StudyMamu

Site is under construction some pages not work properly. Please bear with us.

সন্ত্রাসবাদ এর বৈশিষ্ট্য

সন্ত্রাসবাদ এর বৈশিষ্ট্য / সন্ত্রাসবাদের বৈশিষ্ট্য।

সন্ত্রাসবাদের নিম্নলিখিত কতগুলি বৈশিষ্ট্য রয়েছে –

হিংসা

হিংসা সন্ত্রাসবাদ এর বৈশিষ্ট্য। নিষ্ঠুর কোন হিংসাত্মক ঘটনা সন্ত্রাসবাদের অন্যতম শর্ত। সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিন অ্যান্ড ইন্টারন্যাশানাল স্টাডিজ’র ওয়াল্টার ল্যা্যুয়ারের ভাষায় সন্ত্রাসবাদের অন্যতম সাধারণ বৈশিষ্ট্য হল যে এর সঙ্গে হিংসা অথবা হিংসার হুমকি ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকে। তবে এমন ভাবার কোন কারণ নেই যে অন্য কোন ঘটনার ক্ষেত্রে হিংসা কোন সাধারণ বৈশিষ্ট্য রূপে কাজ করে না।

মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব

সন্ত্রাসবাদ সাধারণভাবে আঘাতকারী জনসমাজ দেশ বা নাগরিক সমাজকে – মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করার চেষ্টা করে। কোন একটি ঘটনার ভয়াবহতা যাতে করে বিপুল সংখ্যক মানুষের মনে দীর্ঘদিন ধরে বজায় থাকে এরূপ লক্ষ্য নিয়েই সন্ত্রাসবাদ প্রয়োগ করা হয়।

রাজনৈতিক লক্ষ্য

রাজনৈতিক লক্ষ্য সন্ত্রাসবাদ এর আর এক বৈশিষ্ট্য। সন্ত্রাস কার্যকর করা হয় সুনির্দিষ্ট কোন রাজনৈতিক লক্ষ্য নিয়ে (যেমন কাশ্মীরকে স্বাধীন করার লক্ষ্য নিয়ে লস্কর-ই-তৈবা অনেক ঘটনা ঘটায়)। সন্ত্রাসবাদীদের কাছে তাদের অভিষ্ট লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থতা সাধারণ মানুষের জীবনের থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে বস্তুত এখানে রাজনৈতিক লক্ষ্য এবং ধর্মীয় – আবেগ অনেক ক্ষেত্রেই সম্পৃক্ত হয়ে যায় ( যেমন, ধর্মীয় পবিত্রভূমি ইজরায়েল বা জেরুজালেমকে অধিকারে রাখার মত ঘটনাকে কেন্দ্র করে উগ্রপন্থী কার্যকলাপ দানা বাধে ওয়ারল্ড ট্রেড সেন্টার ধ্বংস করার জন্য অটো তাঁর সহকারীদের ধর্মীয় আবেগকেই জাগত করে জেহাদের ডাক দেন)।

আক্রমণাত্মক

ইচ্ছাকৃতভাবে অসামরিক ব্যক্তিদের উপর আক্রমণ অধিকাংশ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ মাত্রায় ভীতির সঞ্চার করার জন্য সন্ত্রাসবাদীরা সাধারণ অসামরিক মানুষকে আক্রমণের লক্ষ্য রূপে নির্ধারণ করে মহিলা, শিশু, – বুদ্ধ কেউই তাদের আক্রমণের হাত থেকে নিস্তার লাভ করতে পারে না। রাষ্ট্রবিরোধী সন্ত্রাসে এই পদ্ধতি অবলম্বন করা হয় যাতে করে চাপে পড়ে (মূলত রাজনৈতিক) রাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদীদের দাবী মেনে নেয়

ছদ্মবেশী 

ছদ্মবেশী, সন্ত্রাসবাদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। সন্ত্রাসবাদীরা সাধারণভাবে ছদ্মবেশে যুদ্ধ করে থাকে, সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশে আঘাত করার সুবিধা সহজে সামরিক বাহিনী তাদের আক্রমণ করতে পারবে না, অন্যদিকে তারা নির্বিচারে যে খাউকে অঘাত করতে পারবে। লুকিয়ে রিমোটের মাধ্যমে বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো, মাইন পেতে গাড়ি উড়িয়ে দেওয়া এই ধরণের আক্রমণেই সন্ত্রাসবাদীরা বেশী অভ্যস্ত ছিল। তবে আধুনিকে কালে তাদের আক্রমণের চরিত্র পাল্টাচ্ছে এবং তারা সম্মুখ এবং প্রত্যক্ষ সংগ্রামে অবতীর্ণ হতে পিছপা হচ্ছে না। ২০০৮’র নভেম্বর মাসে মুম্বাই এবং ২০০৯’র ফেব্রুয়ারী মাসে লাহৌরে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট দলের উপর সন্ত্রাসবাদীদের আক্রমণ ছিল সরাসরি এবং সামনে থেকে।

সন্ত্রাসবাদ

নীতিবিরুদ্ধতা

সরকার পক্ষের দলিল অনুসারে সন্ত্রাস নীতিবিরুদ্ধ, আইনবিরুদ্ধ এবং অস্বীকৃত ওয়ারল্ড ট্রেড সেন্টার ধ্বংসের মধ্যে এই নীতিবিরুদ্ধতা রয়েছে আবার অন্যদিকে এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া স্বরূপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন আল কায়দা এবং তাদের নেতা লাদেনকে মারার জন্য আফগানিস্তানের উপর নির্বিচার বোমা বর্ষণ শুরু করল তখন তা বৈধ কেননা তা রাষ্ট্র কর্তৃক বৈধতা প্রাপ্ত এবং সাধারণ নাগরিকদের জীবন রক্ষার্থে তা পরিচালিত। অর্থাৎ, সাধারণভাবে রাষ্ট্র কর্তৃক পরিচালিত হিংসাত্মক ঘঠনায় যদি সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ মানুষ আক্রান্ত হয় তাহলে সেই ঘটনা সন্ত্রাস রূপে রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত হয় না।

সন্ত্রাস সংগঠন

বস্তুতপক্ষে সন্ত্রাসবাদ হল একটি নিন্দাসূচক শব্দ রাষ্ট্রবিদদের মতে অনেক ক্ষেত্রেই রাষ্ট্র বা কোন সংগঠন বিরুদ্ধাচারণকারী গোষ্ঠী বা সংঘ বা সংগঠনের গায়ে এই তকমা লাগিয়ে দেয়। একটি বিখ্যাত প্রবাদ অনুসারে One man’s terrorist is another man’s freedom fighter’ অনেক ক্ষেত্রে আবার দেখা যায় যে কোন একটি বিশেষ রাষ্ট্র কোন একটি বিশেষ সময়ে যে গোষ্ঠীকে শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াইএ কাজে লাগাচ্ছে, তাদেরকেই আবার পরবর্তী ক্ষেত্রে সন্ত্রাসবাদী রূপে চিহ্নিত করছে কেননা সেই গোষ্ঠী তখন সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মলয় দ্বীপের জাপান বিরোধী সৈন্যবাহিনী ব্রিটিশ সৈন্যবাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল, পরে ঐ বাহিনীর উত্তরাধিকারী মালায়ান রেসে’স লিবারেশন আর্মি ব্রিটিশদের দ্বারা সন্ত্রাসবাদী রূপে চিহ্নিত হয়।

গত শতকের সত্তর আশি দশকে রোনাল্ড রেগন সহ মার্কিন নেতারা সোভিয়েতদের সঙ্গে লড়াই’র সময় আফগান মুজাহিদিনকে স্বাধীনতা সংগ্রামী রূপে চিহ্নিত করেছিলেন, আবার সেই আফগান গোষ্ঠীর পরবর্তী প্রজন্ম যখন নানান কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধেই অস্ত্র ধরে বসল তখন তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি বুশের চোখে সন্ত্রাসবাদীতে পরিণত হল। উল্টোটাও হয় নেলসন ম্যান্ডেলাকে পশ্চিমী রাষ্ট্রগুলি একদা সন্ত্রাসবাদীরূপে চিহ্নিত করেছিল, পরে তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন এবং দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রনায়ক হিসাবে আর্ন্তজাতিক সম্মান লাভ করেন। সুতরাং বলা যায় সন্ত্রাসবাদ এবং সন্ত্রাসবাদী এই অভিধাদুটি অনেক সময়ই ব্যক্তি নিরপেক্ষ হিসাবে ব্যবহৃত হয় না।

Share

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *