StudyMamu

Site is under construction some pages not work properly. Please bear with us.

১৭৯৩ সালের সনদ আইনের তাৎপর্য লেখ

 

১৭৯৩ সালের সনদ আইনের তাৎপর্য লেখ । ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দের চার্টার আইনে তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর।

বিশ বছর অন্তর কোম্পানির চার্টার নবীকরণের ব্যবস্থা হয়েছিল। চার্টার নবীকরণের সময় কোম্পানির গত বিশ বছরের কাজকর্মের হিসেব-নিকেশ করা হত। ইউরোপে দুটি ঘটনা ঘটেছিল—একটি হল ইংল্যান্ডে শিল্পবিপ্লব। শিল্পবিপ্লবের ফলে ভোগ্য পণ্যের উৎপাদন বেড়েছিল, বণিক ও পুঁজিপতিরা ভারতে বাণিজ্যের অধিকার দাবি করেছিল। কোম্পানির একচেটিয়া বাণিজ্যের অধিকার আক্রান্ত হয়েছিল। দ্বিতীয় ঘটনাটি হল ফ্রান্সে বিপ্লব শুরু হয়েছিল, ইংল্যান্ড বিপ্লব বিরোধী জোট গঠনে আগ্রহ দেখিয়েছিল। ইংল্যান্ডের পার্লামেন্ট এসময় ভারতের বাণিজ্য ও সাম্রাজ্য নিয়ে খুব উৎসাহী ছিল না।

১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দের চার্টার আইনে কোম্পানিকে ভারতে আরও বিশ বছর শাসন পরিচালনার অধিকার দান করা হয়। কোম্পানি নিজের বাণিজ্যিক অধিকার বজায় রেখেছিল। তবে শর্তাধীনে বেসরকারি বণিকদের ভারতে বাণিজ্যের অধিকার দেওয়া হয়। বোর্ড অব কন্ট্রোলের গঠনে কিছু পরিবর্তন ঘটানো হয়। দুজন সেক্রেটারি, চ্যান্সেলর অব এক্সচেকার ও তিনজন সদস্য নিয়ে বোর্ড গঠনের ব্যবস্থা হয়েছিল। সরকারি চিঠিতে যে ব্যক্তির নাম প্রথম থাকবে তিনি বোর্ডের প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ করবেন। বোর্ডের সদস্যরা বেতন পাবেন, ভারতের কোষাগার থেকে এদের বেতনদানের ব্যবস্থা হয়।

এই আইন অনুযায়ী ভবিষ্যতে গভর্নর-জেনারেল কাউন্সিলের মতামত উপেক্ষা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। গভর্নর-জেনারেল বোম্বে ও মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির ওপর নিয়ন্ত্রণমূলক অধিকার লাভ করেন। কোনো কারণে গভর্নর-জেনারেল রাজধানীতে অনুপস্থিত থাকলে কাউন্সিলের একজন সদস্য ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ করবেন।

গভর্নর-জেনারেল মাদ্রাজ ও বোম্বে প্রেসিডেন্সি পরিদর্শনে গেলে তিনি সেখানকার কাউন্সিলের সভায় সভাপতিত্ব করবেন। প্রধান সেনাপতি গভর্নর জেনারেলের কাউন্সিলের সদস্য হবেন না, তবে ডিরেক্টর সভা এধরনের নির্দেশ পাঠালে তিনি সদস্য হিসেবে কাজ করতে পারবেন। এদেশের আইন সংহিতা ও সরকারি আচরণবিধি প্রণয়নের পরামর্শ দেওয়া হয়। সব আইন দেশীয় ভাষায় প্রকাশ করার কথা বলা হয়েছিল যাতে জনগণ তাদের অধিকারসমূহের কথা জানতে পারে।

১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দের চার্টার আইন প্রথম এদেশে নাগরিক আইনের সূচনা করেছিল (civil law) এই আইন সকলের জন্য সমান (The Act thus introduced in India the concept of a civil law, enacted by a secular human agency and applied universally)। উইলিয়াম উইলবারফোর্স এই আইনে আরও দুটি শর্ত যোগ করার প্রস্তাব দেন। তাঁর প্রস্তাবে বলা হয়েছিল যে, কোম্পানির ভারত শাসনের লক্ষ্য হল শাসিত জনগণের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক উন্নতি ঘটানো। এজন্য ভারতে মিশনারি ও শিক্ষক পাঠানোর তিনি প্রস্তাব দেন। শেষপর্যন্ত এই দুই প্রস্তাব এই চার্টার আইনে স্থান পায়নি, ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে চার্টার আইনে এগুলি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

Share

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *