টীকা লেখ – পাদ টীকা
গবেষক লেখার মধ্যে প্রয়োজনভিত্তিক তথ্যসূত্রে উল্লেখ করে পাদটীকার ( Footnotes/ Endnotes) সাহায্য নিয়ে থাকেন। নিজের মতকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য সারণী বা রেখচিত্র বা ডায়েগ্রাম বা ছবি তিনি ব্যবহার করতে পারেন। এবং শেষে তিনি একটি বিস্তারিত গ্রন্থপঞ্জী বা Bibliography‘ প্রদান করেন যেখানে তাঁর গবেষণাপত্রে ব্যবহৃত সকল প্রাথমিক উপাদান ও গৌণ উপাদান বা গ্রন্থপঞ্জীর নাম নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে প্রকাশ করা হয়। এছাড়াও একটি সুদৃশ ও প্রাসঙ্গিক প্রচ্ছদ নির্মাণও এই সজ্জার অংশ।
![]() |
পাদ টীকা বা Footnote |
অতঃপর সমন্বয়মূলক কাজে তিনি তার লব্ধ বৈধ ও সত্য তথ্যগুলিকে চয়ন করবেন এবং সেগুলিকে যথাযথভাবে অধ্যায় বা বিষয়ভিত্তিক সাজাবেন। এরপর সাজানো তথ্যগুলিকে অনুধাবন, ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ করে সেগুলিকে নিজের মতানুসারে অর্থবহ রূপদান করবেন। এখানে তিনি যুক্তির প্রয়োগ ঘটিয়ে তার সিদ্ধান্তে আসার চেষ্টা করবেন।
বৌদ্ধিক অনুশীলনের মধ্যে দিয়ে গবেষণার বিষয়ে নতুন কোন তত্ত্ব খাড়া করবেন বা কার্যকারণের উপর নির্ভর করে নতুন কোন সূত্র বা নিয়মের প্রতিষ্ঠা করবেন। গবেষণাপত্র তৈরী করার ক্ষেত্রে একটি কৌশলগত পরিকাঠামো অনুসরণ করা যেতে পারে। তবে এই কাঠামো অনমনীয় নয়। গবেষভার মূল বিষয়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে গবেষণাপত্রটির গঠন বা অবয়বটি নির্মাণ করতে হয়। এই অবয়বটি নিম্নলিখিত অংশ বা ভাগ সহযোগে গঠিত
১) শিরনাম বা শীর্ষক ( Title),
২) মুখবন্ধ বা ভূমিকা এবং কৃতজ্ঞতা স্বীকার( Preface with acknowledgment)।
৩) সূচীপত্র এবং চিত্র, মানচিত্র ইত্যাদির তালিকা (Table of Contents and list of figures, maps, illustrations, etc)।
৪) গবেষণাপত্রের মূল অংশ ( Text) যেখানে পরপর ভূমিকা, অধ্যায়ে বিন্যস্ত মূল অংশ এবং সিদ্ধান্ত বা উপসংহারটি থাকবে (Introduction, Main Body and Conclusion), এবং
৫) উপাদানের উল্লেখ (References) যার মধ্যে স্থান পাবে প্রাথমিক ও গৌণ উপাদানের নামের তালিকা।
এছাড়াও গবেষণাপত্রে উল্লেখিত বা ব্যবহৃত অভিধা বা পরিভাষামূলক শব্দকোষ (Glossary) এবং নির্ঘণ্ট (Index) গবেষক প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারেন। মূল অংশটিতে লেখক ব্যবহৃত তথ্যসূত্রের উল্লেখ করে পাদটীকা এবং অন্তটীকাও ব্যবহার করবেন। এখানে একটি অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র বা গৌণ গবেষণার সম্ভাব্য চলন দৃষ্টান্ত রূপে তুলে ধরার চেষ্টা করা হল।
খেয়াল করলে দেখা যাবে যে প্রাথমিক গ্রন্থপঞ্জীর তুলনায় এই চূড়ান্ত গ্রন্থপঞ্জীতে অধিক সংখ্যক গ্রন্থের বা প্রবন্ধের তালিকা রয়েছে যার অর্থ গবেষণা করতে গিয়ে গবেষক নতুন কিছু সন্ধান পেয়েছেন তা ব্যবহার করেছেন।
গবেষণাপত্রের মূল অংশটি দেবার সময় গবেষক তাঁর তথ্যকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য তথ্যসূত্রগুলিকে পাদটীকা বা Footnote এর মাধ্যমে উল্লেখ করবেন যাতে করে সেই স্বাক্ষাটিকে সুপ্রতিষ্ঠিত করা যায় এবং তিনি নিজে Plagiarism’ মোচুরিয়া দোহে দুষ্ট না হন। পাদটীকা/ প্রান্তটীকা প্রদানের মধ্যে দিয়ে লেখকের সততা প্রকাশিত হয়ে থাকে। গবেষণাপত্রের একটি স্থানে পাদটাকা ব্যবহারের একটি দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হলো
পাদটীকায় ব্যবহৃত — ‘ibid’ আসলে লাতিন শব্দ ‘ ibidem এর সংক্ষিপ্ত রূপ যার অর্থ in the same work? অর্থাৎ পূর্বোক্ত গ্রন্থ, এছাড়াও পূর্বোক্ত গ্রন্থ বোঝাতে ” loc cit (loco ciato) op. cit (opere citato)’ ইত্যাদি পরিভাষাগুলিও ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও p এবং pp. দিয়ে বোঝানো হয় সুনির্দিষ্ট পৃষ্ঠা নং এবং সুনির্দিষ্ট পৃষ্ঠা থেকে। এছাড়াও ‘supra’ বলতে উপরে, ‘infra’ বলতে নীচে এবং ‘passim’ বলতে সমগ্র কাজ জুড়ে ছড়িয়ে থাকা বোঝানো হয়।