ পর্যায়ে অন্ধ্রপ্রদেশের কুর্নুল থেকে হাড় দিয়ে তৈরি বিভিন্ন ধরনের হাতিয়ারের নিদর্শন মিলেছে। আয়ুধ নির্মাণে কাঠের ব্যবহার ঘটাও নিতান্ত অমূলক নয়। পুরাতত্ত্ববিদ এইচ. ডি. এই অনুমান সঙ্গত বলেই পণ্ডিতরা মনে করে থাকেন। 

১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে এইচ. ডি. সাক্কালিয়া ও তাঁর অনুগামীদের প্রচেষ্টায় কাশ্মীরের লিডার উপত্যকায় পহেলগাঁও-এ খননকার্যের ফলে নিম্ন পুরাপ্রস্তর যুগের প্রাচীনতম নিদর্শন পাওয়া গেছে। নিদর্শনগুলির মধ্যে একটি বৃহদায়তন ফ্লেক বা পাত এবং একটি বড় হাত-কুঠার বিশেষ উল্লেখযোগ্য।” অন্যান্য হাতিয়ারের তুলনায় কম হলেও হাত-কুঠার পাওয়া গেছে নিম্নপুরাপ্রস্তর যুগের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র পাঞ্জাবের সোয়ান উপত্যকায়।

প্রাচীন প্রস্তর যুগে ব্যবহৃত হাতিয়ার

হাত-কুঠার সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে দক্ষিণ ভারতের মাদ্রাজ অঞ্চলে। এগুলির গুণগত মানও উন্নত। এগুলির নির্মাণে কোয়ার্টজ পাথরের ব্যবহার ঘটেছে বেশি। মূল পাথরখণ্ড থেকে চটা খসিয়ে হাত-কুঠারগুলি তৈরি হত। কর্ণাটকের হলিগি উপত্যকা এবং চেন্নাইয়ের কাছে অবস্থিত আত্তিরামপঞ্চম-এ এই জাতীয় হাত-কুঠার বেশি পাওয়া গেছে। এই ধরনের হাতিয়ারগুলি এ্যাকিউলিয়ান বা এ্যাসিউলিয়ান হাতিয়ার নামে পরিচিত। এস্থলে অবশ্য স্বীকার্য যে ভারতীয় এই হাত-কুড়ালের শিল্পধারা আফ্রিকা ও ইউরোপের সঙ্গে তুলনীয়।

হাত-কুঠার ছাড়াও প্রাচীন প্রস্তর যুগের বিভিন্ন পর্বে বিভিন্ন ধরনের আয়ুধ আবিদ্যুত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে প্রথমেই সোয়ান উপত্যকায় প্রাপ্ত সামগ্রীর প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করা যেতে পারে। উল্লেখ্য, ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে পাঞ্জাবের রাওয়ালপিন্ডির নিকট সোয়ান নদী উপত্যকায় প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্য শুরু হয়। সোয়ানে প্রাপ্ত প্রধান হাতিয়ার হল কোপানি, যেগুলি কখনো একমুখী এবং কখনো প্রমুখী। এইসব হাতিয়ার তৈরি হত বড় বড় পাথরের নুড়ি থেকে। উল্লেখ্য, এখানের কোপানিগুলি সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জাভায় প্রাপ্ত কোপানির যথেষ্ট মিল রয়েছে।

সোয়ান উপত্যকায় প্রাপ্ত হাতিয়ারগুলি বিশ্লেষণ করে পুরাতাত্ত্বিকরা দেখিয়েছেন যে হাতিয়ারগুলির নির্মাণের ক্ষেত্রে সেই সময়ের প্রজাতি (হোমো হাবিলিস, হোমো ইরেকটাস) ধীরে ধীরে কৌশলের পরিবর্তন ঘটিয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, প্রথম দিকের আয়ুগুলি ছিল বেশ ভারী ও অসমতল, কিন্তু পরের দিকে এগুলি ক্রমশ পাতলা হতে থাকে এবং সেগুলির মধ্যে সমতাও লক্ষ করা যায়। এছাড়া, মুঙ্গের জেলায় ভীমবানধের ১৮ কিলোমিটার উত্তরে পৈসরা নামে একটি গ্রামের উপকণ্ঠে নিম্নপুরাপ্রস্তর যুগের একেবারে শেষ পর্যায়ের বহু আয়ুধ আবিষ্কৃত হয়েছে। এগুলির মধ্যে আছে প্রধানত হস্তকুঠার ও ছেদক। উল্লেখ্য, এই পৈসরা গ্রামেরই আশেপাশে প্রায় ২ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে পাথরের আয়ুধ পাওয়া গেছে সবচেয়ে বেশি। মধ্যপ্রদেশের ভীমবেটকা গুহাশ্রয়ে যেখানে মানুষ বসে। হাতিয়ার তৈরি করত সেরকম কয়েকটি স্তর পাওয়া গেছে। এখানের হাতিয়ারগুলিও প্রধানত হাত-কুড়াল ও ছেদক। পৈসরা ও ভীমবেটকার সময়কাল প্রায় একই।

নিম্ন পুরাপ্রস্তর যুগের পরবর্তীকালে মধ্য ও উচ্চ পুরাত্তর পর্বে আয়ুধ বা হাতিয়ারগুলির গঠন ও আকৃতিতে কিছু স্বাভাবিক পরিবর্তন ঘটে। এগুলি আগের তুলনায় আরো ছোট ও হালকা। এই পর্বে হাত-কুঠার ও কোপানির ব্যবহার কমে যায়। অন্যান্য আয়ুধ যেমন ভোমর, স্ক্র্যাপার বা চাঁচানি এবং ব্লেডের ব্যবহার বৃদ্ধি পায় মধ্য পুরাপ্রস্তর পর্বে। এই পর্বে পাথরের চিলকার ওপর তৈরি হাতিয়ারের সংখ্যা বিশেষভাবে বেড়ে যায়। আগের পর্বে সাধারণ কোয়ার্টজাইট জাতীয় পাথরের পরিবর্তে সুক্ষ্মদানা বিশিষ্ট কোয়ার্টজাইট বা অন্য পাথর যেমন এ্যাগেট, জ্যাসপার প্রভৃতির ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়।

অন্ধ্রপ্রদেশের কুর্নুল জেলার কিছু গুহা, মধ্যপ্রদেশের বাঘোর এবং অন্যান্য রাজ্য যেমন উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট, মহারাষ্ট্র এমনকি পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রত্নকেন্দ্র থেকেও উচ্চ পুরাপ্রস্তর যুগের নিদর্শন তথা আয়ুধের সাক্ষ্য পাওয়া গেছে। বেশিরভাগ পুরাতাত্ত্বিক মনে করে থাকেন যে এই সময় আবহাওয়ায় বিশেষ শুদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এই যুগের একটা প্রধান বৈশিষ্ট্য হল বর্তুলাকার একটি মূল টুকরো থেকে চারপাশে লম্বা চিলকা ছড়ানো এবং সেই চিলকাগুলোর সাহায্যে তৈরি হত হাতিয়ার। আগেই বলা হয়েছে যে কুর্নুল জেলা থেকেই একমাত্র হাড়ের তৈরি বিভিন্ন হাতিয়ার পাওয়া গেছে। এছাড়া আগুনের চিহ্নও পাওয়া গেছে এখানে। উচ্চ পুরাপ্রস্তর পর্বের উল্লেখযোগ্য হাতিয়ার ছিল পাতলা ও ধারালো ব্লেড, বাটালি এবং চাঁচনি।

আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১২ থেকে ১০ হাজার বছরের অর্থাৎ উচ্চ পুরাপ্রস্তর যুগের গুরুত্বপূর্ণ কিছু সাক্ষ্য ও আয়ুধ পাওয়া গেছে মধ্যপ্রদেশের শোন উপত্যকায় সিধি জেলার বাঘোর গ্রাম থেকে। এখানে বৃহত্তর এলাকা (২৮৬ বর্গমিটার)-য় খনন করে দেখা গেছে যে হাতিয়ার তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ধরনের কাজ আলাদা আলাদা জায়গায় করা হত। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের পাথর মেশানো একটি এলাকারও সন্ধান মিলেছে। বাঘোর-১ থেকে যে আয়ুধগুলি পাওয়া গেছে সেগুলি বেশিরভাগই কখনো লম্বা কখনো ছোট চিলকা থেকে তৈরি। পেষাই করার কাজে ব্যবহৃত হয় এমন কিছু চ্যাপ্টা পাথর এবং হাতুড়ি ধরনের কিছু পাথরের সন্ধান মিলেছে।

প্রাচীন প্রস্তর যুগে ব্যবহৃত হাতিয়ার

বাঘোর-এ সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ও অভাবনীয় নিদর্শন পাওয়া গেছে ১৯৮২ সালে সেখানে নতুন করে খননকার্যের সময়। উল্লেখ্য, ৮৫ সেন্টিমিটার ব্যাসের বিভিন্ন ধরনের পাথরের টুকরো দিয়ে তৈরি একটি গোল এলাকা এবং এর মাঝখানে একটি বিশেষ ধরনের পাথরের দশটি টুকরো আবিষ্কৃত হয়েছে। ঐ দশটি টুকরোকে সমন্বিত করে দেখা গেছে সেগুলি একটি বড় পাথরের পূর্ণাঙ্গ রূপ এবং তা ছিল প্রথমে একটি বড় ত্রিভুজাকার পাথর। এছাড়া ঐ পাথরটির মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় কিছু রঙিন (অল্প হলুদ-লাল থেকে কালো- লাল খয়েরি) দাগ (স্ত্রী চিহ্ন) এবং বর্তমানে বাঘোর এলাকায় বসবাসকারী মানুষের প্রায় ঐ ধরনের পাথর ও ধর্মীয় রীতিনীতির ভিত্তিতে পুরাতাত্ত্বিকরা একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে এসেছেন এবং তা হল ভারতবর্ষে মাতৃকাপূজা ও পাথর পূজার ধারা চলে আসছে উচ্চপুরাপ্রস্তর যুগ থেকেই।

পশ্চিমবঙ্গ তথা বাংলায় সামগ্রিকভাবে খননকার্যের বিশেষ অগ্রগতি না ঘটলেও যে সমস্ত পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া গেছে তার ভিত্তিতে বলা যায় যে, পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়, বাঁকুড়ার খাতড়া-মুকুটমণিপুর অঞ্চল, বেলপাহাড়ী-শিলদা অঞ্চল—এই সমস্ত এলাকায় পুরাপ্রস্তর যুগের মানুষ বসবাস করতেন। উচ্চ পুরাপ্রস্তর যুগে উল্লেখিত আয়ুধের সঙ্গে কয়েকটি জায়গা যেমন কুর্নুল, মধ্যপ্রদেশের আদমগড় এবং গুজরাতের লাংঘনাজ-এ কিছু জন্তু-জানোয়ারের অশ্মীভূত হাড় পাওয়া গেছে। এ প্রসঙ্গে গণ্ডার, হরিণ, ছাগল, ভেড়া প্রভৃতির নাম করা যায়। বলাবাহুল্য, সমকালীন মানুষ হোমো ইরেকটাসের শিকার ও খাদ্য ছিল এগুলি।

মধ্যপ্রস্তর যুগে ব্যবহৃত হাতিয়ার গুলিঃ

আদি প্রস্তরযুগের তুলনায় ক্ষুদ্র বা মধ্যপ্রস্তর যুগে হাতিয়ারের ধরনের পরিবর্তন ঘটেছিল। আয়ুধ বা হাতিয়ারগুলি ক্ষুদ্র হলেও সংখ্যাগত দিক থেকে তা ছিল অনেক বেশি। বিভিন্ন ধরনের হাতিয়ার তৈরির পিছনে নিশ্চিতভাবে কাজ করেছিল ভিন্ন ধরনের কাজের প্রেরণা। বলাবাহুল্য, পরিবর্তিত সমাজ ও অর্থনীতিতে নিত্য নতুন কাজের তাগিদে প্রয়োজনীয় হাতিয়ার তৈরিতে অগ্রণী হয়েছিল সেই সময়ের মানুষ। এই যুগের প্রস্তরায়ুধগুলি তৈরি হত সাধারণত কোয়ার্টজ, চ্যালসিডনী ও চার্ট পাথরের দ্বারা। এছাড়া, অ্যাগেট, কার্নেলিয়ান ও গার্নেট পাথরের ব্যবহারও মাঝে মাঝে লক্ষ করা যায়। এই যুগের হাতিয়ারগুলির একটা উল্লেখযোগ্য দিক হল বেশিরভাগই ছোট ছোট চিলকা বা ‘ব্রেডলেট’ থেকে তৈরি করা হয়েছে। এই সমস্ত চিলকাগুলি বের করা হয়েছে বর্তুলাকার ছোট প্রস্তর খণ্ড থেকে।

মধ্যপ্রস্তর যুগে ব্যবহৃত হাতিয়ার

প্রস্তরায়ুধের মধ্যে পূর্বতন যুগের হাত- কুঠার ও কোপানির পরিবর্তে বহু বৈচিত্র্যপূর্ণ হাতিয়ারের সমাবেশ লক্ষ করা যায়। উল্লেখযোগ্য হাতিয়ারগুলি হল—বাটালি, চাঁচনি, ব্লেড, ভোমর বা তুরপুণ, ত্রিকোণী প্রস্তরায়ুধ। পাথরের জাঁতা, হামানদিস্তা ও ক্ষুদ্র ছেদক পাওয়া গেছে কয়েকটি প্রত্নকেন্দ্রে। হাড় কিংবা চকমকি পাথর দিয়ে তৈরি করা তীর পাওয়া গেছে, যা প্রমাণ করে শিকারিদের হাতিয়ার হিসাবে তীর-ধনুকের আবির্ভাব তখন ঘটে গিয়েছিল। এছাড়া মধ্যপ্রদেশের রাইসেন জেলার ভীমবেঠকার গুহায় বর্শা, তীর, ধনুক প্রভৃতির ছবি লক্ষ করা গেছে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে সেই সময়ের হাতিয়ার যথেষ্ট উন্নত ছিল—এই বিবর্তন ঘটেছিল অবশ্যই প্রয়োজনের দিকে লক্ষ রেখে। এখানে লক্ষণীয় বিষয় হল, পুরাপ্রস্তর যুগের তুলনায় ক্ষুদ্রপ্রস্তর যুগে খাদ্য সংগ্রহের ধারা ও রীতি বিকশিত হয়েছিল।

আদিপ্রস্তর যুগের সঙ্গে এই ক্ষুদ্র বা মধ্যপ্রস্তর যুগের হাতিয়ারের মূলগত কিছু পার্থক্য সহজেই লক্ষণীয়। কারিগরি ও উপকরণের ক্ষেত্রে পার্থক্য বিশেষ উল্লেখের দাবি রাখে। বস্তুত, বৈচিত্র্যপূর্ণ এইসব হাতিয়ার শিকারজীবনের ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী যুগের তুলনায় এই যুগের মানুষের দক্ষতার পরিচয় বহন করে। শুধু তাই নয়, হাতিয়ার নির্মাণের পদ্ধতিরও পরিবর্তন ঘটেছিল এযুগে।

অস্ত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে পাথরের মূল অংশের তুলনায় পাত বা চাকলা (‘ফ্লেক’)-র ওপরেই এই যুগের মানুষ বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন। এর ফলস্বরূপ অস্ত্রগুলি হালকা ও বেশি কার্যকরী হয়েছিল। অর্থাৎ জীবননির্বাহকে আরো সাবলীল ও উন্নত করার তাগিদে প্রযুক্তিতে পরিবর্তন আনার অনলস প্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল সেই সুদূর প্রাগৈতিহাসিক যুগেও। এখনকার মতো অর্থনীতির প্রধান তিন উৎস যথা—কৃষি, শিল্প ও বাণিজ্যের তখন কোনো প্রশ্নই ছিল না। তৎকালীন অর্থনৈতিক পরিবেশ খুঁজতে হবে প্রযুক্তিগত মান-এর নিত্য নতুন উন্নতি এবং শিকার তথা জীবিকানির্বাহের জন্য নানা ধরনের প্রচেষ্টা গ্রহণ ও ক্রমবিবর্তন এবং সর্বোপরি পশুকে পোষ মানানোর প্রতি তীব্র আকর্ষণের মধ্যে।

মধ্যপ্রস্তর যুগে ব্যবহৃত হাতিয়ার

অস্থায়ী কিছু আশ্রয়স্থল বা কুটিরের সন্ধান মিলেছে কিছু প্রত্নকেন্দ্র থেকে। মধ্যপ্রদেশের সিধি জেলার বাঘোর প্রত্নকেন্দ্রর একটি এলাকা থেকে বাঁশ ও কাঠের সরু ও অগভীরভাবে পোঁতা কয়েকটি খুঁটির চিহ্ন পাওয়া যেভাবে খুঁটির গর্তের দাগগুলি পাওয়া গেছে তার ভিত্তিতে পণ্ডিতরা অনুমান করেছেন যে কমপক্ষে এখানে পাঁচটি অস্থায়ী আশ্রয় ছিল। ঐ আশ্রয়গুলির মেঝেতে বেশ কিছু ছোট ছোট পাথরের টুকরো পাওয়া গেছে। কী কারণে ঐ আশ্রয়গুলি তৈরি হয়েছিল তা বলা শক্ত। এছাড়াও বর্তমান এলাহাবাদ শহরের ৭৭ কিমি উত্তর-পূর্বে চোপানি-মানডো-য়-এ মধ্যপ্রস্তর যুগের শেষভাগে বেশ কিছু কুটিরের নিদর্শন মিলেছে।

Share

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *