সাঁওতাল পরিবার ভাস্কর্য সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ভাস্কর রামকিংকর বেইজের অতি বিখ্যাত শিল্পকর্ম ‘সাঁওতাল পরিবার’ ভাস্কর্যটি তৈরি হয়েছিল ১৯৪০ সালে।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিদ্যাশ্রম শান্তিনিকেতন উন্মুক্ত জমিতে গাছের ছায়ায় ভাস্কর্যটি আজও মহাগৌরবের সাথে দণ্ডায়মান। সাড়ে দশ ফুট উঁচু এই ভাস্কর্যটি সিমেন্ট, খোয়াই নদীর মোটা বালি ও কাঁকড়, কিছু পাথরকুচি ও লোহার রড দিয়ে তৈরি।
গ্রীষ্মের মধ্যাহ্নের দাবদাহে যখন পৃথিবী নিজেকে লুকাতে ব্যস্ত তখন গলদ ঘর্ম শরীর দিনের পর দিন ক্লান্তিহীনভাবে, প্রবল উৎসাহে রামকিংকর এই বিশালাকার ভাস্কর্যটি নির্মাণ করেন। ভাস্কর্যের মূল বিষয় সাঁওতাল দম্পতি কাঁধে ঝুড়িযুক্ত বাঁক নিয়ে হাত ধরাধরি করে চলেছে কাজের তাগিদে। বাঁকের ঝুলন্ত ঝুড়িতে ছোট্ট শিশু বিস্ময়ে মাথা উঁচু করে দেখে পৃথিবীর অন্তহীন রূপ।
ভাস্কর্যের দৈহিক গড়ন ও সজ্জাবিন্যাস বাস্তবতার বর্ণনায় সার্থক। শিল্পী আদিবাসী অধ্যুষিত লালমাটি এলাকার মানুষ। তাই চোখে দেখা মানুষের অভিব্যক্তি তাঁকে নতুন করে জানতে হয়নি। ‘সাঁওতাল পরিবার’ ভাস্কর্যে শ্রমজীবী মানুষের অভিব্যক্তিকে এক অদ্ভূত কাব্যিক ছন্দবদ্ধতায় আবদ্ধ করে। তাই সাবলীল ভাস্কর্যটি শিল্পরসিকদের কাছে এক কাঙ্খিত দ্রষ্টব্য।