StudyMamu

Site is under construction some pages not work properly. Please bear with us.

জাপানি সংবিধানের বৈশিষ্ট্য অথবা, মেইজি সংবিধানের বৈশিষ্ট্য

 

১৮৮৯ সালের জাপানি সংবিধানের বৈশিষ্ট্য গুলি পর্যালোচনা কর। ১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দে জাপানি সংবিধানের প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো।

অথবা,

মেইজি(মেজী)সংবিধানের বৈশিষ্ট্য 

১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দের মেজী সংবিধানে পাশ্চাত্য রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানসমূহের সঙ্গে প্রাচ্য সংস্কৃতির সুখ সমন্বয় পরিলক্ষিত হয়। সাতটি অধ্যায় ও ৭৬টি অনুচ্ছেদে বিভক্ত এই সংবিধানে সম্রাটের ক্ষমতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার আদর্শ এবং সামন্ততান্ত্রিক আদর্শের সহাবস্থান লক্ষ্য করা যায়। সম্রাটকে সব ক্ষমতার (প্রশাসনিক, আইন ও বিচার) আধার ও কৃপা বিতরণের অধিকারী করার মধ্যে সম্রাটের ক্ষমতার পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং তার হয়ে প্রকৃত ক্ষমতা মন্ত্রী বা অন্যদের ভোগের ব্যবস্থার মধ্যে সামন্ততান্ত্রিক প্রবণতা লক্ষণীয়।

মেজী সংবিধানের পাঁচটি দিক হল—সম্রাট, ডায়েট, ক্যাবনিট, মৌলিক অধিকার এবং এর অতি সাংবিধানিক (Extra Constitutional) চরিত্র। সম্রাটের ক্ষমতা ও মর্যাদা ছাড়াও একগুচ্ছ গণতান্ত্রিক অধিকারকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় যেমন বাক্ স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, প্রকাশনা, গণসভা ও সমাবেশ, বাসস্থানের স্বাধীনতা, সম্পত্তির অধিকার ইত্যাদি। সংবিধানের প্রথম অধ্যায়ের প্রথম অনুচ্ছেদেই সম্রাটের সাংবিধানিক পদমর্যাদা ও প্রশাসনিক ক্ষমতা বর্ণিত হয়েছে। সংবিধানের জাতীয় রাষ্ট্রনীতি (National Polity) সংক্রান্ত প্রথম অনুচ্ছেদে বা কোকুতাই এ বলা হয়েছে যে জাপানে সম্রাটের বংশই শাশ্বত রাজত্বের ও শাসনের অধিকারী। (Shall be reigned over and governed by a line of Emperors unbroken for ages eternal.)। জাপানী সম্রাটকে তাই বলা হয়েছে “sacred and inviolable” অর্থাৎ সম্রাট হলেন পবিত্র এবং তিনি অলঙ্ঘনীয়।

তত্ত্বগতভাবে জাপানী সম্রাট-ই হলেন রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদমর্যাদার ও ক্ষমতার অধিকারী। তত্ত্বগতভাবে সম্রাট সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী হলেও বাস্তবে প্রশাসনিক ক্ষমতা ভোগ করেন মন্ত্রীবর্গ। সম্রাট দেশের সকল সামরিক ও অসামরিক কর্মচারীদের নিয়োগ ও পদচ্যুত করার অধিকারী হন। তত্ত্বগতভাবে সম্রাট সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর প্রধান অধ্যক্ষ। তিনি যুদ্ধ ঘোষণা, শান্তি স্থাপন ও সন্ধি স্বাক্ষরের অধিকারী। আইন প্রণয়নের ক্ষমতা ডায়েট বা আইনসভার থাকলেও সম্রাটের অনুমতি ছাড়া কোন বিল আইনে রূপান্তরিত হত না। বিল অনুমোদন করা বা না করা সম্রাটের ইচ্ছাধীন ছিল।

ডায়েটের অধিবেশন বন্ধ থাকাকালীন অবস্থায় অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবার উপক্রম হলে সম্রাট অর্ডিন্যান্স বা জরুরী আইন জারী করতে পারতেন। সম্রাট অর্ডিন্যান্স জারী করার অধিকারী হলেও ডায়েটের পরবর্তী অধিবেশনে তা পেশ করতে হত এবং ডায়েট সম্মতি না দিলে তা অবৈধ বলে গণ্য হত। এছাড়া সম্রাটের ডায়েটের অধিবেশন আহ্বানের ও স্থগিত করার এবং এর নিম্নকক্ষ ভেঙে দেবার অধিকার থাকে। কিন্তু বাস্তবে ডায়েটে আনা বিল মন্ত্রীসভার দ্বারা অনুমোদিত হলে সম্রাট তা অনুমোদন করতই।

সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে সম্রাট শুধু প্রস্তাব দিতে পারতেন, সংবিধান সংশোধনের পূর্ণ অধিকার তাঁর ছিল না। সম্রাটের দেওয়া সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব গ্রহণ বা বর্জনের অধিকার ডায়েটের হাতে ছিল।

তত্ত্বগতভাবে বিচারব্যবস্থার শীর্ষে ছিলেন সম্রাট এবং তিনিই ধর্ম প্রবর্তক। কিন্তু কার্যত তিনি সরাসরি বিচার কার্য পরিচালনা করতেন না। বিচার কার্য পরিচালনার দায়িত্ব অর্পিত ছিল আদালত ও বিচারকদের সংবিধান অনুযায়ী সম্রাটের বিশেষ কোন অর্থনৈতিক ক্ষমতা ছিল না। 

আয়-ব্যয় নির্ধারণের ক্ষমতা, কর ব্যবস্থার পরিবর্তন কিংবা নতুন কর ধার্য করার ক্ষমতা তাঁকে দেওয়া হয়নি। কর নির্ধারণের ক্ষেত্রে আইন বিভাগের সিদ্ধান্তই ছিল চূড়ান্ত। এছাড়া রাষ্ট্রের আয় বায় নির্ধারিত হত বাজেটের মাধ্যমে যা ডায়েটের দ্বারা অনুমোদিত হত।

মেজী সংবিধানের ১৮ থেকে ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদে জনগণের অধিকার ও কর্তব্য সম্পর্কে বলা হয়েছে। সরকারকে আইনানুগ কর প্রদান করা জনগণের একটি প্রধান কর্তব্য ছিল। আর অধিকারগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

(১) সামরিক, অসামরিক যে-কোন পদে যোগ্যতার ভিত্তিতে আইনানুগভাবে নিয়োগ করা হবে।

(২) বে-আইনীভাবে কাউকে গ্রেপ্তার, আটক ও শাস্তি দেওয়া যাবে না।

(৩) আইনী অনুমোদন ব্যতিত কোন নাগরিকের সম্মতি ছাড়া তাঁর গৃহে প্রবেশ বা খানাতল্লাস করা যাবে না।

(৪) আইনানুমোদিত বিষয় ছাড়া কোন ব্যাপারে জাপানীদের চিঠিপত্রাদির গোপনীয়তা ভঙ্গ করা যাবে না।

(৫) জাপানীদের সম্পত্তির অধিকার স্বীকৃত হয়।

(৬) জাপানীদের ধর্মীয় স্বাধীনতা স্বীকৃত হলেও তা এমনভাবে সীমায়িত করা হয় যাতে দেশের শান্তি ও শৃঙ্খলা বিঘ্নিত না হয় (Not prejudicial to peace and order), কিংবা সর্ব-সাধারণের কর্তব্য পালনে অন্তরায় সৃষ্টি না করে।

(৭) আইনসম্মতভাবে জাপানী জনগণের বাক্ স্বাধীনতা, গ্রন্থ প্রকাশনের স্বাধীনতা এবং জনসভা আহ্বানের স্বাধীনতা স্বীকৃত হয়।

জনগণের অধিকার বিষয়ক উপরোক্ত শর্তাদি সংবিধানে উল্লেখ থাকলেও তা সংবিধান ভিত্তিক ছিল না। সংবিধিবদ্ধ এই অধিকারগুলি মেজী সরকার যে-কোন অজুহাতে নাকচ করতে পারতেন। সংবিধানের এই অগণতান্ত্রিক প্রব তা চীন-জাপান যুদ্ধে (১৮৯৪-৯৫) এবং রুশ-জাপান যুদ্ধে প্রতিফলিত হয়েছিল। সম্রাট এই সময় আইন জারি করে সাময়িকভাবে জনগণের অধিকার খর্ব করেন। এছাড়া জাপানে হেবিয়াস কর্পাস (Habeas Corpus) বা বন্দীকে সশরীরে আদালতে উপস্থিত করে তাকে বন্দী করার কারণ দর্শানোর প্রথা তখনো জাপানে প্রচলিত না হওয়ায় জনগণের রাজনৈতিক অধিকার খর্ব হয়েছিল। বামপন্থী আন্দোলন ও সাম্যবাদী আন্দোলন দমনের সময়েও মেজী সরকার জনগণের স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকারকে খর্ব করতে পিছুপা হয়নি। 

জাপানি সংবিধানের  অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল প্রিভি কাউন্সিল । মেজ়ী সংবিধানের এক অন্যতম স্তম্ভ প্রিভি কাউন্সিল সংবিধান তৈরির আগেই ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দে গঠিত হয়েছিল। বস্তুত জাপানী রাষ্ট্র পরিচালনার প্রকৃত কর্তৃত্ব এই কাউন্সিলের উপর ন্যস্ত ছিল। প্রিভি কাউন্সিল সম্রাট কর্তৃক নিযুক্ত এক স্বতন্ত্র সংস্থা যার মূল উদ্দেশ্য হল সরকার পরিচালনায় সম্রাটকে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শদান। দেশের বিশিষ্ট রাষ্ট্রনীতিবিদদের নিয়ে এটি গঠিত হয়েছিল। ক্যাবিনিট মন্ত্রীরা পদাধিকার বলে এর সদস্য ছিলেন।

মেজী সংবিধান অনুযায়ী একটি দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইন সভা বা ডায়েট (Diet) গঠিত হয়েছিল এবং ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে এর প্রথম অধিবেশন আহ্বান করা হয়। মেজী সংবিধানের ৩৩ থেকে ৫৪ নং অনুচ্ছেদে এই ডায়েট বা গিকাই-এর বর্ণনা রয়েছে। দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা বা ডায়েটের উচ্চকক্ষের নাম হল হাউস অফ পিয়ার্স (House of Peers), যার সদস্যসংখ্যা ছিল ৩৬৮ জন। নিম্নকক্ষকে বলা হত হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভ্স (House of Representatives)। যার সদস্য সংখ্যা ছিল ৩৭৯ জন। উচ্চকক্ষের সদস্যরা ছিলেন। মনোনীত সদস্য।

রাজপরিবারভুক্ত যুবরাজ বা প্রিন্স এবং মারকুইস শ্রেণীভুক্ত অভিজাত  কাউন্ট, ভাইকাউন্ট এবং ব্যারন সম্প্রদায়ভুক্ত এবং নিম্ন মর্যাদার নির্বাচিত সদস্যরা এর সভ্য ছিলেন। এছাড়া পণ্ডিত শ্রেণী, সর্বোচ্চ করদাতাগণ এবং ইম্পরিয়াল অ্যাকাডেমির সভ্যশ্রেণী এবং সম্রাট কর্তৃক মনোনীত ব্যক্তিগণও উচ্চকক্ষের সদস্য ছিলেন। স্পষ্টতই উচ্চকক্ষ একটি রক্ষণশীল সংস্থা ছিল যার মূল লক্ষ্য ছিল নিম্নকক্ষের অতি উদারনৈতিক প্রবণতাকে বাধা দিয়ে ভারসাম্য বজায় রাখা। অন্যভাবে বলা যায়, উচ্চকক্ষের লক্ষ্য ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠের স্বৈরতন্ত্রকে (Despotism of the majority) নিয়ন্ত্রণ করা।

নিম্নকক্ষ বা হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিসের সদস্যগণ সম্পত্তির ভিত্তিতে ভোটাধিকার পাওয়া ভোটারদের দ্বারা নির্বাচিত হতেন চার বছরের জন্য। বছরে একবার তিন মাসের জন্য ডায়েটের অধিবেশন বসত। জাপানের আইনসভার উচ্চকক্ষ হাউস অফ পিয়ার্স ভারতীয় রাজ্যসভার তুলনায় অনেক বেশি ক্ষমতা ভোগ করত। তাছাড়া ডায়েটের নিম্নকক্ষ পুরো গণতান্ত্রিক ছিল না, কেননা সম্পত্তির মানদণ্ডেই ভোটাধিকার অর্জিত হত, তা সর্বজনীন ছিল না। প্রাপ্তবয়স্ক জাপানী পুরুষদের মধ্যে যারা বছরে ১৫ ইয়েন (Yen) করপ্রদান করতেন তাঁরাই শুধু ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারতেন। ১৮৯০ সালে এরকম জাপানী নাগরিকের সংখ্যা ছিল মাত্র ৪ লক্ষ ৫০ হাজার যা জাপানী জনসংখ্যার মাত্র ১ শতাংশের কিছু বেশি ছিল।

জাপানী ডায়েটে গণতান্ত্রিক প্রবণতা যতই সীমিত থাক না কেন, আইন প্রণয়নের চূড়ান্ত ক্ষমতা এখানেই নিহিত ছিল। আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে সম্রাটের অনুমোদন প্রয়োজন ছিল ঠিকই, কিন্তু সম্রাট আইন অনুমোদন না করার অধিকারী হলেও তা করতেন না। তাছাড়া রাষ্ট্রের বাৎসরিক আয়-ব্যয়ের হিসেব বা বাজেটের অনুমোদন ডায়েটকেই করতে হত। ডায়েটের অধিবেশন স্থগিত করা ও নিম্নকক্ষ বাতিল করার অধিকার সম্রাটের ছিল। ডায়েটের অধিবেশন না চলাকালীন সময়ে সম্রাট অর্ডিন্যান্স জারি করতে পারতেন। যদিও তা পরবর্তী অধিবেশনে ডায়েট কর্তৃক অনুমোদিত হতে হত। ডায়েটের সম্মতি ছাড়া নতুন কোন কর আরোপ করা যেত না। ডায়েট নতুন বাজেট অনুমোদন না করলে আগের বছরের বাজেট অনুযায়ী প্রশাসনিক কাজ পরিচালিত হত।

মেজী সংবিধানের আরেক বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল আইনসভার তুলনায় ক্যাবিনেট মন্ত্রীদের বেশি ক্ষমতা প্রয়োগ। সংবিধানের ৫৫ নম্বর অনুচ্ছেদে “কাউন্সিল অফ মিনিস্টারস” সম্বন্ধে বলা হয়েছে, ‘কেবিনিট’ কথাটির উল্লেখ নেই। ক্যাবিনেট মন্ত্রীরা আইনসভার সদস্য ছিলেন না এমনকি তাঁরা যৌথভাবে ডায়েটের কাছে দায়িত্বশীলও ছিলেন না।

ক্যাবিনেট কার্যনির্বাহী বিভাগের দায়িত্বে নিযুক্ত ছিল এবং তার দায়বদ্ধতা ছিল সম্রাটের কাছে, ডায়েটের কাছে। নয়। সরকার সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য মন্ত্রীরা সম্রাটকে পরামর্শ দিতেন। মন্ত্রীসভার একজন প্রধান মন্ত্রী ছিলেন, যিনি বিভিন্ন দপ্তরের কার্যকলাপ তদারকি করতেন, কোনো বিশেষ বিভাগের দায়িত্ব তাঁর উপর অর্পিত হত না। মন্ত্রীদের উল্লেখযোগ্য দপ্তরগুলির মধ্যে। অন্যতম হল স্বরাষ্ট্র, বিদেশ, অর্থ, শিল্প ও বাণিজ্য, শিক্ষা, প্রতিরক্ষা, কৃষি ও বনসম্পদ, রেল ও যোগযোগ দপ্তর।

মেজী সংবিধান অনুযায়ী জাপানের সুপ্রিম কম্যান্ড গঠিত হয়েছিল ফিল্ডমার্শাল, ফ্লীট অ্যাডমিরাল, স্থলবাহিনীর প্রধান, নৌবাহিনীর প্রধান এবং স্থলবাহিনী ও নৌবাহিনী কর্তৃক মনোনীত মন্ত্রীদের নিয়ে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী তাঁর ইনার কাউন্সিলের অনুমোদন নিয়ে স্থলবাহিনী ও নৌবাহিনীর কর্মরত অফিসারদের মধ্য থেকে এই দুই বিভাগের মন্ত্রীকে নিয়োগ করতেন। মেজী সংবিধান তৈরির কিছুদিন পরে ইম্পিরিয়াল অর্ডিন্যান্সের বলে কর্মরত জেনারেল ও অ্যাডমিরালদের মধ্য থেকে মন্ত্রী নিয়োগের নিয়ম চালু হয়। প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি ছাড়া যেখানে অন্যান্য মন্ত্রীরা সম্রাটের সাক্ষাৎ পেতেন না, স্থলবাহিনী ও নৌবাহিনীর মন্ত্রীদ্বয়ের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য ছিল না। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি ছাড়াই তাঁরা সম্রাটের কাছে যেতে পারতেন।

মেজী সংবিধানের এক অসাংবিধানিক বৈশিষ্ট্য হল প্রবীণ রাজনীতিবিদদের নিয়ে গড়া সংস্থা জেনরো (Genre)। এই প্রবীণ রাষ্ট্রনীতিবিদদের মধ্যে ইটো, ইনোয়ু ও মাৎসুকাতার নাম উল্লেখযোগ্য। এই প্রবীণ রাজনীতিবিদ্রা সম্রাট পুনঃপ্রতিষ্ঠার উত্তরণের যুগে প্রভুত ক্ষমতার অধিকারী হয়েছিলেন এবং প্রশাসনিক কাজে সাহায্য করতেন। তাঁদেরকে ‘সম্রাটের কান’ আখ্যা দেওয়া হয়। তাঁরা যুদ্ধ ও শান্তির প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করতেন এবং দেশের গুরুত্বপূর্ণ নীতি নির্ধারণে সম্রাটকে পরামর্শ দিতেন। ক্যাবিনেট পদমর্যাদার মন্ত্রীদের নিয়োগের ক্ষেত্রেও তাঁরা সম্রাটকে পরামর্শ দিতেন।

জাপানের বিচারব্যবস্থা এবং এর কার্যধারা সম্পর্কে মেজী সংবিধানের ৫৭ থেকে ৬১ নম্বর অনুচ্ছেদে বর্ণনা রয়েছে। সংবিধানে দুই ধরনের বিচারালয়ের কথা বলা হয়েছে সাধারণ বিচারালয় এবং প্রশাসনিক বিচারালয়। সাধারণ বিচারালয়ের মধ্যে পড়ত স্থানীয় বিচারালয়, জেলা বিচারালয়, আপিল বিচারালয় এবং সুপ্রিম কোর্ট। সাধারণ বিচারালয়ে অসামরিক ও সাধারণ অপরাধের বিচার হত। জেলা বিচারালয়ে জেলাস্তরের অসামরিক অপরাধের এবং সাধারণ বিচারালয়ের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল সংক্রান্ত বিষয়েরও বিচার হত। একইভাবে জেলা বিচারালয় থেকে পাঠানো আপিল সংক্রান্ত বিষয় আপিল বিচারালয়ে বিচার হত। এছাড়া রাজদ্রোহিতার মত গুরুতর অপরাধের বিচার হত সুপ্রিম্ কোর্টে।

Share

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *