StudyMamu

Site is under construction some pages not work properly. Please bear with us.

পুটিং আউট সিস্টেম এর প্রধান বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো

পুটিং আউট সিস্টেম এর প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো।

প্রাক শিল্পায়ন সংক্রান্ত ‘Rural Putting Out System’ এর তত্ত্ব সাম্প্রতিক কালে ফ্র্যাঙ্কলিন মেন্ডেলস, এই এল জোনস, ম্যাক্সিন বার্গ, পি হাডসন, জে ক্লাম্বন, এম সোনেস্কার পিটার ক্রেদতে প্রমুখ পন্ডিত প্রাক শিল্পায়নের আবির্ভাবের প্রেক্ষিতে পুটিং আউট সিস্টেম এর উপস্থিতিকে প্রাধান্য দিয়েছেন। তাদের মূল বক্তব্য হল ষোড়শ শতক থেকে বিশ্ব বাজারের চাহিদা অত্যন্ত বৃদ্ধি পায়, ফলে গিল্ডের নিয়ন্ত্রনাধীন শহুরে উৎপাদকদের পক্ষে সেই চাহিদার যোগান দেওয়া সম্ভব হয়নি।

অন্যদিকে, সপ্তদশ-অষ্টাদশ শতকে ইওরোপে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, এনক্লোজার, ইত্যাদির কারণে আর্থিক দিক দিয়ে দুর্বল একটি কৃষিসমাজের উপস্থিতি, পশুচারণের অঞ্চলগুলিতে এবং অন্যত্র জমিহীন কৃষকদের উপস্থিতি এবং অন্যদিকে বাণিজ্য নির্ভর পুঁজিপতিদের বাজারে শিল্পদ্রব্যের চাহিদা অনুযায়ী গ্রামীন এলাকায় শিল্প স্থাপনের উদ্যোগ, প্রযুক্তিগত বিকাশ, এবং এই উদ্যোগী শিল্পপতিদের দ্বারা বাৎসরিক তথা মরসুমী ভিত্তিতে কৃষি ও শিল্প উৎপাদনের মধ্যে আর্থ-সামাজিক সমন্বয় সাধন আদি শিল্পায়নের বিকাশের জন্য একটি আদর্শ ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট রচনা করেছিল।

Putting Out System
Putting Out System ( পুটিং আউট সিস্টেম )

উদ্যোগী বণিক শিল্পপতিরা ‘Rural Putting Out System ( পুটিং আউট সিস্টেম ) বা গ্রামীন উৎপাদন ব্যবস্থা এর মধ্যে দিয়ে একদিকে শ্রমকে সংগঠিত করে এবং অন্যদিকে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী শিল্প উৎপাদনকে বাড়াতে থাকে।  কাঁচামালের সহজলভ্যতা, যথেষ্ট পরিমাণে শ্রমিকের উপস্থিতি, এবং বাণিজ্য পথের সঙ্গে যোগাযোগের ফলে এই প্রকারের গ্রামীণ উৎপাদনব্যবস্থা অল্প দিনের মধ্যেই সফল হয়েছিল। পুটিং আউট সিস্টেম এর প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলি নিম্নে আলোচনা করা হলো –

  1. এই শিল্পগুলি স্থানীয় বা জাতীয় বা দেশীয় বা আর্ন্তজাতিক বাজারের চাহিদার দিকে লক্ষ রেখে গড়ে উঠত।
  2. বাজারের চাহিদা দেখে এক্ষেত্রে সম্ভ্রান্ত বণিকগণ উদ্যোগপতির ভূমিকা পালন করতেন।
  3. পুটিং আউট সিস্টেম এর প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল এটি নগরের বাইরে অবস্থিত হওয়ার ফলে এই শিল্পগুলি গিল্ডের নিয়ন্ত্রনের বাইরে ছিল। ফলে শিল্পপতিরা অনেক বেশী স্বাধীনতা ভোগ করতেন।
  4. এই শিল্পপতিরা পশম বা শন এর মতো কাঁচামালগুলি সংগ্রহ করে সেগুলিকে গ্রামাঞ্চলের তাঁতি পরিবারগুলির কাছে পৌঁছে দিত। স্ত্রী-সন্তান সহ পরিবারের সকলে মিলে সেই পশম বা শনকে বুনে কাপড়ের খান তৈরী করত এবং সেগুলি শ্রমের মজুরির বিনিময়ে শিল্পপতি- বণিক-উদ্যোগপতিদের হাতে তুলে দিত। তারপর সেই কাপড় একে একে ব্লিচিং বা মার দেওয়া বা ধোলাই এর জন্য পৃথক শ্রমিক পরিবারদের দেওয়া হোত।
  5.  শেষে দেওয়া হতো রঙের শিল্পীদের কাছে তারা পারিবারিক শ্রমের সাহায্যে কাপড়ের – উৎপাদনকে সম্পূর্ণ করত এবং পণ্যগুলিকে পুনরায় শিল্পপতি-বণিক-উদ্যোগপতিদের হাতে তুলে দিত।
  6. এইভাবে পণ্য উৎপাদন সম্পূর্ণ হলে শিল্পপতিরা সেই পণ্য বিক্রীর জন্য তাদের পাইকার এজন্টদের হাতে তুলে দিত।
  7. পুটিং আউট সিস্টেম এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল কৃষিকাজের মরসুম যখন থাকত না তখন এরূপ শ্রম দান করে গ্রামীণ পরিবারগুলি দারিদ্র্যের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছিল, পাশাপাশি নগরের বাইরে গ্রামে এই কারখানাগুলি স্থাপিত হওয়ায় উদ্যগপতি এবং শ্রমিক উভয়েই গিল্ডের প্রভুত্ব বা নিয়ন্ত্রনের বাইরে থাকতে পেরেছিল।
ম্যান দ্য ব্রায়েস, রেগলে প্রমুখ পন্ডিত মনে করেন যে, অষ্টাদশ শতকে এই Putting Out System বিকাশের সঙ্গে উনবিংশ শতকে বৃহৎ নগর গড়ে ওঠার মধ্যে একটি সম্পর্ক ছিল। ইংল্যান্ড, ফ্ল্যান্ডার্স অঞ্চল, ছাড়াও ফ্রান্স, জার্মানি ও সুইৎজারল্যান্ডে বস্ত্রশিল্প, ধাতু শিল্প, ঘড়ি নির্মাণ শিল্প এবং কয়লা উত্তোলনকে কেন্দ্র করে এই সকল গ্রামীন শিল্পব্যবস্থার বা ‘পুটিং আউট সিস্টেম’ এর বিকাশ ঘটেছিল।
    Share

    Leave a Comment

    Your email address will not be published. Required fields are marked *