StudyMamu

Site is under construction some pages not work properly. Please bear with us.

জৈন ও বৌদ্ধ ধর্মের মধ্যে সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য গুলি আলোচনা কর

জৈন ও বৌদ্ধ ধর্মের মধ্যে সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য গুলি আলোচনা কর।

জৈন ও বৌদ্ধ ধর্মের সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য উভয়ই লক্ষ করা যায়। বৌদ্ধ ও জৈন—উভয় ধর্মের উদ্ভব ঘটেছিল প্রায় একই সময়ে এবং উদ্ভবের এলাকাও ছিল একই (পূর্ব ভারত) । উভয় ধর্মেরই প্রবক্তারা ছিলেন ক্ষত্রিয় গোষ্ঠীর মানুষ। প্রচলিত বৈদিক ব্রাহ্মণ্য ধর্মের বিরুদ্ধে উভয় ধর্মেই হতাশা বোধ বিরাজমান। তাই ঐ ধর্মের বিরুদ্ধে এই নতুন দুটি ধর্মেই তীব্র জেহাদ ঘোষিত হয়েছিল।

জৈন ও বৌদ্ধ ধর্মের মধ্যে সাদৃশ্য ছিল উভয় ধর্মই অহিংসার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে এবং জাতিভেদ বা অস্পৃশ্যতাকে অস্বীকার করে মানুষের মধ্যে সমতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে। বৌদ্ধ ও জৈন উভয় ধর্মই জন্মান্তরবাদে বিশ্বাস ছিল। যাগযজ্ঞ, পশুবলি ও বর্ণাশ্রম প্রথার বিরোধী ছিল উভয় ধর্মই।

অহিংসা ছিল জৈন ও বৌদ্ধ ধর্মের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য। বেদের কর্তৃত্বকে অস্বীকার করেছিল উভয় ধর্ম। পশুবলি প্রথারও বিরোধিতা করা হয়েছিল এগুলিতে। বর্ণাশ্রমের বিরোধী ছিল বৌদ্ধ ও জৈন ধর্ম উভয়েই। প্রধানত শহরাঞ্চলের নিম্নশ্রেণীর মানুষকে আশ্রয় করে এই দুটি ধর্ম প্রসারলাভ করেছিল। উভয় ধর্মের ওপর উপনিষদের যুগের কর্মফলবাদ তত্ত্বের প্রভাব পড়েছিল বিশেষভাবে।

জৈন ধর্ম ও বৌদ্ধ ধর্মের মধ্যে মিল ও অমিল ছিল –উভয় ধর্মের মধ্যেই বিভাজন ঘটেছিল। জৈন ধৰ্ম যেমন শ্বেতাম্বর ও দিগম্বর সম্প্রদায়ে, বৌদ্ধ ধর্ম তেমনি পরবর্তীকালে মহাযান ও হীনযান নামে দুটি সম্প্রদায়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। সংস্কৃত ভাষার পরিবর্তে স্থানীয় ভাষায় নিজ নিজ ধর্মপ্রচারে ব্রতী হয়েছিলেন উভয় ধর্মের প্রবক্তারা।

কয়েকটি বিষয়ে অবশ্য জৈন ধর্ম ও বৌদ্ধ ধর্মের মধ্যে বৈসাদৃশ্য বা পার্থক্য বিদ্যমান ছিল। বুদ্ধদেব তাঁর জ্ঞানলাভের সূত্র ধরে অনুভব করতে সক্ষম হয়েছিলেন যে কঠোর কৃচ্ছ্রসাধনের মাধ্যমে মুক্তিলাভ সম্ভব নয়। তাই তাঁর ধর্মে ‘মধ্যপন্থা’ প্রাধান্য পেয়েছিল। অপরদিকে যে কঠোর কৃচ্ছসাধনের পথকে তিনি বর্জন করেছিলেন, জৈন ধর্মে তাকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছিল।

অহিংসা নীতি উভয় ধর্মে গৃহীত হলেও এর কঠোরতাকে বৌদ্ধ ধর্মে বর্জন করা হয়েছিল। অথচ জৈন ধর্মে তা প্রযুক্ত হয়েছিল কঠোরভাবেই। ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কীটপতঙ্গের প্রাণনাশ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল এই ধর্মে। এছাড়া জড় পদার্থের মধ্যেও জীবনের অস্তিত্বকে জৈন ধর্ম স্বীকার করেছিল, যা বৌদ্ধ ধর্মে গৃহীত হয়নি। গৌতম বুদ্ধ কেবলমাত্র জীব বা প্রাণী হত্যারই বিরোধী ছিলেন। জৈনধর্মে কঠোর অহিংসনীতির কথা বলা হয়েছে। জৈনরা জীবকুলের পাশাপাশি জড়বস্তুতেও প্রাণের অস্তিত্বে বিশ্বাসী ছিলেন।

Share

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *