ঐতিহাসিক হিসেবে আলবিরুনির অবদান পর্যালোচনা করো। আলবিরুনির অবদান।
- আলবিরুনি
ইসলামি পণ্ডিতগণের মধ্যে সর্বাধিক উল্লেখের দাবি রাখেন আবু রাইহান মোহম্মদ ইবন আহমেদ আলবিরুনি ( Abu Raihan Muhammad Ibn Ahmed Al-Biruni)। ইনি সংক্ষেপে আলবিরুনি (Al-Biruni) নামে খ্যাত। আলকিনি মধ্য এশিয়ার খোয়ারজিম (Khwarzim) রাজ্যের বাসিন্দা ছিলেন।
আলবিরুনি গজনির শাসক সুলতান মামুদের সামরিক অভিযানের সঙ্গে ভারতবর্ষে আসেন। মামুদের পৌত্তলিক সংহারকের (Iconoclastic) মনোভাব তিনি পোষণ করতেন না। আলবিরুনি অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে ভারতবর্ষের সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করেন।
আলবিরুনি একযোগে ঐতিহাসিক, জ্যোতির্বিদ, গাণিতিক, ভূগোলবিদ এবং জ্যোতিষশাস্ত্রে পারদর্শী ছিলেন। বহুমুখী প্রতিভাধর এই পণ্ডিত প্রয়াগরাজে (অধুনা এলাহাবাদ) বসবাস করে সংস্কৃত ভাষা রপ্ত করেন এবং তৎসহ বহু আরবি ও গ্রিক আকর গ্রন্থ উক্ত ভাষায় অনুবাদ করেন।
ভারতবর্ষে থাকাকালীন আলবিরুনি হিন্দু জনগণের সামাজিক আচার ও রীতিনীতি সূক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করেন এবং জাতি প্রথা সম্পর্কে বিস্ময় প্রকাশ করেন। এই দীর্ঘ অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে অবশেষে 1030 খ্রিস্টাব্দ নাগাদ তিনি তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ তহকিক-ই-হিন্দ (Tahaqiq-i-Hind) রচনা করেন, যার বাংলা অর্থ দাঁড়ায় ‘ভারত (হিন্দু) অনুসন্ধান (তহকিক) ।”
”তহকিক-ই-হিন্দ” কালক্রমে ‘কিতাব-উল-হিন্দ’ (Kitabul Hind) নামে জনপ্রিয়তা লাভ করে। এই আকর গ্রন্থটির রচনা ভারতের ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করে। ভারতবর্ষে ইসলামের প্রাধান্য স্থাপনের পর তুর্কি শাসকদের পৃষ্ঠপোষকতায় ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রটি আরও পরিস্ফুটিত হয়।