StudyMamu

Site is under construction some pages not work properly. Please bear with us.

প্রাচীন রোমের সমাজে নারীদের অবস্থা কেমন ছিল

প্রাচীন রোমের সমাজে নারীর অবস্থা। রোমের সমাজে নারীদের অবস্থা কেমন ছিল ।

যেকোনো সমাজ ব্যবস্থার মান নির্ণয় হয় সেই সমাজের নারীর অবস্থা থেকে। প্রাচীন রোমের সমাজে নারীদের  অধিকার, ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব খুব সামান্যই জাহির করতে পারতো। প্রাচীন রোমের সমাজে বুদ্ধিমতী ও বিচক্ষণ নারীদের অবস্থা ছিল উচ্চ শ্রেণীভুক্ত। তারা তাদের জন্ম কৌলিন্য ও উচ্চ স্তরে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন কে তাদের ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি বৃদ্ধির কাজে লাগাতো। তবে খ্রিস্টপূর্ব 44 থেকে খ্রিস্টপূর্ব 30 অব্দে রুমে সমাজে যে সর্বাত্মক পরিবর্তন সূচিত হয়েছিল তথাকথিক রোমক বিপ্লব সমাজ ব্যবস্থার একটা দিক পরিবর্তন ঘটিয়ে দিয়েছিল। এর ফলে ক্রমচ্চ বিন্যস্ত রোমান সমাজে একাকারে নিচে থাকা রোমান নারীদের কর্মতৎপরতা কে উসকে দিয়ে সমাজ ও রাজনীতিতে তাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে।

রোমের সমাজে নারীদের  গৃহমুখী করার প্রবণতা ক্রমশ কম ছিল। পিউনিক যুদ্ধে মানব সম্পদের হানি ঘটায় বহু পরিবারের কর্তৃত্ব চলে যায় বিধবা রমণীদের হাতে। তাছাড়া যুদ্ধ জয় এবং প্রজাতন্ত্র অবক্ষয়ে যুদ্ধে নারীদের রমনীর মনোভাব তাদের উত্থানকে সহজ করে দিয়েছিল। লিভি, সালাত, প্লিনির লেখা থেকে বেশ কয়েকটি বিদুষীর নাম পাওয়া যায় যেমন সিমপ্রেনিয়া, ক্লোদিয়া, তুরিয়া, ভোটুরিয়া, কনেরিয়া সম্রাট অগাস্টের পত্নী সেগনিয়া,নিরোর মা এগ্ৰিপ্পিনা প্রমূখ।

প্রাচীন রোমের নারীর অবস্থা

এদের অনেককেই রোমে রাজনীতিতে অংশ নিয়েছিলেন। সিম্পনিয়ার মত সংস্কৃতিবান, শিক্ষিত মহিলার জুলিমেলাভার এ নিয়ে সম্ভবত কাটালুনিয় ষড়যন্ত্র এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। অগাস্টারসের পত্নী লিভিয়া মুঘল সাম্রাজ্যের নুরজাহানের মতোই সিংহাসনের প্রশংসা পরিণত হয়েছিলেন। তবে তার প্রথম সন্তান টাইবেরিয়াস মায়ের এই সংবাদিত তথ্য একেবারেই সহ্য করেনি। একইভাবে মেসেলিনা,এগ্ৰিপ্পিনা,পাপ্পয়া,জুলিয়ান্তো তাদের স্বামী এবং সন্তানের ওপর নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব কায়েম করেছিলেন। তবে দুর্ভাগ্য যে এদের কারোই শেষ জীবন সুখের হয়নি।

কখনো কখনো তারা তাদের যৌন আবেদনকে রাজনৈতিক ক্ষমতার সোপান হিসেবে ব্যবহার করতেন। ক্লোডিয়াসের প্রথম পত্নী মেসেলিনা এরকম যৌন কেলেংকারীতে অভিযুক্ত ছিলেন। তিনি তার এক যুবা প্রেমিকে বিবাহ করে সম্ভবত রাজনৈতিক অবস্থান ঘটিয়ে ছিলেন। সিসেরো লিখেছেন যে ক্লোডিয়াসের ক্ষোভ হচ্ছে যথেচ্ছ ইন্দ্রিয় পরায়ণতা এবং যথেষ্ট পাপাচারে একটা ঘেরা টোপ।

প্রকৃতপক্ষে রোমের পুরুষরা নারীর কদর করত। লওদেতিও ক্রুরিয়া,সিরসা, এর প্রশস্তিতে বলা হয়েছে তুরিয়া ছিলেন রমের এক আদর্শ নারী যার মধ্যে ছিল আদর্শ, বিনয়, স্বাধীনতা, শিল্প, অনুরাগ, ভদ্র ইত্যাদি। শোনা যায় যে, লিউক্রিটিয়া টারকুইনাস সুপার কাপের পুত্র কতৃক ধর্ষিত হবার পর লজ্জা ঘৃণায় আত্মহত্যা করেছিলেন। দার্শনিক সোনেকার স্ত্রী পোলিনা সহমরণে যাওয়া চেষ্টা করেছিলেন।

অবশ্য রাজ পরিবারের মেয়েরা আচরণ দিয়ে সাধারণ মেয়েদের বর্ণনা করা ঠিক নয়। দাসীসহ নিম্ন শ্রেণীর নারীদের মধ্যে জীবন চর্চায় তেমন কোন পরিবর্তন আসেনি।

তারা কোম্পানির কাছে তাঁতী, কসাই ইত্যাদি পেশায় নিযুক্ত থাকতো। বেশ কিছু গরিব মহিলা পানশালা গুলিতে খাদ্য পরিবেশনের কাজেও নিযুক্ত হতেন। তাদের পরিশ্রমিক পরিবার পালন এক গ্রাম আচ্ছাদনের যথেষ্ট না হওয়ায় অদক্ষ নারী শ্রমিকদের একটা বড় অংশ গণিকা বৃত্তিকেই পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছিল ‌। অনেকেই আকার বাইরের তোরাদারে (ফোর্ণ) অভ্যথনার কাজ করত। দাসীরা ধনীদের বাড়িতে গৃহ সহলীর কাজ থেকে শুরু করে যেকোনো ধরনের ফরমাইশি এমনকি প্রভুর তরফের নানা রকমের ফরমাইশ মেটাতো। 

কখনো কখনো রোমান সমাজে একটা প্রকটতা দেখা যেত যেখানে সন্তান প্রতিপালনের আকাঙ্ক্ষা থেকে সন্তান অবাঞ্ছিত হবাই তাকে পরিত্যাগ করা হত। তাকে মেরে ফেলা হত। তারা অন্তত দাস হিসেবে বেঁচে থাকার স্বীকৃত পাবে। কিন্তু ভাবেনা যাই হোক না কেন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অনেকেই মারা পড়তো। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাল্য সন্তানদের এভাবে পরিত্যাগ করা হত। 

বিবাহ ও বিবাহ বিচ্ছেদে উচ্চ শ্রেণীভুক্ত রোমান মহিলাদের জীবনকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল। পূর্বে স্বামী তার স্ত্রীর ওপর কতৃত্ব প্রয়োগ করতে পারলেও সিসেরোর সময় থেকে বিবাহিত মহিলারা স্বামীর কতৃত্বের পরিবর্তে পিতার অধীনে থেকে যেত। বিবাহের ক্ষেত্রে পিতার অনুমোদনই যথেষ্ট ছিল। স্বামী স্ত্রীর বয়সের পার্থক্য ছিল গড়ে ১০ বছর কোন কোন ক্ষেত্রে বিবাহের ক্ষেত্রে চুক্তি স্বাক্ষর করা হত।

মেয়েদের সঙ্গে পুরুষদের আচরণের অনেক নিষেধাবক উপাদান যুক্ত হয়েছিল। কেউ কেউ তো প্রকাশ্যেই নারীদের পুরুষের সমমর্যাদার বিরোধীতা করেছিলেন। কখনো কখনো নারীদের প্রতি বিচিত্র সব অভিযোগ তোলা হত। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমগ্র গ্রাহক না হলেও মেনে নেওয়া হত। যদিও তা আইনগতভাবে নিষিদ্ধ ছিল। কখনো কখনো তারা কেটমার্জ ও পালন করত। স্বামী রাই একমাত্র বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে উদ্যোগ নিতে পারতো। অহেতুক কিছু কারণ দেখে স্ত্রীদের ত্যাগ করতে পারত। বিশেষ করে রাজ পুরুষের মধ্যে এই প্রবণতা ছিল সাধারণ। সিসেরোর সময় বিবাহ বিচ্ছেদের ব্যাপারটা খুব সহজ হয়ে গিয়েছিল। কারণ এ সময় থেকে নারীরা ও বিবাহ বিচ্ছিন্ন হতে পারত। 

সাম্রাজ্যিক মহিলাদের যথেষ্ট ফ্যাশন সচেষ্ট ছিল। সূক্ষ্ম এবং দামি পোশাকের খুব বেশি ব্যবহার না থাকলেও বেশ বিন্যদসর ক্ষেত্রে বেশ পরিপট্য ছিল। রূপচর্চা গহনা পরিধান সবকিছুই।

Share

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *