StudyMamu

Site is under construction some pages not work properly. Please bear with us.

ইউরোপে প্রোটেস্টান্ট ধর্মসংস্কার আন্দোলনের প্রভাব আলোচনা করো

ইউরোপে প্রোটেস্টান্ট ধর্মসংস্কার আন্দোলনের প্রভাব আলোচনা করো ।

ভূমিকা:

ষোড়শ শতকের প্রথমার্ধে জার্মানিতে মার্টিন লুথার (Martin Luther CE 1483 1517)-এর নেতৃত্বে গির্জার বিবিধ দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রোটেস্টান্ট (Protestant) ধর্মসংস্কার আন্দোলনের সূচনা হয়। এই সংস্কার আন্দোলনের ফলে খ্রিস্টান মতাবলম্বীগণ দুটি পৃথক শিবিরে ভাগ হয়ে যান এবং এই ভাগকে কেন্দ্র করে জার্মানি তথা পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যে ধর্মীয় যুদ্ধ (Religious wars) সংঘটিত হয়। অবশেষে অগসবুর্গের সন্ধি (CE 1555, Treaty of Augsburg) দ্বারা এই যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে। 

ইউরোপে প্রোটেস্টান্ট ধর্মসংস্কার আন্দোলনের প্রভাব।

মার্টিন লুথার তাঁর সংস্কার আন্দোলন ফলপ্রসূ করার উদ্দেশ্যে আঞ্চলিক শাসকদের সাহায্য প্রার্থনা করেন এবং জার্মানির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতি বছর রোমে অর্থ প্রেরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন। গুটেনবার্গের নবউদ্ভাবিত ছাপাখানার সহায়তায় লুথার অনেকগুলি পুস্তিকা (Pamphlets) রচনা করেন এবং জার্মান জনসমক্ষে গির্জা ও পোপের অনিয়মগুলি উদ্ঘাটন করেন। এই পুস্তিকাগুলি হল :

  • ১। Open Letter to the Christian nobility of the German nation (জার্মান) বংশোদ্ভূত খ্রিস্টান অভিজাতদের উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি)।
  • ২। Babylonian Captivity of the Church (গির্জার ব্যাবিলনীয় বন্দিদশা)।
  • ৩। On the Freedom of A Christian Man (একজন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীর স্বাধীনতা)।

লুথারের বক্তব্য ও রচনা জার্মানি এবং উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের অন্যান্য প্রান্তে তুমুল সাড়া ফেলে এবং ক্যাথলিক গির্জা ও পোপতন্ত্র-বিরোধী প্রোটেস্টান্ট মতাদর্শ অচিরেই রাজনৈতিক মতাদর্শে পরিণত হয়। হল্যান্ড, ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও স্ক্যান্ডিনেভিয়ায় এই মতাদর্শ জনপ্রিয়তা লাভ করে। জেনিভার ক্যালভিন (Calvin) এবং সুইটজারল্যান্ডে জুইংলী (Zwingli) এই মতাদর্শের পথিকৃৎ ছিলেন।

মার্টিন লুথার সর্বপ্রথম জার্মান ভাষায় বাইবেল রচনা করেন এবং গুটেনবার্গের ছাপাখানার দৌলতে তা সর্বসাধারণের কাছে পৌঁছে যায়। ইংল্যান্ডে টিন্ডেলের (Tyndale) তত্ত্বাবধানে এই ধর্মগ্রন্থটির ইংরেজি অনুবাদ হয়। লুথারের এই যুগান্তকারী উদ্যোগের ফলে গির্জা বাইবেল তর্জমার ক্ষেত্রে (Interpretation of the Bible) তার সর্বময় কর্তৃত্ব হারায় ও জার্মানি-সহ পশ্চিম ইউরোপের অন্যান্য প্রান্তে আঞ্চলিক ভাষা ও সাহিত্যের প্রাধান্য বৃদ্ধি পায়।

প্রোটেস্টান্ট রাষ্ট্রগুলি নতুন মতাদর্শের ভিত্তিতে নিজেদের অর্থনৈতিক উন্নতিসাধন করে। এই সমস্ত অঞ্চলে বাণিজ্য ও নগরায়ণ ত্বরান্বিত হওয়ার ফলে পুঁজিবাদের (Capitalism) বিকাশ ঘটে। জার্মান সমাজতাত্ত্বিক ম্যাক্স ওয়েবার (Max Weber) তাই তাঁর গ্রন্থ Protestant Ethic and the Rise of Capitalism-এ পুঁজিবাদের বিকাশ এবং প্রোটেস্টান্ট মতাদর্শের সংযোগের কথা উল্লেখ করেছেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top