StudyMamu

Site is under construction some pages not work properly. Please bear with us.

স্পেনের গৃহযুদ্ধে বিদেশি শক্তিবর্গের ভূমিকা

স্পেনের গৃহ যুদ্ধে (১৯৩৬-৩৯) বিদেশী শক্তিবর্গের ভূমিকা বিশ্লেষণ কর। স্পেনের গৃহযুদ্ধে বিদেশী শক্তিদের ভূমিকা।

স্পেনের গৃহযুদ্ধ কেবলমাত্র স্পেনের সীমান্তে সীমাবদ্ধ ছিল না, তা ক্রমশ একটি ক্ষুদ্র বিশ্বযুদ্ধে পরিণত হয়। স্পেনের গৃহ যুদ্ধে বিদেশী শক্তি (শক্তিবর্গ) অংশ নেয়। স্পেনের গৃহযুদ্ধ হয় ১৭ জুলাই, ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দ। বিদ্রোহী ফ্র্যাঙ্কোকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছিল ইতালি ও জার্মানি। প্রায় ১৫০,০০০ ইতালিয় সৈন্য স্পেনের বিদ্রোহীদের হয়ে যোগ দেয়। জার্মানি ট্যাঙ্ক, কামান, বন্দুক ও অন্যান্য রণসম্ভার নিয়ে ফ্র্যাঙ্কোকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে। জার্মানির পাঁচ হাজার বিমান সেনা এই যুদ্ধে অংশ নেয়।

ইতালি ও জার্মানি নিজেদের স্বার্থে এই গৃহযুদ্ধে বিদ্রোহীদের হয়ে অংশ নেয়। এই দুই একনায়কতন্ত্রী দেশের উদ্দেশ্য ছিল তাদের সাহায্যে জেনারেল ফ্র্যাঙ্কো জয়লাভ করলে স্পেনে একনায়কতন্ত্রী সরকার গড়ে উঠবে। ফলে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ফ্যাসিবাদী শক্তি জোরদার হয়ে উঠবে। মুসোলিনীর উদ্দেশ্য ছিল ফ্যাঙ্কোর মাধ্যমে ইতালির প্রভাব বাড়লে ভূমধ্যসাগর অঞ্চলে তার শক্তি বৃদ্ধি পাবে। হিটলারের উদ্দেশ্য ছিল আকরিক লোহ তামা স্পেন থেকে সংগ্রহ করা। ডঃ টেলরের মতে জার্মানির আসল উদ্দেশ্য ছিল ফ্রান্স ও ইতালির মধ্যে বন্ধুত্বের মধ্যে ফাটল ধরানো।

সোভিয়েত সরকার স্পেনের প্রজাতন্ত্রের হয়ে সাহায্য দিয়েছিল। কারণ তার উদ্দেশ্য ছিল প্রতি বিপ্লবের হাত থেকে স্পেনের ক্ষমতাসীন প্রজাতান্ত্রিক সরকারকে রক্ষা করা। স্পেনে ফ্যাসিবাদ জয়লাভ করলে তা আন্তর্জাতিক সাম্যবাদের ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক হবে তা রাশিয়া অনুভব করেছিল। রাশিয়া ১৩৬টি উড়োজাহাজ, ৬০,০০০ রাইফেল, ৩৭২৭টি মেশিনগান নিয়ে সরকারকে সাহায্য করেছিল।

কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হল দুই গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য সম্পন্ন দেশ ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স এই গৃহযুদ্ধে নিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করেছিল। তারা প্রজাতান্ত্রিক সরকারকে কোন সাহায্য দেয়নি। স্পেনে এই দুই দেশের পুঁজির লগ্নী ছিল। তারা সাম্যবাদের অগ্রগতিতে ভীত হয়। এছাড়াও তারা মনে করেছিল স্পেনের গৃহযুদ্ধে জেনারেল ফ্র্যাঙ্কো জয়লাভ করবে। তাই তারা ফ্র্যাঙ্কোর বিরোধিতা করে ভবিষ্যতে তাদের স্বার্থকে বিপন্ন করতে চায়নি। কিন্তু গণতান্ত্রিক এই দুই দেশের সাধারণ জনগণ প্রজাতান্ত্রিক সরকারকে সমর্থন করেছিল। ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের উদ্যোগে ২৭টি দেশ এক সম্মেলনে ঠিক করে যে স্পেনের গৃহযুদ্ধে তারা নিরপেক্ষতা অবলম্বন করবে।

ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের নেতিবাচক মনোভাবের জন্য এই গৃহযুদ্ধে জেনারেল ফ্র্যাঙ্কো জয়লাভ করেন। ঐতিহাসিক টেলরের মতে স্পেনে ফ্র্যাঙ্কের সাফল্যের মূলে ছিল ব্রিটিশ ও ফরাসীদের নিষ্ক্রিয়তা। ইতালি ও জার্মানি যেভাবে জেনারেল ফ্র্যাঙ্কোকে সাহায্য নিয়েছিল রাশিয়ার পক্ষে সে ধরনের সাহায্য প্রজাতান্ত্রিক সরকারকে দেওয়া সম্ভব হয়নি। ১৯৩৯ সালের ৪ঠা এপ্রিল স্পেনে জেনারেল ফ্র্যাঙ্কোর নেতৃত্বে একনায়কতন্ত্রী সরকার গঠিত হয়। ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স এই সরকারকে স্বীকৃতি দেয়। এছাড়া ইতালি, জার্মানি, পর্তুগাল ইত্যাদি দেশ পূর্বেই ফ্র্যাঙ্কো সরকারকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। ১৯৩৬-৩৯ খ্রিস্টাব্দের স্পেনের গৃহ যুদ্ধে বিদেশী শক্তিবর্গের (শক্তিদের) ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। স্পেনের গৃহযুদ্ধে বিদেশি শক্তির ভূমিকা অনেকাংশেই সাহায্য করেছিল। 

Share

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *