মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট আলোচনা কর। মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার পটভূমি আলোচনা কর।
ভূমিকা:
ভিনসেন্ট স্মিথের মতো ঐতিহাসিকরা ভারত ইতিহাসে বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য লক্ষ করেছেন। অপরদিকে শাসকগোষ্ঠী ক্রমাগত অনৈক্যের ওপর জোর দিয়ে গেছেন । ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের ইন্ডিয়ান বিলের ওপর বক্তৃতা দিতে উঠে স্যার চার্লস উড বলেছিলেন: “বিভিন্ন জাতির জন্য আমাদের আইন প্রণয়ন করতে হবে। এদের ভাষা, ধর্ম, রীতিনীতি, আচার-আচরণ সব আলাদা’। হান্টারের মতো সিভিলিয়ান এই অনৈক্যের ধারণার সম্প্রসারণ ঘটিয়েছিলেন। মুসলমানদের ন্যায্য দাবিগুলি মেনে নেবার জন্য তিনি ব্রিটিশ সরকারকে অনুরোধ করেছিলেন।
প্রেক্ষাপট বা পটভূমি :
স্যার সৈয়দ আহমদের অনুগামী আলিগড় সম্প্রদায় (মহসিন-উল-মুলক, আলতাফ হোসেন হালি, শিবলি নোমানি) হিন্দু ও মুসলমান সম্প্রদায়ের পার্থক্যের ওপর জোর দিয়ে মুসলমানদের স্বার্থরক্ষা ও সম্প্রসারণ ঘটানোর কথা ভেবেছিলেন। ভারতীয় ঐতিহাসিকরা মনে করেন যে সৈয়দ আহমদ কংগ্রেসের বিরোধিতা করে জাতীয় আন্দোলনে বিচ্ছিন্নতার বীজ বপন করে যান। মুশিরুল হাসান ও আয়েষা জালাল মনে করেন সাধারণ হিন্দু ও মুসলমানের মধ্যে দ্বন্দ্ব বা সংঘাত ছিল না। উচ্চবর্গের আশরাফ মুসলমান মধ্যবিত্ত হিন্দু আধিপত্যের ভয় পেয়েছিল, এক্ষেত্রেও সর্বত্র ও সর্বস্তরের মুসলমান ঐক্যবদ্ধ ছিল না। উচ্চবর্গের মুসলমান সমাজে আত্মপরিচয়ের অস্তিত্বের এক সংকট দেখা দেয়।
ভারতীয় ও ইসলামি সত্তার মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছিল। মুশিরুল হাসান ও জালাল উভয়ে জানিয়েছেন যে এই দ্বন্দ্ব ছিল শুধু ওপরতলায়, নীচতলায় এর প্রভাব পড়েনি। বেশিরভাগ মুসমলান এদেশকে তাদের মাতৃভূমি ধরে নিয়ে গর্ববোধ করত। বিশ্ব মুসলিম আন্দোলনও তাদের চিন্তাভাবনাকে তেমন প্রভাবিত করতে পারেনি। উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের তারা ভয় পেত। এরা দুজনেই উত্তরপ্রদেশের হিন্দি বনাম উর্দু বিতর্কের কথা উল্লেখ করেছেন। দেবনাগরি লিপি ও হিন্দিকে সরকারি কাজকর্মে ব্যবহারের দাবি উঠলে মুসলমানরা আতঙ্কিত বোধ করেছিল। উত্তর ভারতে গো-হত্যার বিরুদ্ধে আন্দোলন মুসলমানদের ভয় ও আশঙ্কার কারণ হয়।
লর্ড ডাফরিন প্রভিন্সিয়াল কাউন্সিলস সংক্রান্ত যে কমিটি গঠন করেন তা ভারতীয়দের মধ্যে বিভেদ ও অনৈক্য লক্ষ করে সরকারি মনোনয়ন ক্ষমতাকে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যেকার অসাম্য দূর করার কাজে ব্যবহার করতে বলেছিল। ডাফরিন কংগ্রেসের সর্বশ্রেণির ভারতীয়ের প্রতিনিধিত্ব করার দাবি নস্যাৎ করে দেন। ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দে ডাফরিন তাঁর মিনিটে লিখেছিলেন : ‘আংশিকভাবে বা অন্যভাবে ভারত সরকার এই ধরনের প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেবার অর্থ হল লক্ষ লক্ষ মানুষ, এক ডজন জাতি ও শত সহস্র স্বার্থ এক আণুবীক্ষণিক সংখ্যালঘুর হাতে সমর্পণ করা। এখনই মনে হচ্ছে মুসলমানরা কংগ্রেসের আধিপত্যের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করছে।
ডাফরিন বহুবার ভারতের বহু জাতির কথা উল্লেখ করেছেন, একটি শক্তিশালী সরকার শুধু এদের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে। ১৮৯২ খ্রিস্টাব্দের ইন্ডিয়ান কাউন্সিলস অ্যাক্টের ওপর বক্তৃতা দিতে গিয়ে কার্জন ভারতের বিভিন্ন জাতি ও ধর্মীয় গোষ্ঠীর জন্য ব্যাকুলতা প্রকাশ করেন। এই আইনে এইসব স্বার্থের প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল, লর্ড ক্রস খুব সুক্ষ্মভাবে সাম্প্রদায়িক প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা করেছিলেন। লর্ড ল্যান্সডাউন স্বীকার করেছিলেন এই আইন অনুসারে যেসব কাউন্সিলর নির্বাচিত হত তারা গোষ্ঠী ও শ্রেণিস্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন, অঞ্চল বা সংখ্যা নয়।
ভাইসরয় হয়ে ভারতে আসার পর কার্জন ঐ একই ধারায় চিন্তাভাবনা করতে থাকেন। ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বঙ্গ ব্যবচ্ছেদ পরিকল্পনায় শাসনতান্ত্রিক দক্ষতা ছিল মূল বিবেচ্য বিষয়, ১৯০০ খ্রিস্টাব্দের পর কার্জন এর সঙ্গে সাম্প্রদায়িকতাকে যুক্ত করেছিলেন। ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে পূর্ববঙ্গ সফরে গিয়ে তিনি তাঁর সাম্প্রদায়িক চিন্তাভাবনা প্রকাশ করেন। বঙ্গ ব্যবচ্ছেদ নামক দুদিকে ধারবিশিষ্ট অস্ত্রটিকে তিনি জাতীয় আন্দোলন ও বাঙালি হিন্দুদের ধ্বংস করার কাজে ব্যবহার করার পরিকল্পনা করেন। তিনি জাতীয়তাবাদকে শান্তিতে মরার ব্যবস্থা করে দেবেন ( assist to a peaceful demise)। পূর্ববঙ্গ ও আসাম নিয়ে যে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশ গঠিত হবে সেখানে বাঙালি হিন্দুরা হবে ধর্মীয় সংখ্যালঘু, অবশিষ্ট বাংলায় তারা হবে ভাষাগত সংখ্যালঘু। বঙ্গভঙ্গ ক্ষতের ওপর কার্জন সাম্প্রদায়িকতার লবণ ঘষবেন, জাতীয় আন্দোলনের পুরোধা বাঙালি তাতে ধ্বংস হয়ে যাবে। অপরদিকে মুসলমানরা ব্রিটিশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ হয়ে উঠবে। ঢাকায় এক জনসভায় কার্জন তাঁর উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেছিলেন, ঢাকার নবাব সলিমুল্লাহর সমর্থন আদায়ের জন্য তিনি তাকে অল্প সুদে এক লক্ষ পাউন্ড ঋণ দেন। কার্জন যেমন ভেবেছিলেন তেমনটি ঘটেছিল, বঙ্গ ব্যবচ্ছেদ দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে ঈর্ষা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করেছিল। মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে স্বাতন্ত্র্য ও বিচ্ছিন্নতাবাদ শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল, তাদের রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা উদ্দীপিত হয়।
বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন শুরু হলে অল্পকালের জন্য হিন্দু-মুসলমান বিভেদ চাপা ছিল। আবদুল রসুল, গজনভি ও দেদার বক্সের মতো মুসলিম নেতারা বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতা করলে ব্রিটিশ শাসকগোষ্ঠী চিন্তিত হয়ে পড়েছিল। লরেন্স, চিরল ও লো নতুন ভাইসরয় মিন্টোকে সাবধান করে দিয়ে বলেছিলেন যে তরুণ মুসলিমরা কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছে। মিন্টো কংগ্রেসের প্রতিষেধকের (counterpoise to congress aims) অনুসন্ধান শুরু করে দেন। কংগ্রেসের প্রতিষেধক হিসেবে মিন্টো তিনটি প্রকল্পের কথা ভেবেছিলেন—রাজাদের নিয়ে কাউন্সিল গঠন, ভাইসরয়ের কাউন্সিলে ভারতীয় সদস্য গ্রহণ এবং কেন্দ্র ও প্রাদেশিক আইনসভায় সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করা। মিন্টো তাঁর বক্তৃতায় সম্ভাব্য সংস্কারের স্পষ্ট ইঙ্গিত রেখেছিলেন। এই পটভূমিকায় আলিগড় কলেজের সেক্রেটারি মহসিন-উল-মুলক প্রিন্সিপাল আর্চবোল্ডকে ভাইসরয়ের সঙ্গে মুসলিম প্রতিনিধিদের সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে দিতে বলেন। ধুরন্ধর রাষ্ট্রনেতা মিন্টো এই প্রস্তাবের মধ্যে কংগ্রেসের প্রতিষেধক খুঁজে পেয়েছিলেন।
মহসিন-উল মুলক তাঁর চিঠিতে বলেছিলেন পুরানোপন্থী মুসলিম নেতারা তরুণ মুসলমানদের কংগ্রেস আন্দোলন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন। নির্বাচন হলে মুসলমানরা একটি আসনেও জয়ী হতে পারবে না, এজন্য এখনই কিছু করা দরকার। পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের নতুন গভর্নর হেয়ার মুসলমানদের প্রতি উদারতা দেখাতে বলেন। মুসলিম দরদি মূলারকে গভর্নরের পদ থেকে সরানো হলে মুসলমানরা ক্ষুণ্ণ হয়েছিল, তাদের কাছে এটি ছিল বাঙালি হিন্দুদের জয়। মুসলমানদের মধ্যে রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা ও সাম্প্রদায়িক চেতনা সৃষ্টি করেন কার্জন ও ফুলার। পূর্ব বাংলার অনুপস্থিত হিন্দু জমিদার ও মুসলমান কৃষকের মধ্যে অর্থনৈতিক সংঘাত দেখা দিয়েছিল। রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতাবাদকে পুষ্টি জুগিয়েছিল এই অর্থনৈতিক দ্বন্দ্ব।
এই সময় লর্ড মিন্টো লিখেছিলেন যে বঙ্গ ব্যবচ্ছেদ স্থানীয় স্বার্থ সৃষ্টি করেছে, কংগ্রেসের ইচ্ছানুযায়ী তা রদ করা হলে মুসলমানরা বিদ্রোহ করবে (a dangerous Muhammedan storm)। মিন্টো চরমপন্থীদের মোকাবিলার জন্য দুটি ব্যবস্থার কথা ভেবেছিলেন—সংস্কারের মাধ্যমে নরমপন্থীদের সমর্থন আদায় করা এবং মুসলমানদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা। ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দের ১ অক্টোবর সিমলাতে তিনি মুসলিম প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করেন। আলিগড়ের প্রিন্সিপাল আর্চবোল্ড ছিলেন এদের প্রধান পরামর্শদাতা। মুসলিম প্রতিনিধিদের প্রতিবেদনে নির্বাচনের বিরোধিতা, ধর্মের ভিত্তিতে মনোনয়ন এবং বিশেষ সুবিধা (weightage) আদায়ের দিকে জোর দেওয়া হয়।
মুসলিম প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন আগা খান। তিনি তাঁর প্রতিবেদনে বলেছিলেন যে মুসলমানরা হল একটি স্বতন্ত্র সম্প্রদায়, হিন্দু কংগ্রেস এদের স্বার্থরক্ষা করতে পারে না। আইনসভায় মুসলমানদের প্রতিনিধিত্ব তাদের সংখ্যানুপাত অনুযায়ী হতে পারে না। মুসলমানদের রাজনৈতিক ঐতিহ্য, গুরুত্ব ও সাম্রাজ্যের প্রতিরক্ষায় তাদের অবদানের কথা মনে রেখে সংখ্যানুপাতের চেয়ে বেশি হারে তাদের প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা করতে হবে। এই প্রতিনিধি দল মুসলমানদের জন্য পৃথক নির্বাচকমণ্ডলীর দাবি করেছিল। নির্বাচকমণ্ডলী গঠিত হবে জমিদার ও ধনী মধ্যবিত্তদের নিয়ে। পূর্ববাংলার গভর্নর হেয়ার সাহেব মুসলমানদের দাবি মেনে নেবার পরামর্শ দেন। দাবি না মানা হলে মুসলমানরা আন্দোলনের হুমকি দিয়েছিল, সাম্প্রদায়িক সংঘাতের কথাও উঠেছিল। হিন্দু জমিদারদের বয়কট করা হবে, জনসভা করে মুসলিম জনমত গড়ে তোলা হবে।
ভাইসরয় লর্ড মিন্টো মুসলমানদের দাবির প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন। তিনি মনে করেন পশ্চিমের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রাচ্যের পক্ষে অনুকূল হবে না। গণতান্ত্রিক নির্বাচন ব্যর্থ হবে, এজন্য ভারতের বিভিন্ন ধর্ম সম্প্রদায়ের স্বার্থরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। ঠিক এই সময়ে ভারতসচিব মর্লে সংস্কারের প্রস্তাব দেন, ভারতকে তিনি ডোমিনিয়ন স্ট্যাটাস দিতে চাননি, বঙ্গভঙ্গ রদ করার কথাও ভাবেননি। তিনি মুসলিম শক্তির কথা উপলব্ধি করেছিলেন, মুসলমানদের খুশি করার জন্য তিনি মুসলিম বন্ধু থিয়োডর মারিসনকে তাঁর কাউন্সিলের সদস্য করে নেন। মুসলমানদের স্বাতন্ত্র্যবাদী চিন্তাভাবনাকে তিনি এদেশে ও ইংল্যান্ডে চরমপন্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন। পূর্ববঙ্গে স্বদেশি আন্দোলন নিয়ে হিন্দু ও মুসলমানের মধ্যে দাঙ্গা বেঁধেছিল। মিন্টো খুশি হয়ে লিখলেন : ‘পরিস্থিতি বাঁচানোর জন্য তারা অনেকখানি করেছে (They have really done much to save the position) ।
শুধু আন্দোলন করে মুসলমানরা তাদের অনুকূল পরিস্থিতি নষ্ট করে ফেলেনি। মুসলমান স্বার্থরক্ষার জন্য তারা একটি রাজনৈতিক দল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দের ৩০ ডিসেম্বর ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের মুসলমান প্রতিনিধিরা ঢাকাতে মিলিত হয়ে মুসলিম লিগ গঠন করেছিল। জন্মলগ্নে লিগ তার তিনটি উদ্দেশ্যের কথা ঘোষণা করেছিল।
মুসলিম লীগের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য :
প্রথম উদ্দেশ্য হল ব্রিটিশ সরকারের প্রতি মুসলমানদের আনুগত্য বৃদ্ধি করা। লিগ মনে করেছিল ব্রিটিশরাজই মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারে।
দ্বিতীয় উদ্দেশ্য ছিল মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষা করা এবং এর সম্প্রসারণ ঘটানো। ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করে মুসলমানদের জন্য সুযোগ-সুবিধা আদায় করা যেতে পারে। লিগের ঘোষিত।
তৃতীয় লক্ষ্য ছিল অন্য সম্প্রদায়ের প্রতি মুসলমানদের বিদ্বেষ যাতে তৈরি না হয় সেদিকে লক্ষ রাখা। লিগ ঘোষণা করেছিল। যে বঙ্গ ব্যবচ্ছেদের ফলে মুসলমান সমাজ লাভবান হয়েছে। লিগ স্বদেশি আন্দোলনের বিরোধিতা করেছিল। স্বদেশি আন্দোলনকে অবরুদ্ধ করে রেখে ধ্বংস করার যে পরিকল্পনা মিন্টো নিয়েছিলেন তা সফল হয়। মুসলিম স্বাতন্ত্র্যবাদ প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পরিগ্রহ করেছিল।