StudyMamu

Site is under construction some pages not work properly. Please bear with us.

ভারতবর্ষের ভৌগোলিক অবস্থান ব্যাখ্যা করো ।

 ভারতবর্ষের ভৌগোলিক অবস্থান ব্যাখ্যা করো


 দেশ বা জাতির প্রকৃত ইতিহাস জানতে হলে সর্বাগ্রে সেই দেশের যথার্থ ভৌগোলিক পরিচয় সম্পর্কে অবহিত হওয়া প্রয়োজন।বহু যুগ যুগ ধরে ভারতবর্ষ ইতিহাসে এক মর্যাদাপূর্ণ স্থান অধিকার করে আছে।




   ভারতবর্ষ তথা ভারত সম্পর্কিত নামের পরিচয় মেলে যীশুখ্রিস্টের জন্মের বহুকাল আগের লেখা বিদেশীয় (বিশেষত গ্রিক ও চীনাদের) এবং দেশীয় কিছু গ্রন্থ ও লেখমালায়। এ ব্যাপারে সবচেয়ে প্রাচীন যে নামটি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয় তা হল ‘ইন্দোই’, যা পরবর্তীকালে ‘ইন্দিয়া’ এবং আরো পরে ‘ইন্ডিয়া’ নামে পরিচিতি লাভ করে। প্রসঙ্গত বলা যায় খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের শেষ বা পঞ্চম শতকের গোড়ার দিকের মানুষ ও মিলিতসের অধিবাসী হেকাটেয়াস তাঁর গ্রন্থে এবং খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতকের প্রখ্যাত গ্রিক পণ্ডিত হেরোডোটাস তাঁর ইতিহাস গ্রন্থে ‘ইন্দোই’ শব্দের উল্লেখ করেছেন।




  ‘ইন্দোই’-এর অবস্থান ছিল তখন সিন্ধুনদের ওপরে, যা বর্তমানকালের সিন্ধু প্রদেশের সঙ্গে অভিন্ন বলে মনে হয়। কিন্তু এর শতাধিক কাল পরে ‘ইন্দোই’ বলতে বোঝাত আরো ব্যাপকতর এলাকাকে।গ্রিক লেখকরা ইন্দোই বা ইন্দিয়া বলতে সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশকে বুঝিয়েছেন।




  বিদেশীয় লেখ ও গ্রন্থাদিতে ভারতবর্ষ প্রসঙ্গে ‘ইন্দোই’ ছাড়াও ‘হিন্দু’ বা ‘সিন্ধু’ নামের উল্লেখ পাওয়া যায়। পারস্যের আকিমেনীয় শাসক প্রথম দরায়ুসের নক্শ-ই রুস্তম লেখতে তাঁর শাসনাধীন প্রদেশ হিসাবে হিন্দু (সিন্ধু)-র নাম আছে, যার তখন অবস্থান ছিল সিন্ধু নদের ওপরে (বর্তমান সিন্ধু প্রদেশ)। প্রসঙ্গত বলা যায় কয়েকটি পারসিক ও আরবীয় গ্রন্থে ‘হিন্দুস্তান’-এর উল্লেখ আছে। ‘হিন্দুস্তান’ বলতে প্রথম দিকে নিম্ন সিন্ধ অঞ্চলকে বোঝানো হত বলে পণ্ডিতরা মনে করেন। অবশ্য ধীরে ধীরে নামটি সমগ্র উপমহাদেশের অর্থে ব্যবহৃত হতে থাকে।




   বলা যায় বিতস্তা (ঝিলাম), বিপাশা, শতদ্রু, ইরাবতী (রাভি) ও চেনাব-সিন্ধুনদের এই পঞ্চশাখাকে বলা হত পঞ্চসিন্ধু। এর সঙ্গে গঙ্গা ও যমুনাকে যুক্ত করে বলা হত সপ্তসিন্ধু অঞ্চল, যা সমকালীন বিদেশীয়দের মুগ্ধ করেছিল। 




  বর্তমান কালের ভারত, নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সামগ্রিক ভূখণ্ডই হল ভারতীয় উপমহাদেশ অর্থাৎ অবিভক্ত ভারতবর্ষ। মৌর্য আমলে সমগ্র ভারত উপমহাদেশ খুব সম্ভবত পরিচিত ছিল জম্বুদ্বীপ নামে।




  ভারতীয় প্রাচীন সাহিত্য পুরাণ (বিশেষত অগ্নি, মৎস্য ও পদ্ম)-এও ভারতবর্ষ অর্থে জম্বুদ্বীপের ব্যবহার লক্ষ করা যায়। আবার মহাভারত (আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৪০০ খ্রিস্টীয় ৪০০ অব্দ)-এর এক জায়গায় জম্বুদ্বীপ চারটি মহাদেশ সূচক দ্বীপের একটি এবং এর একটি বর্ণ বা অংশের নাম ভারতবর্ষ বলে অভিহিত হয়েছে।




   এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণে একটি ত্রিভুজাকৃতি উপদ্বীপের অংশ হিসাবে ভারতবর্ষ বিরাজমান। এই মহাদেশের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও মর্যাদাশীল স্থান দখল করে। আছে এই উপদ্বীপটি।




 ভারতবর্ষ চারদিকেই বেষ্টিত রয়েছে প্রাকৃতিক সীমারেখা দ্বারা। এর পূর্বদিকে বঙ্গোপসাগর, পশ্চিমে আরবসাগর এবং দক্ষিণে ভারত মহাসাগর বিদ্যমান। এছাড়া উত্তরে সুউচ্চ হিমালয় পর্বত ভারতবর্ষকে বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে নিরাপদ রেখেছে। এইভাবে পৃথিবীর অন্যান্য অংশ থেকে ভারতবর্ষ ভৌগোলিক দিক থেকে পৃথক। আয়তনের দিক থেকে ভারতবর্ষ একটি বিশাল দেশ। 


  বিশাল আয়তনের দরুন এটি ভারতীয় উপমহাদেশ নামেই সমধিক পরিচিত। সাধারণভাবে ধরে নেওয়া হয় যে, ভারতের ভৌগোলিক সীমানা পূর্ব থেকে পশ্চিমে প্রায় ২,৫০০ মাইল এবং উত্তর থেকে দক্ষিণে ২,০০০ মাইল বিস্তৃত। মোট এলাকার আয়তন ১,৮০০,০০০ বর্গ মাইল। পৃথিবীর মধ্যে আয়তনের দিক থেকে ভারত সপ্তম স্থানের অধিকারী। রাশিয়াকে বাদ দিলে ইওরোপের বাকি অংশ অথবা গ্রেট ব্রিটেনের কুড়িগুণ করলে যে আয়তন দাঁড়ায় তার সমান হল অবিভক্ত ভারতবর্ষের আয়তন।

  









Share

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *